নাদালের লাল দূর্গে জোকোভিচের হানা
ফ্রেঞ্চ ওপেন মানেই রাফায়েল নাদালের রাজত্ব, এখানে সব শাসন তার। রোলাঁ গাঁরোতে সেই কবে থেকেই একক আধিপত্য ধরে রেখেছেন স্প্যানিশ এই টেনিস তারকা। নাদালের অংশগ্রহণের পর থেকে প্রায় প্রতি আসরেই একই গল্প লেখা হয়েছে, 'ফরাসি ওপেনের চ্যাম্পিয়ন নাদাল'। কিন্তু এবার আর তা হলো না। নাদালের লাল দূর্গে হানা দিলেন নোভাক জোকোভিচ। সেমি ফাইনালের লড়াই থেকে ক্লে কোর্টের রাজাকে বিদায় করে দিলেন সার্বিয়ান এই টেনিস সুপার স্টার।
ফ্রেঞ্চ ওপেনের দ্বিতীয় সেমি ফাইনালে নাদালকে ৩-৬, ৬-৩, ৭-৬(৭-৪), ৬-২ গেমে হারিয়েছেন জোকোভিচ। প্রথম সেট হেরেও দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়ান বিশ্বের এক নম্বর এই টেনিস তারকা। এরপর নাদালকে শুধু হতাশই করে গেছেন জোকোভিচ। ২০০৫ সালে ফ্রেঞ্চ ওপেনে অভিষেকের পর এই গ্র্যান্ড স্ল্যামে মাত্র তৃতীয়বার হারলেন নাদাল।
ফেঞ্চ ওপেনের রেকর্ড ১৩টি শিরোপা জিতেছেন নাদাল। শেষ চার আসরেও তার রাজত্ব দেখা গেছে, সবকটিতেই শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছেন তিনি। সেই নাদালকেই হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ফ্রেঞ্চ ওপেনের শিরোপা জেতার পথে এগিয়ে গেলেন জোকোভিচ। সর্বশেষ এবং একবারই ২০১৬ সালে ফেঞ্চ ওপেনের শিরোপা জেতেন তিনি।
ক্লে কোর্টের রাজাকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠায় উচ্ছ্বাসের শেষ নেই জোকোভিচের। ম্যাচের পর তিনি বলেন, 'এই কোর্টে রাফায়েল নাদালের সঙ্গে থাকতে পারাটাই দারুণ কিছু। প্যারিসে খেলা আমার সব সময়ের সবচেয়ে বড় ম্যাচ এটি। দুজনের জন্যই সেরা আবহে সেরা একটি ম্যাচ।'
চাপের বোঝা নিয়েও সেরাটা দিতে পেরেছেন বলে নাদালকে হারানো সম্ভব হয়েছে বলে মনে করেন জোকোভিচ, 'এখানে রাফার বিপক্ষে জিততে নিজের সেরাটা দিতে হবে, আজ আমি আমার সেরাটা খেলেছি। কেমন লাগছে, ঠিক বলে বোঝাতে পারব না। অনেক সময় অনেকেই বলে, কোনো চাপ ছিল না, কিন্তু আসলে থাকে। এই চাপটাই দারুণ এক পাওয়া। এমন ম্যাচে নিজের খেলা ও ব্যক্তিত্বের পরীক্ষার সুযোগ।'
একটা সময়ে গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের দিক থেকে নাদালের চেয়ে অনেক এগিয়ে ছিলেন রজার ফেদেরার। গত ফ্রেঞ্চ ওপেন জিতে ফেদেরারে ২০টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলেন নাদাল। এবার হাঁটুর ইনজুরির কারণে চুতর্থ রাউন্ডের পর সরে দাঁড়ান ফেদেরার। সুইস এই টেনিস কিংবদন্তিকে ছাড়িয়ে রেকর্ড গড়ার সুযোগ ছিল নাদালের। কিন্তু ৩৫ বছর বয়সী এই স্প্যানিয়ার্ড এবার নিজের রাজত্বেই ঘরছাড়া!