কোভিড প্রতিরোধে ভারত, পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বিশ্বের ৫৩টি দেশের মধ্যে পাঁচ ধাপ এগিয়ে ৩৯তম স্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা ব্লুমবার্গের সেপ্টেম্বর মাসের কোভিড রেজিলিয়েন্স র্যাঙ্কিং অনুযায়ী, বাংলাদেশ ১০০'র মধ্যে ৫৯.৬ স্কোর পেয়েছে, যেখানে ভারত পেয়েছে ৫৬.২, এবং পাকিস্তান ৫৬.১।
ব্লুমবার্গের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বিগত চার মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন দৈনিক মৃত্যুর রেকর্ড করায় এবং ৫০০ দিনেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় চালু করায় র্যাঙ্কিংয়ে এই বড় পরিবর্তন এসেছে।
কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার নিম্নমুখী হওয়ার ফলস্বরূপ রেজিলিয়েন্স র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ জুলাই মাসে ৪৮তম স্থান থেকে সেপ্টেম্বরে এসে ৪৪তম স্থানে উঠে এসেছিল।
এদিকে, ভারত এবং পাকিস্তান উভয়ই তিন ধাপ নিচে নেমে যথাক্রমে ৪৮তম এবং ৪৪তম স্থানে অবস্থান করছে।
এই তালিকায় শীর্ষে রয়েছে আয়ারল্যান্ড। করোনাকালীন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ভূমিকা রাখার জন্য আগস্টের পর তিন ধাপ এগিয়ে এখন সবার সামনে অবস্থান করছে এই ইউরোপীয় রাষ্ট্রটি।
আয়ারল্যান্ডে জনসংখ্যার ৭২.৫ শতাংশ ইতোমধ্যেই টিকা নিয়ে নিয়েছে, যা বিশ্বের সর্বোচ্চ টিকাদানের হারগুলোর মধ্যে একটি।
ব্লুমবার্গ ১২ টি তথ্য সূচকের উপর ভিত্তি করে অর্থনৈতিকভাবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ৫৩টি রাষ্ট্রকে নিয়ে এই র্যাঙ্কিং তৈরি করে। ১২টি সূচকের মধ্যে রয়েছে কোভিড -১৯ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ, স্বাস্থ্যসেবার মান, টিকার হার, সামগ্রিক মৃত্যুর হার, গত মাসের হিসাব, পুনরায় ভ্রমণ চালু করা এবং সীমান্তে নিষেধাজ্ঞা কমানোর মতো ব্যাপারগুলো।
ব্লুমবার্গের মতে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার মাত্র ১১.৯ শতাংশ সবে টিকা দ্বারা সুরক্ষিত হয়েছে।
রেজিলিয়েন্স র্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে থাকা সত্ত্বেও ভারত তাদের জনসংখ্যার ৩১.৩ শতাংশের জন্য টিকা নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছে, যা বাংলাদেশের দ্বিগুণেরও বেশি। পাকিস্তান টিকাদান করেছে তাদের জনসংখ্যার ১৮.৬ শতাংশকে।
এই র্যাঙ্কিং থেকে আরও জানা যায়, গত এক মাসে বাংলাদেশে প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে মাত্র ৪০ জনের মধ্যে করোনার সংক্রমণ ঘটেছে, যেটি ভারতে প্রতি লাখে ৭৩ ও পাকিস্তানে ৪২ জন।
তবে গত তিন মাসে বাংলাদেশে মৃত্যু-হার ছিল ২ শতাংশ, যা ভারতে ১.৫ শতাংশ এবং পাকিস্তানে ১.৯ শতাংশ।
মহামারীর শুরু থেকে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রতি ১০ লক্ষ মানুষের মধ্যে বাংলাদেশে ১৬৬ জন, ভারতে ৩২৪ জন, এবং পাকিস্তানে ১২৫ জন মারা গেছে।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে আরও উঠে এসেছে, বহির্বিশ্বে টিকা প্রেরণে বিশ্বের সবচেয়ে বড় দাতা দেশ হওয়া সত্ত্বেও র্যাঙ্কিংয়ে দুই ধাপ নেমে ২৮তম স্থানে অবস্থান করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তাদের এই অবনমনের পিছনে কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে অপরিকল্পিত স্বাভাবিকীকরণ, সংক্রমণ ও মৃত্যু হার বৃদ্ধি।
বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ৭ আগস্ট এবং ২৮ সেপ্টেম্বর দুটি গণটিকাদান কার্যক্রম চালিয়েছে।