ক্রিপ্টোকারেন্সি কেনাবেচা ও লেনদেনে ব্যবহার অবৈধ: সিআইডি
দেশের আইন অনুযায়ী, বিটকয়েনের মতো যে কোনো ক্রিপ্টোকারেন্সিতে লেনদেন অবৈধ বলে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানিয়েছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ- সিআইডি'র কর্মকর্তারা।
এব্যাপারে সিআইডি'র অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক কামরুল আহসান জানান, লেনদেনে ক্রিপ্টোকারেন্সির ব্যবহার হলে তা স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট, ফরেন এক্সচেঞ্জ রেগুলেশন অ্যাক্ট এবং দুর্নীতি বিরোধী আইন লঙ্ঘন করবে।
এর আগে গত মে মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদেশি মুদ্রা নীতি বিভাগ সিআইডিকে একটি চিঠিতে জানায়, ক্রিপ্টোকারেন্সির মালিকানা, সংরক্ষণ ও লেনদেন কোনো অপরাধ নয়।
তবে সিআইডির অতিরিক্ত আইজি বলেছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই চিঠিতে হয়তো বিষয়টি সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করা হয়নি।
তিনি বলেন, "ধরুন আপনি বিটকয়েন কিনলেন, আপনি যদি সেটির মালিকানা ধরে রাখেন, এমন কাজ হয়তো কোনো সমস্যা করবে না। কিন্তু যে মুহূর্তে আপনি এটি ভাঙ্গালেন বা এর মাধ্যমে কিছু কিনলেন তখন আপনি অনুমোদনহীন একটি আর্থিক চ্যানেল ব্যবহার করে ফেললেন, আর সেটা অবৈধ।"
কামরুল আহসান বলেন, এভাবে যেকোনো ধরনের লেনদেনে ভার্চুয়াল মুদ্রার ব্যবহার প্রথমে উল্লেখিত তিনটি আইনকে লঙ্ঘন করবে।
ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেন অর্থপাচার হিসেবে বিবেচিত হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
শীর্ষ এ কর্মকর্তা আরেকটু ব্যাখ্যা করে বলেন, "যেমন ধরুন; আপনি কানাডা গিয়ে সেখানে বিটকয়েনটিকে আসল মুদ্রায় ভাঙালে তার কোনো রেকর্ড থাকবে না। আর সেজন্যেই এ ধরনের লেনদেনকে মানি- লন্ডারিং হিসেবে ধরা হবে।"
এবিষয়ে বাংলাদেশের ব্যাংকের ইতঃপূর্বে জারি করা এক সার্কুলারের প্রসঙ্গ তুলে সিআইডির অতিরিক্ত আইজি জানান, ওই পরিপত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জনসাধারণকে ক্রিপ্টোকারেন্সির ব্যাপারে সাবধান করেছিল।
এর আগে ২০১৬ সালের ২৪ ডিসেম্বর নিজস্ব ওয়েবসাইটে কৃত্রিম ডিজিটাল মুদ্রা লেনদেন ও বাণিজ্য নিয়ে সতর্কবার্তা প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এসময় এক সংযুক্ত বিবৃতিতে জানানো হয়, "ভার্চুয়াল মুদ্রায় লেনদেন অর্থপাচার ও সন্ত্রাস বিরোধী আইন দুটিকে লঙ্ঘন করবে।"
এরপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাম্প্রতিক চিঠির ব্যাপারে কামরুল বলেন, এবারেও ক্রিপ্টোকারেন্সির বিকিকিনিকে (বাণিজ্য) অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চিঠিতে বলা হয়, ভার্চুয়াল মুদ্রাগুলোয় লেনদেন বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৪৭- এর দ্বিতীয় পর্ব, সন্ত্রাসবিরোধী আইন ২০০৯ এবং মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর আওতায় অপরাধ হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে।
নাম গোপন রাখার শর্তে সিআইডির আরেক শীর্ষ কর্মকর্তাও বলেছেন, ক্রিপ্টোকারেন্সিতে লেনদেনের কোনো সুযোগ রাখা হয়নি।
এর আগে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ক্রিপ্টোকারেন্সিতে লেনদেনের সাথে জড়িত একাধিক চক্রকে ঢাকার গাজীপুরে অভিযান চালিয়ে আটক করে।
সিআইডি'র সূত্রগুলো জানায়, ক্রিপ্টোকারেন্সির লেনদেনের সংক্রান্ত দুটি কেসের তদন্ত চলছে। ইতোমধ্যেই আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে সিআইডি।
সিআইডি ইনস্পেক্টর ইব্রাহিম হোসেন বলেন, "তদন্ত চলমান থাকা অবস্থাতেই আমরা লেনদেন সংক্রান্ত একটি প্রমাণ পেয়েছি। আইন অনুসারে এ ধরনের লেনদেন অবৈধ। তাই সিআইডি অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলার চার্জশিট জমা দিয়েছে।"