ভোজ্য তেল কমাতে পারে বাল্যবিবাহের হার: মার্কিন গবেষণা
কন্যাশিশু এবং তাদের পরিবারকে ভোজ্য তেল দেয়ার উদ্যোগ নেয়া গেলে তা বাংলাদেশে বাল্যবিবাহ কমাতে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি এবং ডিউক ইউনিভার্সিটি কর্তৃক কয়েক বছরব্যাপী পরিচালিত এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
'আ সিগন্যাল টু এন্ড চাইল্ড ম্যারেজ: থিওরি এন্ড এক্সপেরিমেন্টাল এভিডেন্স ফ্রম বাংলাদেশ' শীর্ষক এ গবেষণায় দেখা যায়, প্রণোদনা হিসেবে রান্নার তেল দেয়ায় ১৮ বছরের নিচে বাল্যবিবাহ ১৭% এবং ১৬ বছরের নিচে ১৮% হ্রাস পেয়েছে।
১৫-১৭ বছর বয়সী কন্যাশিশু আছে এমন পরিবারকে ভোজ্য তেল সরবরাহের আলোকে গবেষণায় উপরোক্ত ফলাফল পাওয়া যায়। তাদের শর্ত দেয়া হয়েছিল, ১৮ বছরের আগে বিয়ে দেয়া যাবে না।
স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির অর্থনীতি বিভাগের নিনা বুচমান এই গবেষণার নেতৃত্ব দিয়েছেন। বাংলাদেশের মধ্য-দক্ষিণাঞ্চলের ছয়টি উপজেলার ৪৬০টি গ্রামের হাজারো মেয়ের উপর এটি পরিচালিত হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক আন্তর্জাতিক বেসরকারী সংস্থা 'সেভ দ্য চিলড্রেন' গবেষণাটির অংশীদারিত্বে ছিল।
কিন্তু এত কিছু থাকতে ভোজ্যতেলই কেন? গবেষকদের মতে, বাংলাদেশি পরিবারগুলোতে রান্নার তেলের মূল্যমানের জন্যই মূলত গবেষণার জন্য এই পণ্যটি বেছে নেয়া হয়েছিল।
তারা বলেন, "বাংলাদেশের প্রতিটি পরিবারকে এই পণ্যটি নিয়মিত ক্রয় করতে হয়; ফলে একে নগদ অর্থের নিকটতম বিকল্প হিসেবে গণ্য করা যায়"।
"এছাড়া আয়তন অনুপাতেও এর উচ্চমূল্য রয়েছে যা পরিবহন ব্যয়কে হ্রাস করে"।
২০০৭ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত গবেষণাটি পরিচালিত হয়; এ মাসের শুরুতে মার্কিন ভিত্তিক বেসরকারী অর্থনৈতিক গবেষণা পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ব্যুরো অফ ইকোনমিক রিসার্চ (এনবিইআর) কর্তৃক এটি প্রকাশিত হয়। পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজারের পর বাংলাদেশে বর্তমানে বাল্যবিবাহের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ হার পরিলক্ষিত।
এদিকে জাতিসংঘ শিশু তহবিল বা ইউনিসেফের ২০২০ সালের এপ্রিলে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার ২০-২৪ বছর বয়স্ক ২৯ শতাংশ নারীর ১৮ বছর হওয়ার আগেই বিয়ে হয়ে যায়। ইউনিসেফের মতে, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে অনুমিত এ হার ৫১%।