কোভিড-১৯ সংক্রমণ পরিস্থিতিতে সরকারের নতুন জারিকৃত বিধি-নিষেধ
দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধির বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সরকার নতুন এক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।
আজ এ বিষয়ে একটি গেজেট প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
নতুন প্রদত্ত নির্দেশাবলী হল-
- সকল ধরনের জনসমাগম (সামাজিক/রাজনৈতিক/ধর্মীয়/অন্যান্য) সীমিত করতে হবে। উচ্চ সংক্রমণযুক্ত এলাকায় সকল ধরনের জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হল। বিয়ে/ জন্মদিনসহ যে কোনো সামাজিক অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে জনসমাগম নিরুৎসাহিত করতে হবে;
- মসজিদসহ সকল ধর্মীয় উপাসনালয়ে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে;
- পর্যটন/ বিনদন কেন্দ্র/ সিনেমা হল/ থিয়েটার হলে জনসমাগম সীমিত করতে হবে এবং সকল ধরনের মেলা আয়োজন নিরুৎসাহিত করতে হবে,
- গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং ধারণ ক্ষমতার ৫০ ভাগের অধিক যাত্রী পরিবহন করা যাবে না;
- সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাতে আন্তঃজেলা যান চলাচল সীমিত করতে হবে; প্রয়োজনে বন্ধ রাখতে হবে;
- বিদেশ হতে আগত যাত্রীদের ১৪ দিন পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক (হোটেলে নিজ খরচে) কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হবে;
- নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী খোলা/ উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন পূর্বক ক্র্য-বিক্রয়ের ব্যবস্থা করতে হবে; ওষুধের দোকানে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে;
- স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানসমূহে মাস্ক পরিধানসহ যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে;
- শপিং মলে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েরই যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে;
- সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাদ্রাসা, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়) ও কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে;
- অপ্রয়োজনীয় ঘোরাফেরা/ আড্ডা বন্ধ করতে হবে; জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাত ১০টার পর বাইরে বের হওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে হবে;
- প্রয়োজনে বাইরে গেলে মাস্ক পরিধানসহ সকল ধরনের স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে। মাস্ক পরিধান না করলে কিংবা স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে;
- করোনায় আক্রান্ত/ করোনার লক্ষণযুক্ত ব্যক্তির আইসোলেশন নিশ্চিত করতে হবে। করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা অন্যান্যদেরও কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হবে;
- জরুরি সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ছাড়া সকল সরকারি-বেসরকারি অফিস/ প্রতিষ্ঠান/ শিল্প কারখানাসমূহ ৫০ ভাগ জনবল দ্বারা পরিচালিত করতে হবে। গর্ভবতী/ অসুস্থ/ বয়স ৫৫- উর্ধব কর্মকর্তা/কর্মচারীর বাড়িতে অবস্থান করে কর্ম সম্পাদনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে;
- সভা, সেমিনার, প্রশিক্ষণ, কর্মশালা যথাসম্ভব অনলাইনে আয়োজনের ব্যবস্থা করতে হবে;
- সশরীরে উপস্থিত হতে হয় এমন যে কোনো ধরনের গণ পরীক্ষার ক্ষেত্রে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে;
- হোটেল-রেস্তোরাঁসমূহে ধারণ ক্ষমতার ৫০ ভাগের অধিক মানুষের প্রবেশ বারিত করতে হবে;
- কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ এবং অবস্থানকালীন সর্বদা বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধানসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে;
আগামী দুই সপ্তাহ এসব বিধিমালা কার্যকর থাকবে।
আজ সোমবার ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনাভাইরাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন, সংক্রমণের হার বেড়ে ১৮ দশমিক ৩৮ এ দাঁড়িয়েছে।
এর আগে দুই মাস ধরে সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের নিচে ছিল। তবে মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে সংক্রমণের হার বাড়তে শুরু করেছে।
গত বছরের মার্চে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর এপর্যন্ত মোট শনাক্ত হয়েছেন ৬ লাখ ৮৯৫ জন, আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৮ হাজার ৯৪৯ জন।