মুস্তাফিজ জাদুর পর ইমরুল-লিটন শো, দাপুটে জয়ে শীর্ষে কুমিল্লা
এক ম্যাচেই কতোই না উত্থান-পতন! দুঃস্বপ্নের শুরুর পরও ইনিংস গুছিয়ে নিয়ে ১২.৫ ওভারে ১০০ ছাড়িয়ে যায় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। কিন্তু বৃষ্টির হানায় সেই ধারায় থাকা হলো না, আগুন ঝরা বোলিংয়ে চট্টগ্রামের ইনিংস বড় হতে দিলেন না ম্যাচসেরা মুস্তাফিজুর রহমান। বৃষ্টি আইনে ১৮ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে পরে ব্যাট হাতে শাসন করলেন ইমরুল কায়েস ও লিটন কুমার দাস। তাদের ব্যাটে চট্টগ্রামকে বড় ব্যবধানে হারালো কুমিল্লা।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ৫ ম্যাচে ৪ জয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার শীর্ষে ফিরল বিপিএলের দুইবারের চ্যাম্পিয়নরা। টানা তিন ম্যাচে হারা চট্টগ্রাম ৮ ম্যাচে ৩ জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার পাঁচ নম্বরে আছে চট্টগ্রাম।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামে চট্টগ্রাম। উইল জ্যাকস ঝড়ো ব্যাটিং করলেও শেষ দিকে দারুণ বোলিংয়ে বিপিএলে প্রথমবারের মতো ৫ উইকেট নেওয়া মুস্তাফিজের তোপে ১৮ ওভারে ৮ উইকেটে ১৩৮ রান তোলে তারা। বৃষ্টি আইনে কুমিল্লার লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৪৪। যা লিটন কুমার দাস ও অধিনায়ক ইমরুল কায়েসের অসাধারণ ব্যাটিংয়ে ১৬.৩ ওভারে এক উইকেট হারিয়েই ছাড়িয়ে যায় কুমিল্লা।
জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতে কিছুটা ধুঁকছিলেন ইমরুল-লিটন। তবে চতুর্থ ওভার থেকে শুরু হয় তাদের ব্যাটিং শো। অসাধারণ সব শটে দলের রান বাড়িয়ে নিতে থাকেন দুজন। তারাই শেষ করে আসতে পারতেন। কিন্তু এক রান বাকি থাকতে আউট হন লিটন। ১৬.১ ওভারে ১৩৮ রানের জুটি গড়েন ইমরুল লিটন।
শেষ বেলায় আউট হওয়ার আগে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৫৩ রান করেন লিটন। চলতি বিপিএলে এটা তার প্রথম হাফ সেঞ্চুরি। চট্টগ্রাম পর্ব দিয়ে এবারের বিপিএল শুরু করা লিটন আগের দুই ম্যাচে ৪৭ ও ০ রান করেন তিনি। নেতার মতো খেলেছেন ইমরুল। বাঁহাতি এই ওপেনার ৬২ বলে ৬টি চারও ৫টি ছক্কায় ৮১ রানে অপরাজিত থাকেন। কুমিল্লার যাওয়া একমাত্র উইকেটটি নেন চট্টগ্রামের পেসার মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নামা চট্টগ্রাম শুরুতেই হোঁচট খায়। ইনিংসের তৃতীয় বলেই ফিরে যান ওপেনার চ্যাডউইক ওয়ালটন। উইকেট হারানোর আঘাত সামলে ইনিংস গুছিয়ে নেন আরেক ওপেনার উইল জ্যাকস ও আফিফ হোসেন ধ্রুব। এ দুজন ৬২ রানের জুটি গড়েন।
অষ্টম ওভারে কুমিল্লাকে ব্রেক থ্রু এনে দেন তানভীর ইসলাম। তার নিচু হয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে বোল্ড হন আফিফ। ফেরার আগে আফিফের ২৭ বলে ৪টি চারে ২৭ রান করেন তিনি। এরপর শামীম হোসেন পাটোয়ারীকে নিয়ে আরেকটি জুটি জমান জ্যাকস। এদের ব্যাটে দ্বাদশ ওভারে চট্টগ্রামের সংগ্রহ ১০০ পেরিয়ে যায়।
এর আগেই ৩১ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন জ্যাকস। চলতি বিপিএলে ইংলিশ এই ব্যাটসম্যানের এটা তৃতীয় হাফ সেঞ্চুরি। চট্টগ্রামের ইনিংসের ১২.৫ ওভারের পর মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। তখন তাদের সংগ্রহ ছিল ২ উইকেটে ১০৭ রান। বৃষ্টির কারণে খেলা বন্ধ থাকে এক ঘণ্টা চার মিনিট। সময় নষ্ট হওয়ায় ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমে আসে ১৮ ওভারে।
বৃষ্টি শেষে খেলা শুরু হওয়ার পর আগের মতো আর ব্যাটিং করতে পারেনি চট্টগ্রাম। মুস্তাফিজের তোপে পড়ে সংগ্রহ বড় করতে পারেনি তারা। ১৪তম ওভারে জ্যাকস ও শামীমকে আউট করেন মুস্তাফিজ। ২২ বলে ৪টি চারে ২৬ রান করে থামেন শামীম। দুই বল পর সাজঘরে ফেরেন জ্যাকস। ৩৭ বলে ৫টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৫৭ রান করেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।
আগুন ঝরা বোলিংয়ে ৪ ওভারে ২২ রান খরচায় ৫টি উইকেট নেন ম্যাচসেরা মুস্তাফিজ। বিপিএলে প্রথমবারের মতো ৫ উইকেটের স্বাদ নিলেন তিনি। তবে টি-টোয়েন্টিতে এটা তার তৃতীয় ৫ উইকেট। কুমিল্লার দুই স্পিনার নাহিদুল ইসলাম ও তানভীর ইসলাম একটি করে উইকেট নেন।