তিন বছরের মধ্যে প্রথম চাল ক্রয়ের চুক্তি করছে বাংলাদেশ-ভারত
ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা- নয়াদিল্লি ভিত্তিক নাফেদ (NAFED) এর কাছ থেকে দেড় লাখ টন চাল ক্রয়ের চুক্তি করছে বাংলাদেশ। চুক্তির প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলেই সংস্থাটি রয়টার্সকে জানিয়েছে। বাংলাদেশে ব্যাপক বন্যায় স্থানীয় বাজারে খাদ্যপণ্যের দর বাড়ার প্রেক্ষিতে তিন বছর পর এই প্রথম এতো বড় অংকের চাল ক্রয়ের চুক্তি হচ্ছে দুই দেশের মধ্যে।
ভারত বিশ্বের বৃহত্তম চাল উৎপাদক। কিন্তু, বর্তমানে থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের উন্নত মানের চাল আন্তর্জাতিক বাজারে দেশটির রপ্তানিকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। এছাড়া, গত মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলে দেশটির চাল মজুদও বেড়েছে। উদ্বৃত্ত এই মজুদ কমাতেই বাংলাদেশে চাল বিক্রিতে আগ্রহ দেখায় দেশটি।
(ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল কো-অপারেটিভ মার্কেটিং ফাউন্ডেশন অব ইন্ডিয়া লি.) সংক্ষেপে নাফেদ বলা হয়। এর একজন মুখপাত্র রয়টার্সকে বলেন, "বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলমান। বর্তমানে আমরা দেশটির কাছে সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টন চাল বিক্রির অবস্থায় আছি।"
এই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, দুই দেশের সরকারের মধ্যে চুক্তির আওতায় আমরা এক লাখ টন সিদ্ধ চাল এবং ৫০ হাজার টন আতপ চাল কিনতে পারি।
সিদ্ধ চাল ভারত টনপ্রতি ৪০৭ মার্কিন ডলারে বিক্রি করতে পারে, অন্যদিকে আতপ চালের মূল্য ধরতে পারে টনপ্রতি ৪১৭ ডলার। এরসঙ্গে, চালানের বীমা, ফ্রেইট লাইনারে পরিবহনের খরচও যুক্ত থাকবে, বলে জানিয়েছে ভারত সরকারের একটি সূত্র। এই দর থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম থেকে কেনার চাইতে এক-তৃতীয়াংশ কম, বলেই সূত্রটি দাবি করে।
তবে চুক্তির নানাদিক নিয়ে আলোচনা চলমান থাকায়, বাংলাদেশ এবং ভারত উভয় দেশের সরকারি কর্মকর্তারাই নাম না প্রকাশের শর্তে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
মন্তব্যের জন্য রয়টার্স বাংলাদেশ এবং ভারতের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তাতে সাড়া দিয়ে তাৎক্ষনিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
বাংলাদেশ বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ চাল উৎপাদক। বাৎসরিক উৎপাদন হয় সাড়ে ৩ কোটি টন। তবে বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে স্থানীয় উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় এখনও দেশে আমদানি করা চালের উপর নির্ভরতা রয়েছে। এছাড়া, স্থানীয় বাজারে ভোক্তাপর্যায়ে দর স্থির রাখার লক্ষ্যেও সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে বিপুল পরিমাণ আমদানি হয়।
- সূত্র: বিজনেস রেকর্ডার