পশ্চিমবঙ্গে দুই সপ্তাহের কঠোর লকডাউন ঘোষণা
ক্রমশ বাড়ছিল সংক্রমণ ও আক্রান্তের সংখ্যা। ফলে করোনা মোকাবিলায় দুই সপ্তাহের জন্য কঠোর লকডাউন বিধি ঘোষণা করল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
আগামীকাল সকাল ছ'টা থেকে শুরু হওয়া এ লকডাউন চলবে আগামী ৩০ মে সন্ধ্যা ছ'টা পর্যন্ত। শনিবার (১৫ মে) রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এই লকডাউন ঘোষণা করেন। তিনি জানান, করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই এমন সিদ্ধান্ত। সেই অনুযায়ীই সকলকে নিয়ম মেনে চলতে হবে। নইলে মহামারি আইনে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে।
একনজরে কী কী বিধিনিষেধ জারি করা হল এবং কী কী খোলা থাকবে -
১) সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
২) বন্ধ থাকবে সমস্ত সরকারি-বেসরকারি অফিস। শুধুমাত্র জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত দপ্তরগুলো খোলা থাকবে।
৩) শপিং, মল, বাজার, ক্রীড়া কমপ্লেক্স বন্ধ থাকবে।
৪) সকাল ৭ টা থেকে সকাল ১০ টা পর্যন্ত শুধুমাত্র শাক-সবজি, ফল, মুদিখানা, মাংস, ডিম, পাউরুটির সঙ্গে যুক্ত খুচরো দোকান এবং বাজার খোলা থাকবে। সকাল ১০ টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত মিষ্টির দোকান খোলা থাকবে। ওষুধের দোকান, চশমার দোকান সাধারণ সময়মতো খোলা থাকবে। বেলা ১২ টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত সোনা ও শাড়ির দোকান খোলা থাকবে। পেট্রল পাম্প, অটো রিপেয়ার দোকান, এলপিজি গ্যাসের দোকান এবং বণ্টন দোকান খোলা থাকবে। ওষুধের দোকান, চশমার দোকান সাধারণ সময়মতো খোলা থাকবে।
৫) রাজ্যের মধ্যে মেট্রো, লোকাল ট্রেন, ফেরি চলাচল বন্ধ থাকবে। ট্যাক্সি, অটো বন্ধ থাকবে। শুধু জরুরি পরিষেবা সংক্রান্ত পরিবহনে ছাড় মিলবে। কার্যত সব রকমের গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকছে। শুধুমাত্র জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত গাড়ি, চিকিৎসা, সংবাদমাধ্যম, হাসপাতাল, ক্নিনিক, বিমানবন্দর থেকে গাড়ি, টার্মিনাল পয়েন্ট থেকে গাড়ি, টিকাকরণ কেন্দ্র থেকে চলাচল করতে পারবে।
৬) ব্যাঙ্ক খোলা থাকবে। তবে সকাল ১০ টা থেকে দুপুর দুটো পর্যন্ত কাজ চলবে। এটিএম পরিষেবা চালু থাকবে।
৭) রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক - সবরকম জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা।
৮) চা বাগানে ৫০ শতাংশ কর্মী উপস্থিত থাকতে পারবেন। জুটমিলে কর্মী উপস্থিতি সর্বাধিক ৩০ শতাংশে বেঁধে রাখা হচ্ছে।
৯) রাত ন'টা থেকে সকাল পাঁচটা পর্যন্ত বাড়ির বাইরে সবরকম গতিবিধিতে নিষেধাজ্ঞা থাকবে।
এদিকে কিছুটা হলেও কমেছে ভারতে দৈনিক করোনা সংক্রমণ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ২৬ হাজার ৯৮ জন। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা হল ২ কোটি ৪৩ লাখ ৭২ হাজার ৯০৭ জন। দৈনিক মৃত্যুও পর পর তিন দিন ৪ হাজার থাকার পর শনিবার একটু কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ৮৯০ জনের। করোনায় এখন পর্যন্ত সেখানে প্রাণ হারিয়েছেন ২ লাখ ৬৬ হাজার ২০৭ জন।
- সূত্র-ভারতীয় গণমাধ্যম