আইসিসির লভ্যাংশ: জিম্বাবুয়ে নয়, অস্ট্রেলিয়ার সমান অর্থ পায় বাংলাদেশ
আইসিসির লভ্যাংশের অনেক বড় ভাগ পায় বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই)। বর্তমান অর্থ চক্র থেকে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড সর্বোচ্চ ৪০৫ মিলিয়ন ডলার পাচ্ছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভাগ পায় ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)। ১৩৯ মিলিয়ন ডলার পাচ্ছে ইসিবি। এরপর সমান অর্থ পায় অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও নিউজিল্যান্ড।
আট বছরে একটি চক্র ধরা হয়। ২০১৬ থেকে ২০২৩ অর্থ চক্রে আইসিসির কাছ থেকে বাকি ছয় দলের সমান ১২৮ মিলিয়ন ডলার (১২ কোটি ৮০ লাখ ডলার; বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১১ শত কোটি) পাচ্ছে বাংলাদেশ। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ না হওয়ায় জিম্বাবুয়ে পরের ধাপের অর্থ পায়। এই অর্থ চক্রে জিম্বাবুয়ে পাচ্ছে ৯৪ মিলিয়ন ডলার।
যদিও বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের দাবি, আইসিসি থেকে জিম্বাবুয়ের সমান অর্থ পায় বাংলাদেশ এবং ২০২৩ সাল থেকে অস্ট্রেলিয়ার সমান লভ্যাংশ পাবে বাংলাদেশ। শনিবার বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতির (বিএসপিএ) এক অনুষ্ঠানে ক্রিকেটের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলতে গিয়ে এই তথ্য দেন বিসিবি সভাপতি।
আইসিসির লভ্যাংশ ভাগাভাগির সর্বশেষ মডেল অনুযায়ী বিসিবির সভাপতির দেওয়া এই তথ্য সঠিক নয়। ২০১৭ সালে লন্ডনে আইসিসির বার্ষিক সাধারণ সভায় অনুমোদন পাওয়া মডেলে প্রতিটি দেশের লভ্যাংশের পরিমাণ জানানো হয়। ২০১৭ সালে অনুমোদন পেলেও অর্থ চক্র ২০১৬ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত ধরা হয়। এই চক্রে সাতটি দল সমান ১২৮ মিলিয়ন ডলার করে পাচ্ছে।
চার বছর আগেই চূড়ান্ত হওয়া মডেলের বিষয়ে বিসিবি সভাপতির মন্তব্যে মনে হয়েছে, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন। নাজমুল হাসান বলেন, 'অনেকে মনে করে, বিসিবি এখন কতো টাকা পায়। কোত্থেকে টাকা পাবে, কীসের টাকা পাবে। আমার মনে আছে আইসিসি আগে যে অনুপাতে টাকা দিতো, সেই অনুপাতেই টাকা পায় এখনও।'
'হ্যাঁ, এটা বাড়বে সামনে। ২০২৩ সাল থেকে আমরা অনেক বেশি পাব। আমাদের এতোদিন যে অনুপাতে দিয়ে এসেছে, ওটা ঠিক না। আমি ওদের কাছে চ্যালেঞ্জ করেছিলাম, কিন্তু আট বছরের অর্থ চক্রে পড়ে গিয়েছে। ২০২৩ থেকে অস্ট্রেলিয়ার সমান টাকা পাবে বাংলাদেশ। আমাদের দিতো জিম্বাবুয়ের সমান, এতো বছর ধরে।' যোগ করেন বিসিবি সভাপতি।
বিসিবি সভাপতির এই মন্তব্যের সঙ্গে আইসিসির আর্থিক মডেলের একেবারেই মিল নেই। আইসিসি ও ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে সমঝোতার পর ২০১৭ সালে নতুন মডেল অনুমোদন পায়। চার বছর পর এসে নাজমুল হাসান ঠিক কোন দৃষ্টিকোণ থেকে এই 'ভুল' তথ্য দিয়েছেন, সেটা জানতে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও একই কথা বলেন।
দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বিসিবির প্রধান নির্বাহী বলেন, 'আমরা এখনও অস্ট্রেলিয়ার সমান হইনি। বিসিবি সভাপতি যেটা বলেছেন, নতুন অর্থ চক্রে আমরা কাছাকাছি বা সমান পাব। সবার ওপরে ভারত। এরপর ইংল্যান্ড এবং এরপর অস্ট্রেলিয়া। এই তিন দেশে আমাদের চেয়ে বেশি। এখন আমরা আট বছরে ১২৮ মিলিয়ন ডলার পাচ্ছি। ২০২৩ সাল থেকে বাড়বে।'
বিসিবি সভাপতি ও বিসিবির প্রধান নির্বাহী, দুজন একই তথ্য দিয়েছেন। দুজনেরই বক্তব্য, এখন অস্ট্রেলিয়ার সমান পাচ্ছে না বাংলাদেশ। ২০২৩ সাল থেকে অস্ট্রেলিয়ার সমান পাওয়া যাবে। যদিও আইসিসির সর্বশেষ আর্থিক মডেল থেকে ভিন্ন তথ্য পাওয়া গেছে।