ই-অরেঞ্জের গ্রাহকেরা তাদের ১৬ কোটি টাকা ফেরত চান
আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জে পণ্য ক্রয়ের জন্য বিনিয়োগ করা ৩৩ গ্রাহক তাদের ১৬ কোটি টাকা ফেরতের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেছেন।
হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় গত শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) এসব বিনিয়োগকারীর পক্ষে রিটটি দায়ের করা হয় বলে রবিবার সাংবাদিকদের জানান ভুক্তভুগীদের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
তিনি বলেন, বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে চলতি সপ্তাহে এ রিটের শুনানি হতে পারে।
রিট আবেদনে বাণিজ্য সচিব, অর্থ সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের প্রধান, সেন্ট্রাল ডিজিটাল কমার্স সেলের প্রধান, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক, ই-অরেঞ্জ শপের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ মোট ১৬ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।
এছাড়াও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বাংলাদেশে বিদ্যমান ১০০০ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের একটি তালিকাও যুক্ত করা হয়েছে।
শিশির মনির বলেন, রিটে ভুক্তভোগী গ্রাহকদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চাওয়ার পাশাপাশি গ্রাহক ও ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান উভয়ের স্বার্থ সংরক্ষণ ও সুষ্ঠু পরিচালনার নিমিত্তে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেওয়ার জন্য অর্থনীতিবিদ, তথ্য-প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ, ব্যবসায়ী ও স্বার্থ-সংশ্লিষ্টদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনের জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে।
এছাড়া ই-অরেঞ্জসহ অন্যান্য অরক্ষিত ও ঝুঁকিপূর্ণ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানসমূহে রিসিভার নিয়োগ, অরক্ষিত ও ঝুঁকিপূর্ণ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানসমূহের দায়িত্বশীল ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা প্রদানের আবেদন করা হয়েছে এতে। অরক্ষিত ও ঝুঁকিপূর্ণ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানসমূহ কর্তৃক মানি লন্ডারিং হয়েছে কিনা তা তদন্ত করতে আবেদন জানানো হয়েছে রিটে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯, প্রতিযোগিতা আইন-২০১২, জাতীয় ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা-২০১৮, ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা-২০২১ এর আলোকে ই-কমার্স কেলেঙ্কারি নজরদারি ও প্রতিরোধে এবং ভুক্তভোগী গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষায় বিবাদীদের ব্যর্থতা তুলে ধরা হয়েছে রিটে।
রিটকারীর আইনজীবী আরও বলেন, রিটে আবেদনকারী ৩৩ জন ভুক্তভোগী গ্রাহকের ১৬ কোটি টাকা মূল্যের ভাউচার এবং বিভিন্ন দ্রব্যের ক্রয়াদেশ সংযুক্ত করা হয়েছে। তারা নির্দিষ্ট সময়ের পরেও তাদের ক্রয়কৃত পণ্য বা তাদের টাকা বুঝে পাননি।
রিটকারকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন, দিনাজপুরের বিরামপুরের আব্দুল বারেক,যিনি ই-অরেঞ্জে পণ্য ক্রয়ের জন্য বিনিয়োগ করেন ৭০ লাখ টাকা। গুলশানের ওয়াহেদুল আলম বিনিয়োগ করেছেন ৪৭ লাখ টাকা। পাবনার চাটমোহরের আমিনুল ইসলাম দিয়েছেন ৪০ লাখ টাকা। তারা পণ্য বা টাকা ফেরত কোনোটিই পাননি তারা।