মাদ্রাসা ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলি পরিকল্পিত, দাবি হেফাজত আমিরের
২৬ মার্চ চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে পুলিশ পরিকল্পিত ভাবে মাদ্রাসা ছাত্রদের ওপর গুলি চালিয়েছে বলে দাবি করেছেন হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী
তিনি বলেন, "যারা থানায় পাথর নিক্ষেপ করেছে তারা মাদ্রাসা ছাত্র তার প্রমান কী? সেখানে আরও অনেক মানুষ ছিলো। কিন্তু পুলিশ রাস্তায় নেমে ছাত্রদের উপর সরাসরি গুলি চালিয়েছে। পুলিশ কেন গুলি করলো? এগুলো পরিকল্পিত চক্রান্ত।"
শুক্রবার চট্টগ্রামের হাটহাজারী ডাক বাংলো চত্বরে এক প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দেশব্যাপী সংঘর্ষে ২১ নেতাকর্মী নিহতের ঘটনায় হেফাজতে ইসলাম হাটহাজারী উপজেলা শাখা এ সমাবেশের আয়োজন করে।
হেফাজত আমির বলেন, "বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র। এ রাষ্ট্রে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করার একশত ভাগ অধিকার আমাদের আছে। আমাদের বাধা দেওয়া হলো কেন? ছাত্রদের প্রতিবাদ মিছিলে গুলি চালাবার কোনো অধিকার প্রশাসনের নাই। যারা বিনা উস্কানিতে ছাত্রদের মিছিলে গুলি চালিয়েছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।"
চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে নিহতদের ক্ষতিপুরণ দাবি করে বাবুনগরী বলেন, "গত শুক্র, শনি ও রোববার সারা দেশে যেসব হেফাজতের নেতা-কর্মীর মৃত্যু হয়েছে তাদের ক্ষতিপূরণ সরকারকে দিতে হবে,"
পাশাপাশি সরকারকে আহতদের সুচিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়ার ও তাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।
"ছাত্রলীগ, পুলিশের হামলায় হেফাজতের যেসব নেতাকর্মী আহত হয়েছেন তাদের সুচিকিৎসার দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে। সারাদেশে হেফাজত নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে যেসব মিথ্যা মামলা দায়ের হয়েছে সেগুলো প্রত্যাহার করে নিতে হবে। পাশাপাশি যেসব হেফাজত নেতা-কর্মী পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন তাদেরকে মুক্তি দিতে হবে। নয়তো হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।"
এদিকে হেফাজতের এই বিক্ষোভ সমাবেশকে কেন্দ্র করে শুক্রবার জুমার নামাজের পর চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়ক বন্ধ করে দেয় পুলিশ। এ কারণে সড়কটিতে প্রায় দুই ঘন্টা যান চলাচল বন্ধ ছিলো। ফলে আবারও দুর্ভোগ পোহান এই সড়কে যাতায়াতকারি হাজার হাজার যাত্রী।
এর আগে গত ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ আসাকে কেন্দ্র করে হাটহাজারীতে হেফাজত ও পুলিশের সংঘর্ষে গুলিতে চারজন নিহত হন।
সেদিন থেকে ছাত্ররা হাটহাজারী মাদ্রাসা গেটে অবস্থান নিয়ে দেয়াল তুলে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়ক অবরোধ করে রাখে। তিনদিন পর প্রশাসনের অনুরোধে তারা সেই দেয়াল তুলে নিলে স্বাভাবিক হয় চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়ক।