আইপিএল সম্প্রচার স্বত্বের দাম উঠতে পারে ৫ বিলিয়ন ডলার
বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই) আগামী পাঁচ বছর চক্রে (২০২১-২০২৭) আইপিএল সম্প্রচার স্বত্ব থেকে আয় করতে পারে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বৃহস্পতিবার প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়ার (পিটিআই) এক সংবাদে উঠে এসেছে এ তথ্য।
২০১৮ থেকে ২০২২ পর্যন্ত আইপিএলের বর্তমান পাঁচ বছর চক্রের সম্প্রচার স্বত্ব (টিভি ও ডিজিটাল) রয়েছে স্টার ইন্ডিয়ার কাছে। এই সম্প্রচার স্বত্বের মূল্যমান ১৬,৩৪৭ দশমিক ৫০ কোটি রুপি বা ২ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
কিন্তু বিসিসিআইয়ের সিদ্ধান্ত-গ্রহণ পর্যায়ের ব্যক্তিরা মনে করছেন, আগামী পাঁচ বছর চক্রে সম্প্রচার স্বত্বের মূল্য এমনকি দ্বিগুণেরও বেশি হতে পারে। সেক্ষেত্রে আইপিএলের আগামী পাঁচ বছর মেয়াদী সম্প্রচার স্বত্ব ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে আইপিএলে ৮টি দল অংশ নিলেও, ২০২২ মৌসুম থেকে অংশগ্রহণকারী দলের সংখ্যা দুটি বাড়বে। সেক্ষেত্রে আইপিএলের ম্যাচসংখ্যা সর্বোচ্চ ৭৪ পর্যন্ত হতে পারে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বর্তমানে আইপিএলের যে সম্প্রচার স্বত্ব রয়েছে, তা বৃদ্ধি পাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিসিসিআইয়ের একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা পিটিআইকে জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক একটি কোম্পানি আইপিএলের সম্প্রচার স্বত্বের জন্য বিড করতে আগ্রহী। তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেন, আগামী পাঁচ বছর মেয়াদে আইপিএলের সম্প্রচার স্বত্বের মূল্য ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি তো হবেই, এমনকি ৫ বিলিয়ন ডলার পর্যন্তও হতে পারে।
বিসিসিআইয়ের নীতিমালা অনুযায়ী, আইপিএলের যেকোনো ধরনের সম্পদ কিনতে আগ্রহী বিদেশি কোম্পানিগুলোর অবশ্যই ভারতীয় শাখা থাকতে হবে।
২০০৮ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত দশ বছরের মেয়াদে আইপিএলের সম্প্রচার স্বত্ব সনির কাছে থাকলেও, নতুন নিলামে টিভি ও ডিজিটাল মাধ্যম স্বত্ব ক্রয়ের দর হাঁকানোয় তাদেরকে অনায়াসে হারিয়ে দেয় স্টার ইন্ডিয়া।
সনির সর্বশেষ হাঁকানো সামগ্রিক দর ছিল ১১,০৫০ কোটি রুপি (১ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার)। অপরদিকে দ্য ওয়াল্ট ডিজনি কোম্পানি ইন্ডিয়ার মালিকানাধীন স্টারের হাঁকানো দর ছিল সনির চেয়ে ৫,৩০০ কোটি রুপি বেশি।
আগামী ২৫ অক্টোবর আইপিএলের নতুন দুটি দলের ঘোষণা দেওয়া হবে। ওই একই দিন বিসিসিআই দুইবাইয়ে টেন্ডার আমন্ত্রণ প্রকাশ করবে।
বিসিসিআই আশা করছে আইপিএলের সম্প্রচার স্বত্ব ক্রয়ের লড়াইয়ে আবারও যোগ দেবে স্টার ইন্ডিয়া ও সনি। আরও ধারণা করা হচ্ছে, সনি সর্বাত্মক চেষ্টা চালাবে আইপিএলের সম্প্রচার স্বত্ব ফিরে পেতে।
আইপিএল দলের বিড ডকুমেন্ট কিনেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মালিকপক্ষ গ্লেজার পরিবার
বিসিসিআইয়ের ওই শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা আরও নিশ্চিত করেছেন যে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মালিক পক্ষ গ্লেজার পরিবার ২০ অক্টোবর আইপিএলের নতুন দলের বিড ডকুমেন্ট তুলেছে।
"হ্যাঁ, গ্লেজাররা বিড ডকুমেন্ট তুলেছে। নিঃসন্দেহে আইপিএল বর্তমানে একটি আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত ক্রীড়া সম্পদ, তাই আন্তর্জাতিক ফার্মগুলোও এর ব্যাপারে আগ্রহী হবে।
"তারা শেষ পর্যন্ত বিড করবে কি না, নাকি তারা পরবর্তীতে কোনো আইপিএল দলের অংশীদারিত্ব কিনবে, তা আমরা জানি না।"
ওই কর্মকর্তা এক্ষেত্রে রেড বার্ড ক্যাপিটালসের উদাহরণ টানেন। যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক ওই ইনভেস্টমেন্ট ফার্মটি বর্তমানে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দল লিভারপুলের অন্যতম বিনিয়োগকারী। আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি রাজাস্থান রয়্যালসেরও ১৫ শতাংশ অংশীদারিত্ব রয়েছে তাদের দখলে।
আইপিএলের বিড ডকুমেন্ট তুলতে খরচ হয় ১০ লাখ রুপি। অনেক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও কর্পোরেট হাউজই ভবিষ্যতের ব্যবসায়িক সম্ভাবনা বিশ্লেষণ করার জন্য বিড ডকুমেন্ট কিনে থাকে।
বিসিসিআই আশা করছে, প্রতি দলের বিডিং থেকে তারা ৭,০০০ থেকে ১০,০০০ কোটি রুপি পর্যন্ত আয় করবে।
আইপিএলের নতুন দলের অন্যতম মালিক হচ্ছেন সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার?
গুজব শোনা যাচ্ছে, ভারতীয় ক্রিকেট দলের একজন বিশিষ্ট সাবেক ক্রিকেটার, যার ভারতের বিশ্বকাপ জয়েও অবদান রয়েছে, আইপিএলের একটি নতুন দলের ছোটখাট অংশীদারিত্ব কিনতে পারেন।
"হ্যাঁ, একজন খুবই জনপ্রিয় সাবেক ক্রিকেটার নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজির একটির অংশ হওয়ার সক্রিয় আগ্রহ দেখিয়েছে। তিনি নিজের অর্থ বিনিয়োগের মাধ্যমে কনসোর্টিয়ামের অংশ হতে চান।
"তিনি একজন মাইনরিটি স্টেকহোল্ডার হতে চান, তবে নিজের অভিজ্ঞতার সুবাদে তিনি দলের ক্রিকেটীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণেও হয়তো অবদান রাখতে চাইবেন। কোনো নতুন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এ ধরনের প্রস্তাবে সাড়া দেয় কি না, সেটিই এখন দেখার অপেক্ষা।"
- সূত্র: পিটিআই