অতি-হিমশীতল তাপমাত্রা ছাড়াই সংরক্ষণ করা যাবে ফাইজারের টিকা
শেষ ট্রায়ালে উচ্চ সফলতা নিয়ে উত্তীর্ণ হয় যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজার ইঙ্ক ও জার্মান সংস্থা বায়োএনটেকের যৌথ উদ্যোগে আবিষ্কৃত কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন। কিন্তু, এটি অতি- হিমশীতল তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হতো, সেই সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে, বলে গত শুক্রবার জানিয়েছে ফাইজার ইঙ্ক।
টিকাটি এখন সাধারণ ফ্রিজারের তাপমাত্রাতেই সংরক্ষণ করা যাবে বলে জানায় কোম্পানিটি। ফলে টিকাটি পরিবহন ও বিতরণের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ দূর হলো। এতে করে অনুন্নত অবকাঠামোর স্বল্প আয়ের দেশেও টিকাটির চালান সফলভাবে পৌঁছে দেওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিল।
ফাইজার এবং তাদের জার্মান জৈব-প্রযুক্তি বিষয়ক সহযোগী সংস্থা বায়োএনটেক আবিষ্কার করেছে যে, টিকাটি ৫ থেকে মাইনাস ১৩ ডিগ্রী ফারেনহাইট তাপমাত্রায় কার্যকর থাকতে পারে। ভ্যাকসিনটি সক্রিয় থাকার জন্যে ন্যূনতম মাইনাস ১১২ ডিগ্রি থেকে সর্বোচ্চ মাইনাস ৭৬০ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপাঙ্ক দরকার বলে ইতোপূর্বে ধারণা করা হয়েছিল। উভয় কোম্পানির গবেষকদের সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে প্রভাবশালী ব্রিটিশ গণমাধ্যম ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস।
বায়োএনটেকের মুখ্য নির্বাহী উগুর সাহিন গণমাধ্যমটিকে বলেন, "আমাদের আবিষ্কৃত প্রতিষেধকটি পূর্ব ধারণার চাইতে বেশি তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা যাবে, ফলে এটি প্রত্যন্ত ও গ্রামীণ অঞ্চলের টিকাকেন্দ্রে সহজে পরিবহন ও বিতরণ করা যাবে। তাই টিকাদানের বৈশ্বিক উদ্যোগ নতুন গতি পাবে।"
অধিক তাপমাত্রায় টিকাটির স্থিতিশীলতার নতুন তথ্যাবলী ইতোমধ্যেই মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের কাছে জমা দিয়েছে কোম্পানি দুটি। এরপরেই সে সম্পর্কে ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে জানানো হয়।
কোভিড-১৯ প্রতিরোধে ৯৫ শতাংশ সফলতা পায় ফাইজারের টিকা। এরপর যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপে প্রথম অনুমোদিত টিকার স্বীকৃতি লাভ করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকেও প্রথম স্বীকৃতি লাভ করে এটি। তবে এর ডোজগুলো হিমাঙ্কের অনেক নিচে সংরক্ষণ করার প্রয়োজন থাকায়, এর বিতরণ এক বিশাল চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে বলে গেল নভেম্বরের দিকে আশঙ্কা প্রকাশ করেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
তখন তাপমাত্রা সহনশীল করে টিকাটি তৈরির গবেষণা শুরুর কথা জানিয়েছিল ফাইজার ও বায়োএনটেক।
উন্নত দেশে অনুমোদন মেলার পর, সরবরাহের দায়িত্বে নিয়োজিত পরিবহন কোম্পানিগুলো বিভিন্ন দূরতম কেন্দ্রে চালান পৌঁছানোর ক্ষেত্রে সরকারের পূর্ব-বিবেচনার অভাব নিয়ে অভিযোগ করে আসছে। নতুন আবিষ্কারটি তাদের কার্যক্রমে যোগ করতে পারে স্বস্তির সুবাতাস।
উগুর সাহিন বলেন, অতি-শীতল তাপমাত্রার কারণে এতদিন টিকাটির পরিবহন ও বিতরণের কাজ জটিল হয়ে পড়েছিল। ফলে প্রত্যাশা অনুসারে টিকাদানে গতি আসছিল না। এখন দুর্গম অঞ্চলে উন্নত হিমচক্র ব্যবস্থা ছাড়াই এর চালান পৌঁছে দেওয়া যাবে।
- সূত্র: নিউইয়র্ক পোস্ট