২০২১ সালেই প্রবৃদ্ধি ফেরার আশা করছেন বিশ্বের ৭৬ শতাংশ সিইও
এক বছরের বেশি সময় পৃথিবী দেখেছে কোভিড-১৯ অতিমারির ত্রাস। যেকারণে জীবন ও জীবিকা বিপন্ন হয় প্রায় সব দেশেই। তবুও, বিশ্ব অর্থনীতির উত্তরণ ও সেই সুবাদে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে রেকর্ড মাত্রায় আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন শীর্ষ নির্বাহীরা। বৈশ্বিক ব্যবসায়ী এ নেতাদের ৭৬ শতাংশের প্রত্যাশা করেন, চলতি ২০২১ সালেই নতুন গতি ফিরে পাবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা সূত্রে এতথ্য জানা গেছে।
ব্যবসা-বানিজ্যের পরিবেশ নিয়ে আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোর মুখ্য নির্বাহীদের আস্থা জানতে জরিপটি পরিচালনা করে বহুজাতিক বাণিজ্যিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান প্রাইসওয়াটারহাউজ কুপার্স (পিডব্লিসি)। সংস্থাটির গেল বছরের জরিপে মাত্র ২২ শতাংশ মুখ্য নির্বাহী প্রবৃদ্ধির উপর আস্থা রেখেছিলেন, ২০১৯ সালে যা ছিল ৪২ শতাংশ।
২০১২ সাল থেকে প্রতিবছর জরিপটি পরিচালনা করা হচ্ছে, এরমধ্যে চলতি বছরেই সর্বোচ্চ সংখ্যক সিইও ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেন। গত ১১ মার্চ প্রকাশিত হয় 'অ্যানুয়াল গ্লোবাল সিইও সার্ভে' শীর্ষক জরিপটির ফলাফল।
১০০টি দেশের ৫,০৫০ জন মুখ্য নির্বাহী এবারের জরিপে অংশ নেন, যা গত জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি নাগাদ পরিচালিত হয়।
অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি নিয়ে সবচেয়ে বেশি ইতিবাচক মনোভাব লক্ষ্য করা গেছে উত্তর আমেরিকা এবং পশ্চিম ইউরোপে। অঞ্চল দুটির নির্বাহীদের মধ্যে যথাক্রমে ৮৬ ও ৭৬ শতাংশ চলতি বছরের সামনের দিনগুলোতে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি শক্তিশালী রুপ নেওয়ার অনুমান করেন।
সমীক্ষা প্রতিবেদনে পিডব্লিসি নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান বব মর্টিজ বলেন, "গেল বছর পৃথিবী দেখেছে চরম মানবিক বিপর্যয়, অর্থনৈতিক সঙ্কটও অনুভূত হয় অসহনীয় মাত্রায়। মুখ্য নির্বাহীরা নতুন বিনিয়োগ এবং কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। তাই এবছরের আগামী দিন নিয়ে তাদের মধ্যে সতর্ক আশাবাদ দেখতে পাওয়াটা সত্যিই উৎসাহব্যঞ্জক।"
ব্যবসায় নেতৃত্ব দানকারীদের চোখে ২০২১ সাল:
তিনি আরও বলেন, "ভ্যাকসিন গবেষণায় উন্নয়ন এবং বিশ্বের অনেক দেশে তা সরবরাহ গতিশীল হওয়ার সুবাদে চলতি বছর নতুন শক্তি নিয়ে প্রবৃদ্ধি ফিরে আসবে বলে নির্বাহীরা আশা করছেন।"
তবে সম্পূর্ণ পথটি মসৃণ নয়, ব্যবসার পথে বাঁধাও বহুমাত্রিক। তাই মুখ্য নির্বাহী সামনে এখন মৌলিক চ্যালেঞ্জ দুটি: প্রথমত, উচ্চাভিলাষী ব্যবসায়ীক অংশীদারদের আস্থা অর্জন এবং দ্বিতীয়ত, পরিস্থিতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ব্যবসা পরিচালনার কৌশল উদ্ভাবন এবং তার টেকসই ফলাফল অর্জন। আর ফল অর্জন করতে হবে ক্রমশ পরিবর্তনশীল বাহ্যিক পরিবেশের সঙ্গে তাল মিলিয়েই।
"যেসব প্রতিষ্ঠান এসব লক্ষ্যপূরণ করতে পারবে; মহামারি অবসানের পর তারা আগের চাইতেও অনেক বেশি শক্তিশালী, টেকসই এবং উৎপাদনশীল হয়ে উঠবে। নতুন কোনো বৈশ্বিক সঙ্কটের অভিঘাত সহ্য করার ক্ষেত্রেও তাদের সক্ষমতা হবে অনন্য," বব মর্টিজ যোগ করেন।