মোটা অংকের টাকা নিয়ে দেশ ছেড়ে পালানোর অভিযোগ অস্বীকার করলেন ঘানি
তালেবানের ক্ষমতা দখলের পরপর গত রোববার রাতে নিজ দেশ থেকে পালান সাবেক আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি। সাবেক এই প্রেসিডেন্টের দাবি, রক্তপাত এড়াতে দেশ ছেড়েছেন তিনি।
'মানবিক দিক বিবেচনায়' তাকে দুবাইয়ে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
এক বিবৃতিতে সংযুক্ত আরব আমিরাত জানায়, 'সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ইন্টারন্যাশনাল কর্পোরেশন নিশ্চিত করেছে যে, সংযুক্ত আরব আমিরাত মানবিক দিক বিবেচনায় প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি ও তার পরিবারকে দেশে স্বাগত জানিয়েছে।'
এর কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ফেসবুকে ভিডিওবার্তার মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো জনসম্মুখে এলেন ঘানি।
ঘানি বলেন, "থেকে গেলে কাবুলে রক্তপাতের সাক্ষী হতে হতো আমাকে"।
"ক্ষমতার লড়াইয়ে কাবুলকে ইয়েমেন বা সিরিয়ায় পরিণত করা উচিত হবে না, তাই আমাকে চলে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। ওখানে থাকলে রক্তপাত ঘটতই"।
কাবুল থেকে হেলিকপ্টার ভর্তি নগদ টাকা নিয়ে ঘানির পালানোর যে অভিযোগ উঠেছে সেটিও উড়িয়ে দিয়েছেন ঘানি।
তিনি বলেন, "আমি শুধু একটি ওয়েস্টকোট এবং কিছু কাপড়চোপড় নিতে পেরেছিলাম। নগদ অর্থকড়ি নিয়ে পালিয়েছি- এসব বলে আমার ব্যক্তিত্বকে হীন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এসব অভিযোগ একেবারে মিথ্যা, এগুলোর কোনই ভিত্তি নেই। কেউ চাইলে কাস্টমসের কর্মকর্তাদের জিজ্ঞেস করে দেখতে পারে"।
এর আগে তাজিকিস্তানে আফগানিস্তানের রাষ্ট্রদূত দাবি করেন, হেলিকপ্টার ভর্তি করে নগদ ১৬৯ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ১ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা) নিয়ে দেশ থেকে পালিয়েছেন সাবেক আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি।
বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জহির আঘবার বলেন, ঘানি রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে ১৬৯ মিলিয়ন ডলার চুরি করেছেন; ঘানির এই প্রস্থানকে 'দেশ ও জাতির প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা' বলেও অভিহিত করেন মোহাম্মদ জহির।
ঘানি এবং তার সরকারের শীর্ষ নেতাদের অনুপস্থিতিতে দেশ দখল করে নিয়েছে তালেবান। সরকার গড়ার প্রস্তুতি চালাচ্ছে তারা। দেশের এমন পরিস্থিতিতে তালেবানের সঙ্গে সমঝোতায় এগিয়ে এসেছেন দেশের সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই। ঘানি বিরোধী আবদুল্লাহ আবদুল্লাহও তালেবানের সঙ্গে সমঝোতায় নেমেছেন।
আফগানবাসীর স্বার্থে তাদের এই উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছেন ঘানি। তিনি বলেন, ''আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ এবং প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের মধ্যস্থতায় সরকার গঠনের এই প্রয়াসে আমার সমর্থন রয়েছে। আমি চাই এই প্রয়াস সফল হোক"।
"আমি নিজেও আফগানিস্তানে ফিরতে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি যেন ন্যায়বিচার, প্রকৃত ইসলামিক মূল্যবোধ এবং জাতীয়তাবাদী মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠিত হয়"।
- সূত্র- আল জাজিরা