অতি উচ্চ পরিবেশগত হুমকিতে রয়েছে বাংলাদেশ
অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড পিস-এর (আইইপি) প্রস্তুত করা দ্বিতীয় ইকোলজিক্যাল থ্রেট রিপোর্টে (ইটিআর) বলা হয়েছে, বাংলাদেশ পরিবেশগত হুমকির জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি।
১৭৮টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৬৩তম। বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকির নাম প্রাকৃতিক দুর্যোগ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে, এমন দশটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি বিপর্যয়কর পরিবেশগত হুমকির মুখে রয়েছে। ২০০৭ সালের ঘূর্ণিঝড় সিডরে ৩ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয় বলে ধারণা করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে বাংলাদেশ।
প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে খাদ্য ঝুঁকি, পানি ঝুঁকি, দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি, তাপমাত্রার অসঙ্গতি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিশ্লেষণ করে ।
তিনটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ সূচক স্কোর পেয়েছে—পানি, খাদ্য ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি। এখানে স্কোর যত বেশি, হুমকির তীব্রতাও তত বেশি।
ক্ষয়ক্ষতি সীমিত করার জন্য উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টা না করা হলে পরিবেশগত হুমকি ব্যাপক সংঘর্ষ ও ব্যাপক অভিবাসনের দিকে ঠেলে দেবে বলে মন্তব্য করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
দক্ষিণ এশিয়া সবচেয়ে ঝুঁকিতে
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরিবেশগত ঝুঁকিতে সবচেয়ে খারপ অবস্থানে আছে দক্ষিণ এশিয়া। এ অঞ্চলে পানি ও খাদ্যের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। এর ফলে দক্ষিণ এশিয়ায় ৮৫০ মানুষ বা জনসংখ্যার ৩৩ শতাংশ মাঝারি থেকে গুরুতর খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
এই অঞ্চলের প্রাকৃতিক দুর্যোগ-প্রবণতাও বেশি। এর ফলে অন্যান্য পরিবেশগত হুমকি, বিশেষ করে সম্পদের অভাবকে বেড়ে যায়।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে বার্ষিক বন্যার ফলে মানুষের জীবন, কৃষি উৎপাদন ও ব্যক্তিগত সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষতি হয়।
প্রতিবেদনে আফগানিস্তানের সামগ্রিক স্কোর সর্বোচ্চ। দেশটির অবস্থান সবার নিচে (১৭৮ তম)। আফগানিস্তানের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ জনসংখ্যা ২০২০ সালে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিল। ২০২১ সালে তালেবানের ক্ষমতায় ফেরার এই পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে মন্তব্য করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে ভুটান।। দেশটির অবস্থান ৮১তম। এর পরেই আছে শ্রীলঙ্কা (১১৪তম) ও ভারত (১৪৪তম)।
সর্বনিম্ন দশ দেশের একটি পাকিস্তান। ১৭৮টি দেশের মধ্যে পাকিস্তানের অবস্থান ১৭০তম।
প্রতিবেদনে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, ২০৫০ সালের মধ্যে ৪৭০ কোটি মানুষ উচ্চ ও চরম পরিবেশগত হুমকির দেশগুলোতে বসবাস করবে, যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪৯ শতাংশ।