চিবলের ‘না বলা গল্প’ নিয়ে বইমেলায় ‘সাংমা অন আ হুইলচেয়ার’
পায়ে হেঁটে পথচলাটা শৈশবেই থমকে গেলেও জীবনের পথচলা কখনো থামাতে পারেনি চিবলকে। জীবনের সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে দুহাতে ঠেলে দিয়ে নিজের কাজটাই বারবার করে গিয়েছেন ২৪ বছর বয়সী এ তরুণ। ফলে তিনি সবার মধ্যমণি। সবার আদরের, ভালোবাসার চিবল।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী যোশীয় সাংমা চিবল থাকেন জগন্নাথ হলে। ২৮ বছরের অচলায়তন ভেঙ্গে গত বছরের মার্চে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) যে নির্বাচন হয়েছিল, তাতে সকল পদের বিপরীতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।
হুইলচেয়ারে বসে বিশ্ববিদ্যালয়ের এ মাথা থেকে ও মাথা চষে বেড়ানো সেই চিবলের জীবনের গল্প এবার উঠে এসেছে একটি বইয়ে। তাকে নিয়ে বইটি লিখেছেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশি অধিকারকর্মী সুমনা চিসিম। চিবলের জীবনী নিয়ে লেখা এই বইয়ের নাম দেওয়া হয়েছে 'সাংমা অন আ হুইলচেয়ার- আ বায়োগ্রাফি অব চিবল সাংমা'।
বুধবার অমর একুশে বইমেলায় বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়। বইটি পাওয়া যাচ্ছে লিটল ম্যাগ চত্বরের থকবিরিম প্রকাশন এর স্টলে।
নিজের জীবনীর বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র চিবল জানান, তার শৈশব থেকে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের এই যাত্রা, এতোদূর এগিয়ে আসার পেছনে নানা সংগ্রাম ও অনেক 'না বলা গল্প' উঠে এসেছে বইটিতে।
দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে তিনি বলেন, "বইটির লেখক যিনি তিনি সম্পর্কে আমার আম্বি (দিদিমা)। গত বছরের ঠিক এই সময়টায় সদ্য নমিনেশন পাওয়া আমি ক্যাম্পাস ঘুরে ঘুরে সারাদিন নির্বাচনী ক্যাম্পেইন করে বেড়াচ্ছি। মেলার একদিন হঠাৎ তিনি আমাকে বললেন 'চিবল তোমাকে নিয়ে আমি একটি বই লিখতে চাই। বইটি হবে তোমার জীবনী'। অভিজ্ঞতা এবং অর্জনে নগন্য একজন হিসেবে কথাটি শুনে প্রথমে থতমত খেলেও মনে একপ্রকার আনন্দ ছিল নিজের গল্পটি একজন লেখকের লেখনির মাধ্যমে বলতে পারবো এই ভেবে।"
"গত একবছর তিনি (সুমনা চিসিম) আমার শৈশব থেকে বেড়ে উঠা আজকের এই আমি কে তুলে ধরার জন্য আমার জন্মস্থান থেকে শুরু করে আমার স্মৃতির স্কুলগুলোর প্রায় সবটাই ঘুরে বেড়িয়েছেন। এমনকি আমার সমাবর্তনের দিনটিতেও আমার পাশে থেকেছেন। আমাকে আরও বোঝার জন্য আমাকে দেখা মানুষদের সঙ্গেও কথা বলেছেন।"
চিবল বলেন, "বইটির শুরুতেই উৎসর্গের পাতায় প্রথমেই রয়েছে আমার মা বাবার নাম। বইটির নামকরণ করা হয়েছে 'সাংমা' যা আমার জাতিগত পরিচয় এবং 'হুইলচেয়ার' যেটি আমার জীবন এবং চলার সঙ্গে অঙ্গাঅঙ্গীভাবে জড়িত।"