অনুমোদনের চার বছর পর ঢাকা-আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ের অর্থায়ন নিশ্চিত
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় (একনেক) অনুমোদন পাওয়ার চার বছর পর ঢাকা–আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্পে চীনের অর্থায়ন নিশ্চিত হচ্ছে। এ প্রকল্পে চীনের এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে সরকারের গত মঙ্গলবার ঋণচুক্তি সই হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এর ফলে ঢাকার বিমানবন্দর থেকে আশুলিয়া পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে অর্থায়ন জটিলতা দূর হচ্ছে। চীনের এক্সিম ব্যাংকের ঋণ প্রক্রিয়াকরণে বিলম্ব হওয়ার কারণে এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ দীর্ঘ দিন ধরে ঝুলে আছে।
প্রেফারেনশিয়াল বায়ারস ক্রেডিট (পিবিসি) হিসেবে চায়না এক্সিম ব্যাংক ১১২৬.৯৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (৯,৪৭২.৭২ কোটি টাকার সমতুল্য) ঋণ প্রদান করবে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) অতিরিক্ত সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী বাংলাদেশের পক্ষে এবং চীনের এক্সিম ব্যাংকের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার ঝাং তিয়ানকিন চীনা সরকারের পক্ষে ঋণচুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
পিবিসি চুক্তিতে বার্ষিক সুদের হার ধরা হয়েছে ২ শতাংশ। ৫ বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ ঋণ পরিশোধের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০ বছর।
এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য ঢাকা-আশুলিয়া এলাকার যানজট নিরসন করা; প্রকল্পটি ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সাথে সংযুক্ত হবে।
এর বাস্তবায়ন সম্পন্ন হলে ঢাকার সঙ্গে ৩০টি জেলার সংযোগকারী আবদুল্লাহপুর-আশুলিয়া-বাইপাইল-চন্দ্রা রুটে যানজট অনেকাংশে কমে যাবে।
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির অনুমোদিত প্রকল্প প্রস্তাব অনুযায়ী, ঢাকা-আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ ২০১৭ সালের জুলাই থেকে শুরু হয়ে ২০২২ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ১৬,৯০১.৩২২১ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। ভূমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসনে গত জুন পর্যন্ত এ প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ১,২২৮ কোটি টাকা।
এই অবস্থায় এই এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ শেষ করতে ২০২৬ সাল পর্যন্ত সময় লাগবে বলে গত সেপ্টেম্বরে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বিমানবন্দর এলাকায় ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সংযোগ হবে বাস্তবায়নাধীন ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে। এর ফলে ঢাকা–চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের সঙ্গে ঢাকা-আশুলিয়া প্রকল্পের সংযোগ তৈরি হবে।
ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পটি নির্মিত হলে জিডিপিতে ০.২% প্রভাব ফেলবে বলে জানান সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা।
এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পটি সাভার, আশুলিয়া, নবীনগর ও ইপিজেড সংলগ্ন এলাকার যানজট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে যা উক্ত এলাকায় শিল্প বিকাশে আরো সহায়ক হবে বলে আশাবাদী সরকার।
এছাড়াও এক্সপ্রেসওয়েটি সাভার, ইপিজেড সংলগ্ন শিল্পাঞ্চল, ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ের সাথে সরাসরি সংযুক্ত হবে- এতে রপ্তানিযোগ্য পণ্য পরিবহন উল্লেখযোগ্য পরিমাণে দ্রুততর হবে বলে প্রকল্প প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে।