ঘরে ফিরতে চান যুক্তরাজ্যে আশ্রয় নেওয়া আফগান শরণার্থীরা
তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের সময় যেসব আফগান পরিবার ব্রিটেনে পালিয়ে এসেছিল, তাদের অনেকে এখন নিজ দেশে ফেরার আকুতি জানাচ্ছেন।
আফগানিস্তান থেকে মার্কিন ও ব্রিটিশ সেনা প্রত্যাহারের পর ব্রিটিশ সরকারের পুনর্বাসন প্রকল্প, 'অপারেশন ওয়ার্ম ওয়েলকাম'-এর অংশ হিসেবে কয়েক হাজার আফগান শরণার্থীকে নিজ দেশে আশ্রয় দিয়েছে যুক্তরাজ্য।
কিন্তু শরণার্থীদের জন্য এখনও পর্যাপ্ত বাড়িঘর নির্মাণ করতে পারেনি ব্রিটিশ সরকার। তাই জরুরি অবস্থায় হোটেলে ঠাঁই নিতে হয়েছে বহু আফগানকে।
সেপ্টেম্বরের মধ্যেই পুনর্বাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে ৪০০ মিলিয়ন পাউন্ড বরাদ্দ দেওয়া হলেও, কিছু আফগান পরিবারকে এখনও কয়েক মাস হোটেলেই থাকতে হবে বলে স্বীকার করেছেন যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা।
এদিকে কাবুল দখলের পর দুই মাস পেরিয়ে গেলেও, এখনও স্থায়ী বাসস্থান না পেয়ে ক্লান্ত ও বিরক্ত হয়ে পড়েছেন আফগানরা।
শরণার্থীদের চিকিৎসা সেবা দিতে কাজ করছেন , এমন একজন ডাক্তার দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, "আমার কিছু রোগীর সাথে কথা হয়েছে, যারা এখন আফগানিস্তানেই ফিরে যেতে চান। ৬৭ বছর বয়সী ওই রোগী আমাকে বলেন, আমি আর এসব সহ্য করতে পারছি না। হোটেলের এই ঘর থেকে আমাকে বেরোতে হবে। অন্য একজন বলেছেন, তিনি হোটেলে থাকা থেকে মুক্তি চান।"
ভাগ্যের ফেরে এই অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির শিকার হয়ে ওই দুই রোগী এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন যে তাদেরকে ওষুধ খাইয়ে শান্ত রাখতে হচ্ছে।
গত ১৩ আগস্ট থেকে মোট ১৫ হাজার মানুষকে আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে এনেছে যুক্তরাজ্য। এদের মধ্যে আট হাজার আফগান ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে কর্মরত ছিলেন।
আফগান পুনর্বাসন মন্ত্রী, ভিক্টোরিয়া অ্যাটকিনসকে 'অপারেশন ওয়ার্ম ওয়েলকাম'-এর সার্বিক তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। গেল আগস্টে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে আগত আফগান শরণার্থীদের সাথে সাক্ষাৎ করেন স্বরাষ্ট্র সচিব প্রীতি প্যাটেল।
যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, "যুক্তরাজ্যের সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ও দ্রুততর জরুরি উদ্ধারকাজে এরই মধ্যে ১৫ হাজারেরও বেশি মানুষকে আফগানিস্তান থেকে নিরাপদে সরিয়ে আনা হয়েছে। শরণার্থীদের হোটেলে রাখা একটা সাময়িক ব্যবস্থা। সকলের জন্য স্থায়ী বাসস্থান নির্মাণ করতে আমাদের কিছুটা সময় লাগবে। কিন্তু আমরা এ সমস্যা সমাধানে জরুরি ভিত্তিতে কাজ করছি।"
তিনি আরও বলেন, "যুক্তরাজ্যে যারা শরণার্থী হিসেবে এসেছেন, তাদের সবাইকে একটি সুন্দর ও সফল জীবন গড়তে সাহায্য করাই আমাদের লক্ষ্য। এই লক্ষ্য অর্জনে আমরা নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করছি। যুক্তরাজ্যের সব স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সাথে মিলে শরণার্থীদের হোটেলে থাকা, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা ও শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছি আমরা।"\
- সূত্র: ডেইলি মেইল