আবরার হত্যা: বুয়েটের ২৬ শিক্ষার্থী আজীবন বহিষ্কার
বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যায় ২৬ জনকে স্থায়ী বহিষ্কার করেছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) কর্তৃপক্ষ।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধে ৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
আবরার হত্যার ঘটনায় বুয়েটের গঠন করা তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বুয়েটের বোর্ড অব রেসিডেন্স অ্যান্ড ডিসিপ্লিন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) মধ্যরাতে বোর্ডের সদস্য সচিব ও বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমানের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বহিষ্কৃতদের মধ্যে ২৫ জন আবরার হত্যা মামলায় অভিযুক্ত আসামি।
যেসব শিক্ষার্থীকে বুয়েট থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে, তাঁরা হলেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, সহসভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, সাহিত্য সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির, ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, সমাজসেবাবিষয়ক উপসম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না, আইনবিষয়ক উপসম্পাদক অমিত সাহা, উপদপ্তর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ, সহসম্পাদক আশিকুল ইসলাম বিটু, সাবেক সহসভাপতি এস এম মাহমুদ সেতু এবং সদস্য ও কর্মী মিজানুর রহমান, শামসুল আরেফিন রাফাত, মুনতাসির আল জেমি, মুজাহিদুর রহমান, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, এহতেশামুল রাব্বি তানিম, শামীম বিল্লাহ, মাজেদুর রহমান, আকাশ হোসেন, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, মুহাম্মদ মোর্শেদ-উজ-জামান জিসান, মোয়াজ আবু হোরায়রা, এ এস এম নাজমুস সাদাত ও মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম৷ এঁদের মধ্যে আশিকুল ইসলাম বিটু ছাড়া বাকি সবার নাম পুলিশের অভিযোগপত্রে রয়েছে৷
বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ছয়জন হলেন বুয়েটের শেরে বাংলা হলের ছাত্র আবু নওশাদ সাকিব, সাইফুল ইসলাম, মোহাম্মদ গালিব, মো. শাওন মিয়া, সাখাওয়াত ইকবাল অভি ও মো. ইসমাইল৷ আবরার হত্যার ঘটনায় বিভিন্ন পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট থাকাসহ কয়েকটি অভিযোগে তাঁদের বহিষ্কার করা হয়েছে৷
প্রসঙ্গত, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তির বিরোধিতা করে ৫ অক্টোবর শনিবার বিকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ। এর জের ধরে ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের তাকে ২০১১ নম্বর কক্ষে ডেকে নিয়ে যায় ছাত্রলীগের সদস্য ও নেতা-কর্মীরা, সেখানে নির্মমভাবে পেটায় তারা আবরারকে। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পিটুনির সময় নিহত আবরারকে ‘শিবিরকর্মী’ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালায় খুনিরা।
আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ইতোমধ্যে পুলিশ ২০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। ১৩ জনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে ৬ জন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
গত ১৩ নভেম্বর আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।