পরিবহন ধর্মঘট: ক্যান্সারে আক্রান্ত মমিন কুমিল্লা ফিরলেন পিকআপ ভ্যানে!
কুমিল্লার বুড়িচংয়ের বিক্রমপুরের আবদুল মমিন। গত ছয় মাস ধরে ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত তিনি।
২৬ অক্টোবর ঢাকার বক্ষব্যাধি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় মমিনকে। গতকাল শনিবার বিকেলে তিনি হাসপাতাল থেকে রিলিজ নেন। অ্যাম্বুলেন্সে বাড়ি যাবেন সে সামর্থ্য নেই। এদিকে বাসও বন্ধ। তাই বাধ্য হয়ে ১৭০০ টাকা দিয়ে পিকআপ ভাড়া নেন।
শনিবার বিকেলে ঢাকার দনিয়া এলাকায় দেখা হয় আবদুল মমিন, তার স্ত্রী ও ছেলের সাথে। মাছ বহনকারী পিকআপটির এক কোণে মাথা গুঁজে বসে আছেন মমিন। সাথে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া পুরোনো কাঁথা, বালিশ, তোশক আর টুকটাক জিনিসপত্র।
তার ছেলে ইউনুস মিয়া জানান, 'গাড়ি বা অ্যাম্বুলেন্স নেওয়ার সামর্থ্য নেই। বাসে ফিরলে একটু কম দামে আরামে ফিরতে পারতাম। মৃত্যু পথযাত্রী বাবার এমন কষ্ট সহ্য করা লাগত না।'
ইউনুস মিয়া আরও জানান, আমি গৃহস্থালির কাজ করে কোনোমতে জীবিকা নির্বাহ করি। বাকি দুই ভাইয়ের মধ্যে ছোটভাই সদ্য বিদেশ গেছে। বড় ভাইও কৃষক। ঘরভিটা ছাড়া আমাদের সম্পত্তি যা আছে, তা বন্ধক রেখে ভাইকে বিদেশ পাঠানোর খরচ বহন ও বাবার চিকিৎসা করাচ্ছি। আমাদের কষ্ট কেউ বোঝে না!
পিকআপের তীব্র ঝাঁকুনি আর বিকেল ও সন্ধ্যার হালকা ঠান্ডা বাতাসে আবোলতাবোল বকে চলেন আবদুল মমিন। কিন্তু সে শব্দ, আকুতি কারও কানে স্পষ্ট পৌঁছায় না!
তিনদিনের পরিবহন ধর্মঘটে শুধু আবদুল মমিনরা নয়, অসংখ্য চাকরিপ্রার্থী তরুণ-তরুণী, রোগী, চাকরিজীবী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার্থীরা পড়েছেন নিদারুণ কষ্টে। দূরযাত্রায় বেশি ভাড়ার সাথে বেশি ভোগান্তি তাদের সঙ্গী।