কোভিড পরবর্তী জটিলতায় ভুগছে ৪০% রোগী: বিএসএমএমইউ গবেষণা
কোভিড নেগেটিভ হওয়ার তিন মাস পরেও ৪০ শতাংশ রোগী কাশি, শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, গন্ধ কম পাওয়াসহ বিভিন্ন ধরণের জটিলতায় ভুগছেন। বয়স্কদের মধ্যে এই সমস্যা সবচাইতে বেশি বলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) রেসপেরেটরি মেডিসিন ডিপার্টমেন্টের এক গবেষণায় উঠে এসেছে।
রোববার (৩ অক্টোবর) বিএসএমএমইউ এর রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগে 'পোস্ট কোভিড-১৯ পালমোনারি ফাইব্রোসিস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট' শীর্ষক সেমিনারে গবেষণার ফলাফল জানানো হয়।
গবেষণায় অংশগ্রহণকারী ৫০০ রোগীর মধ্যে ৬৮ শতাংশ পুরুষ এবং ৩২ শতাংশ মহিলা। গবেষণায় পোস্ট কোভিড রোগীদের নিয়মিত ফলোআপে থাকার উপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রেসপেরেটরি মেডিসিন ডিপার্টমেন্টোর ডা. মোঃ মিরাজুর রহমান, ডা. মোঃ আব্দুর রহিম, ডা. মোঃ আহাদ মুরশিদ।
সেমিনারে জানানো হয়, করোনা পরবর্তী অনেক রোগীর ফুসফুসের কার্যকারিতা ব্যাহত হওয়ায় রোগীর শরীরের রক্তে পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন পৌঁছায় না। রোগী এসময় অক্সিজেন স্বল্পতায় ভোগে। কাশি, শ্বাসকষ্টসহ নানা জটিলতা দেখা যায়। একে পালমোনারি ফাইব্রোসিস বলে।
এই রোগে ফুসফুসের নরম অংশগুলো নষ্ট হয়ে যায় এবং ক্ষতের সৃষ্টি হয়। এতে ফুসফুসের টিস্যু মোটা ও শক্ত হয়ে যায়, ফলে ফুসফুসে বাতাশের থলিগুলো ঠিকমতো কাজ করতে পারে না।
এজন্য করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী নেগেটিভ হওয়ার পরেও নিয়মিত ফলোআপে থাকা প্রয়োজন। যথাসময়ে যথাযথ চিকিৎসা না হলেও রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএসএমএমইউ এর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, পোস্ট কোভিড জটিলতা থেকে উত্তরণ ও মুক্তির উপায় খুঁজে পেতে চিকিৎসার পাশাপাশি গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় ফান্ডের ব্যবস্থা করতে কার্যকরী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
দেশের কোভিড -১৯ আক্রান্তের সংখ্যা এখন দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৫৭ হাজার ৯৬৪ জনে। এর মধ্যে ১৫ লাখ ১৮ হাজার ৭৫৪ জনকে মারণ ভাইরাস থেকে মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
#সাত মাস পর ২ দশমিক ৯ শতাংশ সংরক্রমণ হার
সাত মাস পর কোভিড শনাক্তের হার ৩ শতাংশের নিচে নেমে ২ দশমিক ৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। পরীক্ষার বিপরীতে পজিটিভ শনাক্তের এই হার রোববার সকাল আটটা পর্যন্ত বিগত ২৪ ঘণ্টায় এই অবস্থানে নেমে আসে।
এর আগে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সর্বশেষ ২ দশমিক ৮৭ শতাংশ ছিল পজিটিভ শনাক্তের হার।
গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ২১, ২৪৬টি নমুনা পরীক্ষার পর পড়তি শনাক্তের হার জানানো হয়।
একইসময়, কোভিডজনিত কারণে মৃতের সংখ্যা ১৮ জনে নেমেছে, এনিয়ে মোট মারা গেলেন ২৭ হাজার ৫৭৩ জন।
নতুন করে পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন আরও ৭১৭ জন।