ভুল বোঝাবুঝির বিপিএল
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) আরেক নাম যেন 'বিতর্ক'। প্রতি আসরেই থাকে বিতর্কের ছড়াছড়ি। মাঠের লড়াইয়ের চেয়ে অসংলগ্ন কর্মকাণ্ডের কারণেই বেশি আলোচিত থাকে ঘরের মাঠের এই টি-টোয়েন্টি আসরটি। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। অধিনায়ক বদলানো নিয়ে মেহেদী হাসান মিরাজ-চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের মধ্যে গত রোববার দিনভর নাটক চলে।
দীর্ঘ আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতা হওয়ার পর দুই পক্ষ জানায়, ভুল বোঝাবুঝির কারণে এমন হয়েছে। মিরাজের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে আলোচনায় তাসকিন আহমেদ ও সিলেট সানরাইজার্স ফ্র্যাঞ্চাইজির মধ্যকার দ্বন্দ্বের বিষয়টি। মিরাজের ঘটনার মতো এখানেও হস্তক্ষেপ করেছে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল, হয়েছে সমাধান। এই ঘটনার নেপথ্যেও থাকলো ভুল বোঝাবুঝি। মিটমাট হওয়ার পর এমনই জানিয়েছেন তাসকিন।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দল নিউজিল্যান্ডে থাকতেই সরাসরি চুক্তিতে তাসকিনকে দলে ভেড়ায় সিলেট সানরাইজার্স। চুক্তি অনুযায়ি ডানহাতি এই পেসারকে আগেই ৭০ শতাংশ পারিশ্রমিক পরিশোধ করেছে সিলেট। টুর্নামেন্ট চলাকালীনই বাকি ৩০ শতাংশ পারিশ্রমিক দাবি করেন তাসকিন। বিপিএলের নিয়ম অনুযায়ী এই ৩০ শতাংশ পারিশ্রমিক শোধ করতে টুর্নামেন্ট শেষ হওয়া পর্যন্ত সময় নিতে পারবে ফ্র্যাঞ্চাইজি। কিন্তু তাসকিন জোরাজুরি করায় ঝামেলার তৈরি হয়।
পারিশ্রমিকের প্রক্রিয়া জানা ছিল না বলে ভুল বোঝাবুঝির তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাসকিন। সরাসরি চুক্তির কারণে আগেই পুরো পারিশ্রমিক পাওয়ার আশায় ছিলেন তিনি। মঙ্গলবার এ নিয়ে সিলেট পেসার বলেন, 'জয় ভাইয়ের (শেখ কুদরত ই ইবতিয়াজ জয়, সিলেট ফ্র্যাঞ্চাইজির সত্ত্বাধিকারী) সাথে আমার তেমন কিছুই হয়নি। কোনো দ্বন্দ্ব বা অন্য কিছুই না। এটা পুরোটাই ভুল বোঝাবুঝি ছিলো। আমি ভেবেছিলাম আমার পারিশ্রমিক খেলার আগেই পরিশোধ হবে। একটা প্রক্রিয়া আছে, সেটা অনুযায়ী পরিশোধ হবে। এখানেই ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। এটা আসলে কোনো দ্বন্দ্বের বিষয় নয়।'
যোগাযোগের ঘাটতির কারণে এমন হয়েছে জানিয়ে তাসকিন আরও বলেন, 'বায়ো বাবলের কারণে মালিকপক্ষ অনেক সময় হোটেলে থাকেন না। জয় ভাই খুবই অমায়িক মানুষ। তার সাথে আমাদের সবার বোঝাপড়া অত্যন্ত ভালো। শুধু যোগাযোগের ঘাটতির কারণে এমন হয়েছ। আমি ভাইয়াকে কয়েক বার ফোন করেছিলাম। হয়তো কোনো কারনে মিস করেছেন। উনি ব্যস্ত থাকায় উত্তর দিতে দেরি করেছেন। পরে আমার সাথে কথা হয়েছে, নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুযায়ী পারিশ্রমিক পরিশোধ হবে।'
সরাসরি চুক্তিবদ্ধ হওয়ায়ি পারিশ্রমিক প্রক্রিয়া নিয়ে ভুল ধারণা তৈরি হয়েছিল বলে জানান তাসকিন। তিনি বলেন, 'আমি ভেবেছিলাম, আমি যেহেতু সরাসরি চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটার, টুর্নামেন্ট শেষ হওয়ার আগেই আমার পারিশ্রমিক পরিশোধ হবে। এটা আসলে আমি জানতাম না। সবকিছু ঠিকই আছে। আমাদের মধ্যে কোনো বিবেধ তৈরি হয়নি। বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল থেকেও বলা হয়েছে, নিয়ম অনুযায়ি টাকাটা আমি পাব।'
তাসকিন-ফ্র্যাঞ্চাইজির বিষয়টি নিয়ে আগের দিন বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইসমাইল হায়দার মল্লিক বলেছিলেন, 'একটা নির্দিষ্ট অঙ্কে একজন খেলোয়াড়ের সঙ্গে ফ্রাঞ্চাইজির সরাসরি চুক্তি হয়েছিল। চুক্তির ৭০ ভাগ টাকা ফ্র্যাঞ্চাইজি দিয়েও দিয়েছে। ফ্র্যাঞ্চাইজি আমাদের জানায়, ওই খেলোয়াড় এখনই পুরো টাকা চাচ্ছে। আমি নিজে মালিকের সঙ্গে কথা বলেছি। ৭০ ভাগ টাকা পাওয়ার পরও ওই খেলোয়াড় চাপ দিচ্ছে। সে ফোন ধরেনি। খেলোয়াড় তাকে বলছে, পুরো টাকা না পেলে সে খেলবে না। যদিও বিষয়টি সমাধান হয়ে গেছে।'