ছাত্রীর সন্তানকে কোলে নিয়ে ক্লাস নিলেন শিক্ষক
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাল্য বিবাহের শিকার এক ছাত্রীর শিশু সন্তানকে কোলে নিয়ে ক্লাস নিয়েছেন পঙ্কজ মধু নামে এক শিক্ষক। রোববার (৩ অক্টোবর) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার চিনাইর অঞ্জুমানআরা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। সন্তানকে কোলে নিয়ে পাঠে মনোযোগী হতে না পারায় ছাত্রীর সুবিধার্থে তিনি শিশুটিকে কোলে নিয়ে ক্লাস করান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, করোনার সংক্রমণ রোধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করার পর অঞ্জুমানআরা উচ্চ বিদ্যালের দশম শ্রেণির ওই ছাত্রীর বিয়ে হয়ে যায়। এরপরই ওই স্কুলছাত্রী সন্তানের জন্ম দেয়। স্কুল খোলার পর ওই ছাত্রী স্কুলে না আসায় শিক্ষক পঙ্কজ মধু জানতে পারেন তার বিয়ে হয়ে গেছে। পরে তিনি ওই ছাত্রীকে স্কুলে আসার জন্য খবর পাঠান। রোববার সকালে ওই ছাত্রী স্কুলে আসে। তবে সন্তানের জন্য সে ক্লাসে মনোযোগ দিতে পারছিল না। সেজন্য শিক্ষক পঙ্কজ তার ছাত্রীর সন্তানকে নিজের কোলে নেন।
এ বিষয়ে শিক্ষক পঙ্কজ মধু বলেন, "করোনার কারণে স্কুল বন্ধ ঘোষণার পর দশম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে তার পরিবার বিয়ে দিয়ে দেয়। সম্প্রতি বিষয়টি জানার পর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। রোববার ওই ছাত্রী তার স্বামী ও সন্তানকে নিয়ে স্কুলে আসে। আমি ওই ছাত্রী ও তার স্বামীকে বুঝিয়ে বলি পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার জন্য। তখন সেই ছাত্রী তার কোলের শিশুকে নিয়ে ক্লাসরুমে বসে। কিন্তু কোলের শিশুর জন্য মনোযোগ দিতে না পারায় আমি শিশুটিকে কোলে নেই।"
চিনাইর অঞ্জুমানআরা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোশাররফ হোসেন জানান, "পঙ্কজ মধু শিক্ষক হিসেবে খুবই আন্তরিক। তিনি ষষ্ঠ শেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত ইংরেজি বিষয়ে পাঠদান করান। পুরো বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মুখে রয়েছে তার খ্যাতি।"