কর্পোরেটদের শখ: তায়কোয়ান্দো ও ভ্রমণে নিজেকে খুঁজে পান ইমরান হাসান
কোনো একটি প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ পদে থাকা মানেই মাথার উপরে গুরুদায়িত্ব ও কর্তব্যের চাপ। উচ্চপদে আসীন কর্পোরেট কার্যনির্বাহীরা যে সবসময়ই ব্যস্ত থাকেন, সেকথা আমাদের সবারই জানা। কিন্তু তার মানে এই নয় যে তাদের ব্যক্তিগত জীবন বলে কিছু নেই এবং তাদের কোনো শখ বা ইচ্ছা নেই!
কর্মজীবনের বাইরেও যদি কোনো দারুণ শখ থাকে, তা আমাদের মধ্যে আরও দক্ষতা এবং প্যাশন তৈরি করে। বিভিন্ন কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের কার্যনির্বাহীদের মধ্যে যাদের বিশেষ কোনো শখ থাকে, তারা অন্যদের চাইতে বেশি হাসিখুশি থাকেন এবং কাজের ব্যস্ততাকে তখন আর চাপ মনে হয়না। শুধু তাই নয়, শখ পূরণের মাধ্যমে যে দক্ষতা অর্জন করা যায় তা পেশাদারি জীবনেও কাজে লাগে।
শান্তা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের প্রধান কার্যনির্বাহী কর্মকর্তা ও কর্পোরেট লীডার ইমরান হাসানের কাছে জানতে চেয়েছিলাম তার শখ বা অবসর কাটানোর উপায় সম্পর্কে। তিনি আমাদের জানিয়েছেন কর্মক্ষেত্রের বাইরে বিভিন্ন বিষয়ে নিজের আগ্রহের কথা; জানিয়েছেন কিভাবে এসব শখ তাকে আরও কার্যক্ষম করে তুলছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো, তার মতে, এসব শখ তাকে সিনিয়র পদে দায়িত্ব পালনের চাপ থেকে প্রশান্তি দেয় এবং কর্মজীবনে ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। ইমরান হাসানের নিজের ভাষায়ই জানা যাক তার শখের দুনিয়ার কথা।
ইমরান হাসান
প্রধান কার্যনির্বাহী কর্মকর্তা, শান্তা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড
কর্মক্ষেত্রের বাইরেও আমার অনেক শখ এবং আগ্রহের জায়গা আছে। এর মধ্যে ভ্রমণ, তায়কোয়ান্দো, ওয়েট-লিফটিং (ভারোত্তলন), সিনেমা দেখা এবং বই পড়ার কথা বিশেষভাবে বলতেই হয়।
আমার শারীরিক সক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ করে এমন কোনো একটা চর্চা না করতে পারলে আমার দিনটাই অসম্পূর্ণ মনে হয়। সে কারণেই তায়কোয়ান্দো শিখছি এবং তায়কোয়ান্দো ক্লাবের উত্তেজনাকর সেশনগুলোও আমি খুব উপভোগ করি।
এর বাইরে, আমার মেয়ের সঙ্গে বসে সিনেমা দেখাও আমার অবসর যাপনের অন্যতম উপায়। প্রতি সপ্তাহান্তে আমরা একসাথে বসে সিনেমা দেখি। ভ্রমণ করতেও আমার খুব ভালো লাগে; অনেকবার আমি সলো ট্রাভেলে (একা ভ্রমণ) গিয়েছি।
আমি এটা জোর দিয়ে বিশ্বাস করি যে, শখ একজন মানুষকে আরও উৎপাদনশীল করে তোলে এবং সবারই কিছু না কিছু শখ থাকা উচিত। তায়কোয়ান্দো চর্চা আমাকে শারীরিকভাবে ফিট থাকতে এবং হাই-এনার্জি লেভেল বজায় রাখতে সাহায্য করে।
নিজেকে কার্যক্ষম করে তোলার সাথে দুশ্চিন্তা কম থাকা, হাই এনার্জি লেভেল এবং নিত্যনতুন দক্ষতা অর্জনের সম্পর্ক রয়েছে। কোনো শখ থাকার উপকার হলো এটা আপনার দুশ্চিন্তা কমাতে সাহায্য করবে।
মাঝেমাঝে সারাদিনের কর্মব্যস্ততার পর আবার তায়কোয়ান্দো চর্চা করাটা একটু বেশিই চাপ মনে হয়। কিন্তু একবার যখন আমি ক্লাসে ঢুকে যাই এবং সেশন শুরু হয়, তখন যেন একেবারে চার্জড আপ হয়ে বের হই। ওই মুহূর্তে মনে হয় পূর্ণ এনার্জি নিয়ে আমার দিন শুরু হলো মাত্র।
অন্যদিকে, গৎবাঁধা জীবন থেকে একটু বিরতি নিতে চাইলে ভ্রমণ করি আমি। এটা অনেকটা নিজেকে রিস্টার্ট দেওয়ার মতো। আমার সবগুলো শখই আমাকে আগামীকাল কী হবে সেই দুশ্চিন্তা না করে বরং বর্তমানের উপর মনোযোগ দিতে সাহায্য করে।
সবগুলো শখ থেকেই কোনো না কোনো উপকার পাই। তায়েকোয়ান্দো এবং নিয়মিত ব্যয়াম আমাকে লক্ষ্যস্থির থাকতে, শৃঙ্খলা ও ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে শিখিয়েছে।
ভ্রমণ আমার দূরদর্শিতা বাড়াতে সাহায্য করে যা বই পড়ে অর্জন করা সম্ভব নয়। তবে বিভিন্ন বিষয়ের উপর বই পড়ার মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বা কাজের বাইরেও জ্ঞান অর্জন করা যায়।