সিএমএসএমই খাতের জন্য আড়াই হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল
কোভিডের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কটেজ, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের (সিএমএসএমই) এন্টারপ্রাইজ এর জন্য ২,৫২০ কোটি টাকার আরো একটি পুনঃঅর্থায়ন তহবিল চালু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এশীয় পরিকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংকের (এআইআইবি) সহায়তায় এই তহবিলটি গঠিত হয়েছে। এই সহায়তা দিতে চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সরকারের সাথে চুক্তি করেছিল এআইআইবি।
তহবিলটি পরিচালনা করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মেয়াদ ৩ বছর এবং সুদের হার হবে ৪ শতাংশ। তহবিল থেকে সিএমএসএমই খাত, ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল হিসেবে ঋণ পাবে।
বুধবার তহবিলটি পরিচালনা প্রসঙ্গে নীতিমালা প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এসএমই এবং বিশেষ কর্মসূচি বিভাগ।
নীতিমালায় জানা যায়, গেল বছর সিএমএসএমই খাতের জন্য যে ২০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষিত হয়েছিল তার অর্ধেক ১০ হাজার কোটি টাকা পুনঃঅর্থায়ন হিসেবে ব্যবহৃত হবে।
যদি কোন প্রতিষ্ঠান ওই তহবিল থেকে প্রয়োজনীয় ঋণের ৫০ শতাংশ অর্থ পুনঃঅর্থায়ন হিসেবে পেয়ে থাকে তাহলে বাকি ৫০ শতাংশ অর্থ এআইআইবি এর সহায়তায় গঠিত নতুন এই তহবিল থেকে পাবে।
তহবিল প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, যেসব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এই পুনঃঅর্থায়ন তহবিল বাস্তবায়নের সাথে যুক্ত হতে চায় সেগুলো নির্ধারিত কিছু মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হতে হবে।
এর মধ্যে আছে, ব্যাংক ও নন-আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ৩ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। সবশেষ দুই পঞ্জিকা বর্ষে লাভজনক অবস্থায় থাকতে হবে।
সরকার ঘোষিত সিএমএসএমই প্যাকেজ বাস্তবায়নকারী ব্যাংক কিংবা নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান হতে হবে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে ন্যূনতম মূলধন থাকতে হবে। খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১০ শতাংশর বেশি হতে পারবে না।
এই তহবিল ব্যবস্থাপনায় অংশ নেয়া ব্যাংক ও নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্দেশিত পরিবেশ ও সামাজিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা গাইডলাইন নিশ্চিত করতে হবে। যথাযথ কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে ঋণ দিতে হবে।
কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের একাউন্টে অপর্যাপ্ত ব্যালেন্স থাকার জন্য ঋণ প্রদান বিলম্ব হলে ওই প্রতিষ্ঠানকে ২ শতাংশ দণ্ড সুদ (পেনাল্টি) ধার্য করা হবে। অন্যদিকে কোন গ্রাহক ঋণের টাকা ভিন্ন কাজে ব্যবহার করলে তাকেও ২ শতাংশ দণ্ড সুদ আরোপ করা হবে।
নতুন এই তহবিল প্রসঙ্গে এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. মাসুদুর রহমান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, এটি খুবই ভালো উদ্যোগ।
তবে এখনো প্রান্তিক পর্যায়ের ক্ষুদ্র এবং নারী উদ্যোক্তারা ঋণ প্রাপ্তিতে পিছিয়ে আছে। তাদের ঋণ নিশ্চিত করা একটি অন্যতম চ্যালেঞ্জ হবে বলে তিনি মনে করেন।
তিনি বলেন, সিএমএসএমই খাতের জন্য গঠিত প্রণোদনা প্যাকেজের বাস্তবায়নে ব্যাংকগুলো পিছিয়ে আছে। বিপরীতে এই খাতে ঋণের যে পরিমাণ চাহিদা তা পূরণ করা যাচ্ছে না।
নতুন তহবিল বাস্তবায়নে তার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কিছু করার থাকলে তা করতে প্রস্তুত আছেন বলে জানান এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান।