মোহাম্মদ আলির আঁকা বিরল স্কেচ ১ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি
প্রয়াত বক্সার মোহাম্মদ আলির আঁকা ছবি এবং স্কেচের একটি সংগ্রহ মঙ্গলবার নিউইয়র্কের বনহামস নিলাম ঘরে মোট ৯ লাখ ৪৫ হাজার ৫২৪ ডলারে বিক্রি হয়েছে।
নিলামে সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হয়েছে ১৯৭৮ সালে আঁকা "স্টিং লাইক এ বি" (Sting Like a Bee) নামের একটি স্কেচ। আলির এই কাজটির বিনিময় মূল্য দাঁড়ায় ৪ লাখ ২৫ হাজার ৩১২ ডলারে, যা এটির বিক্রয় পূর্ব অনুমান মূল্য ৪০ থেকে ৬০ হাজার ডলারের তুলনায় ছিল অনেক বেশি।
স্কেচটিতে একজন বিজয়ী আলিকে চিত্রিত করা হয়েছে, যিনি তার মাথার উপরে হাত নিয়ে একজন পরাজিত প্রতিপক্ষের সামনে নিজের বিজয় উদযাপন করছেন; এবং রেফারি বক্সিং রিং থেকে পালিয়ে যাচ্ছে।
সেখানে প্রতিপক্ষের মাথায় উপরে লেখা আছে, অর্থাৎ প্রতিপক্ষ বলছে, "রেফ, তিনি প্রজাপতির মতো ভেসে বেড়িয়েছেন এবং মৌমাছির মতোই দংশন করেছেন!"
আর এর জবাবে রেফারি বলছে, "হ্যাঁ, যদি আপনি বুদ্ধিমান হতেন তাহলে আপনিও আমার মতো পালাতেন।"
স্কেচ এবং এর কথাগুলো আলির সবচেয়ে বিখ্যাত একটি উক্তিকে ইঙ্গিত করে। তার সেই বিখ্যাত উক্তিটি ছিল অনেকটা এ রকম, "প্রজাপতির মতো ভেসে বেড়াও, মৌমাছির মতো দংশন করো; তোমার চোখ যা দেখতে পায় না, তোমার হাত তাতে আঘাত করতে পারে না"।
মাত্র ২২ বছর বয়সে যখন তিনি বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন সনি লিস্টনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে যাচ্ছিলেন, তখন তিনি এই কথাটি বলেছিলেন।
তার এই বাক্যটি প্রায়শই বক্সিং রিং-এ তার স্টাইল বর্ণনায় ব্যবহার করা হতো।
বনহামস নিলাম ঘরের পক্ষ থেকে বলা হয়, "অনেকের কাছেই এটি একটি নতুন খবর হতে পারে যে, আলি সারা জীবন একজন শিল্পী ছিলেন।"
"প্রথমে তার বাবা ক্যাসিয়াস ক্লে-এর হাতেই তার চিত্রাঙ্কনের হাতেখড়ি হয়; ক্লে ছিলেন একজন পেশাদার শিল্পী। বড় হওয়ার সাথে সাথে আলি তার অনানুষ্ঠানিক ছবি আঁকা চালিয়ে যেতে থাকেন এবং অবশেষে ক্রীড়া শিল্পী লেরয় নেইম্যানের কাছ থেকেও তিনি ছবি আঁকা শেখেন।"
"আলি সাধারণত তার কাছে অনুভূতিশীল, এমন বিষয়গুলোর ছবিই বেশি আঁকতেন; সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- বক্সিং, নাগরিক অধিকার, বিশ্বশান্তি এবং মানবতাবাদ।"
১৯৭৯ সালে আঁকা আলির আরেকটি কাজ, "আই লাভ ইউ আমেরিকা" শিরোনামের ছবিটি বিক্রি হয়েছে ১ লাখ ৫০ হাজার ৩১২ ডলারে। এই ছবিটিতে একটি লাল বর্ণের হৃদয় এবং আমেরিকান পতাকা এঁকেছেন তিনি।
তিনবারের হেভিওয়েট বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন এবং সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বক্সার হিসেবে বিবেচিত মোহাম্মদ আলি দীর্ঘ ৩২ বছর পার্কিনসন রোগের সঙ্গে লড়াই করে ২০১৬ সালে মৃত্যুবরণ করেন।