বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফুটবল ম্যাচ?
আজ রাতে পার্ক ডি প্রিন্সেসে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে প্যারিস সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি) এবং ম্যানচেস্টার সিটি। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন দুই ক্লাবের মধ্যকার এই ম্যাচকে ইতোমধ্যে 'বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফুটবল ম্যাচ' বলে আখ্যা দিয়েছে স্প্যানিশ পত্রিকা মার্কা।
অর্থকড়ির জন্য অনেক আগে থেকেই বিখ্যাত এই দুই ক্লাব। সাম্প্রতিক সময়ে সারা বিশ্বের তারকাদের সমন্বয়ে শক্তিশালী দুটি একাদশ গড়ে তুলতেও সক্ষম হয়েছে এই দুই দল।
দলবদল সংক্রান্ত ওয়েবসাইট ট্রান্সফারমার্কেটের তথ্য অনুসারে ম্যানচেস্টার সিটির বর্তমান দলের মোট মূল্যমান প্রায় ১০০ কোটি ইউরো (১০ হাজার কোটি টাকা) এবং পিএসজির ৯৯.৭২ কোটি ইউরো (৯ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা)।
দুই দলের বাজার মূল্যকে একত্র করলে প্রায় ২০০ কোটি ইউরো দাঁড়ায়। এই ম্যাচকে 'বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফুটবল ম্যাচ' আখ্যা দেওয়াটাকে তাই বাড়াবাড়ি বলার সুযোগ নেই। নিশ্চিতভাবেই এর আগে এতো এতো 'দামি' খেলোয়াড়দের একসাথে ফুটবল মাঠে দেখেনি বিশ্ব।
এই দুই দলের মূল্যমান এমনিতেই বাড়েনি। সাম্প্রতিক সময়ে খেলোয়াড় কেনায় এই দুই দলের মতো খরচ করেনি ইউরোপের অন্য কোনো ক্লাব।
গত দশ বছরে দলবদল বাজারে মোট ১৪২ কোটি মার্কিন ডলার (১২ হাজার কোটি টাকা) খরচ করেছে পিএসজি। আর ম্যান সিটি খরচ করেছে প্রায় ১৭০ কোটি মার্কিন ডলার (১৪.৫ হাজার কোটি টাকা)। এ সময়ে এই দুই দলের কাছাকাছি খরচও করেনি বিশ্বের অন্য কোনো ক্লাব।
বাম্পার গ্রীষ্মকালীন দলবদল
এই গ্রীষ্মেও দলবদলের বাজারে প্রচুর খরচ করেছে এই দুই ক্লাব। অ্যাস্টন ভিলা থেকে ১১.৭ কোটি ইউরোর বিনিময়ে জ্যাক গ্রিলিসকে দলে ভিড়িয়েছে সিটি। এটি এ মৌসুমের সবচেয়ে দামী দলবদল তো বটেই, যেকোনো ইংলিশ ফুটবলারের জন্যই এটি সর্বোচ্চ ট্রান্সফার ফি।
আর ওদিকে স্মরণকালের সবচেয়ে বাম্পার ট্রান্সফার উইন্ডো পার করেছে পিএসজি। এক গ্রীষ্মেই তারা দলে ভিড়িয়েছে আশরাফ হাকিমি, সার্জিও রামোস, জিয়ানলুইগি দোনারুমা, জর্জিনিয়ো ওয়াইনাল্ডামের মতো খেলোয়াড়দের। আর এদের সঙ্গে আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি লিওনেল মেসি তো আছেনই।
আক্রমণভাগে টাকার ছড়াছড়ি
ট্রান্সফারমার্কেটের তথ্য অনুযায়ী, লিওনেল মেসি, কিলিয়ান এমবাপ্পে ও নেইমারের সমন্বয়ে পিএসজির আক্রমণভাগের তিনজনের মূল্যমানই প্রায় ৩৪ কোটি ইউরো (৩.৪ হাজার কোটি টাকা)।
এমবাপ্পের দাম ধরা হয়েছে ১৬ কোটি ইউরো, নেইমারের ১০ কোটি ইউরো, এবং মেসির ৮ কোটি ইউরো। আনহেল দি মারিয়া, মাউরো ইকার্দিদের বিবেচনায় আনলে আক্রমণভাগের মোট বাজার মূল্য ৪০ কোটি ইউরোও ছাড়িয়ে যাবে।
ওদিকে সিটির আক্রমণভাগের মোট বাজার মূল্য আরও বেশি। কেভিন ডি ব্রুইনের ১০ কোটি ইউরো, রহিম স্টার্লিংয়ের ৯ কোটি ইউরো, ফিল ফোডেনের ৮ কোটি ইউরো, বার্নার্দো সিলভার ৭ কোটি ইউরো, জ্যাক গ্রিলিসের ৬.৫ কোটি ইউরো, গ্যাব্রিয়েল জেসুসের ৬ কোটি ইউরো, ফেরান তোরেসের ৫ কোটি ইউরো ও রিয়াদ মাহরেজের ৪.২ কোটি ইউরো। সর্বমোট ৫৫.৭ কোটি ইউরো।
অবশ্য পেপ গার্দিওলা ইউরোপের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসব প্রতিভাবান ও দামী ফুটবলারদের এনে আক্রমণভাগ ভরাট করলেও আজকের ম্যাচে এই তালিকার সিংহভাগ সদস্যকে দেখা যাবে সিটির বেঞ্চে।
'মেসি' ফ্যাক্টর
টাকার ঝনঝনানিকে ছাপিয়ে আজকের ম্যাচের মূল কেন্দ্রবিন্দু হয়তো হয়ে উঠবেন মেসিই। তবে এই ছয়বারের ব্যালন ডি'অরজয়ীকে কীভাবে ব্যবহার করবেন পিএসজি ম্যানেজার মাউরিসিও পচেত্তিনো, তা এখনও অনিশ্চিত।
ওদিকে প্রতিপক্ষের ম্যানেজার পেপ গার্দিওলার সঙ্গে মেসির দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত বার্সেলোনায় একসাথে সব রকমের শিরোপাই জিতেছেন এই যুগল।
সূত্র: মার্কা।