জিনজিয়াং ও হংকং নিয়ে বিবৃতি দেওয়ায় জি-৭ এর নিন্দা জানালো চীন
বেইজিংসহ আরও কিছু বিষয় নিয়ে সমালোচনা করায় জি-৭ এর বিরুদ্ধে 'রাজনৈতিক কারসাজি' করার অভিযোগ এনেছে চীন।
তিন দিনের সামিট শেষ এক যৌথ বিবৃতিতে জি-৭ এর নেতারা চীনকে 'মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতাকে শ্রদ্ধা করতে' আহ্বান জানান।
আলোচিত বিভিন্ন ইস্যুর মধ্যে ছিল চীনে উইঘুর মুসলিম সংখ্যালঘুদের নির্যাতন করা এবং হং কং এর গণতন্ত্রপন্থী কর্মীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি।
সোমবার এক মুখপাত্র বলেন, 'ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা, চীনের ব্যাপারে পরচর্চা করা ও চীনের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার দায়ে জি-৭ কে অভিযুক্ত করছে যুক্তরাজ্যের চীনা দূতাবাস।'
বিশ্বের ৭ টি বৃহৎ 'উন্নত অর্থনীতি'র দেশকে নিয়ে গঠিত জি-৭ এবার একাধিক বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তার মধ্যে আছে করোনাভাইরাস মহামারি বন্ধ করা, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করা ও চীন সংশ্লিষ্ট কিছু বিষয়।
চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর ও অন্যান্য মুসলিম সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার নিশ্চিত করতে চীনের প্রতি আহ্বান জানায় কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে গঠিত দল জি-৭।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ২০১৭ সাল থেকে জিনজিয়াং এ ব্যাপক ধরপাকড় চালিয়ে চীন এখনো পর্যন্ত এক মিলিয়নেরও বেশি উইঘুর ও অন্যান্য মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষকে আটকে রেখেছে; জেলে বন্দী করেছে হাজারো মানুষকে। জেলের ভেতরে ও ডিটেনশন ক্যাম্পে তাদেরকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয় বলেও খবর পাওয়া গেছে। যদিও চীন বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে।
গতবছর চীনে নতুন এক নিরাপত্তা আইন পাস করায় হং কং এ আন্দোলনকারীদের সাজা দেয়া সহজ হয়ে উঠেছে। জি-৭ নেতৃবৃন্দ বলেন, হং কং এর উচিত একটি উচ্চ পর্যায়ের স্বায়ত্ত্বশাসন বজায় রাখা।
চীন ও তাইওয়ানকে বিভক্ত করে দেয়া 'তাইওয়ান জলপ্রণালী' নিয়ে শান্তি ও স্থিতিস্থাপক পরিস্থিতি বজায় রাখার গুরুত্বও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। কারণ চীন তাইওয়ানকে একটি বিচ্ছিন্নতাকামী রাষ্ট্র হিসেবে গণ্য করলেও, তাইওয়ান নিজেদের স্বাধীন রাষ্ট্রই মনে করে।
কোভিড-১৯ এর উৎস অনুসন্ধান করতে চীনে আরো তদন্ত চালানোরও দাবি জানায় জি-৭।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তিনি চীনকে নিয়ে দেয়া বিবৃতির ভাষা সম্পর্কে সন্তুষ্ট। কিন্তু যুক্তরাজ্যে চীনা দূতাবাস একে মোটেও ভালো চোখে দেখেনি এবং তথ্য বিকৃত করা হয়েছে দাবি করেছে। প্রকৃতপক্ষে এটি যুক্তরাষ্ট্রসহ আরো কিছু দেশের বিদ্বেষপূর্ণ উদ্দেশ্য প্রকাশ করেছে বলে জানায় চীনা দূতাবাস।
আজ সোমবার এক সভায় ন্যাটো সামরিক জোটের কাছ থেকে চীনের প্রতি আরো জোরাল বার্তা আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ব্রাসেলসে একদিনের সামিটে যোগ দিতে আসা ন্যাটোর সেক্রেটারি জেনারেল জেন্স স্টলটেনবার্গ বলেন, 'আমরা জানি যে চীন আর আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি এক নয়। আমাদের জোট হয়েই কথা বলতে হবে।