২১০০ সালের মধ্যে হারিয়ে যাবে বিশ্বের অর্ধেক সমুদ্র সৈকত
গবেষকরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উত্থানের ফলে ২১০০ সাল নাগাদ হারিয়ে যাবে বিশ্বের অর্ধেকের বেশি সমুদ্র সৈকত।
আর মানবজাতি দয়ালু হয়ে যদি জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো বন্ধও করে দেয়, তবু এসময়ের মধ্যে পৃথিবীর এক তৃতীয়াংশেরও বেশি বেলাভূমি তলিয়ে যাবে। এতে করে পঙ্গু হয়ে যাবে উপকূলীয় দেশগুলোর পর্যটন শিল্প।
সোমবার নেচার ক্লাইমেট জার্নালের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়।
আর শুধু ভ্রমণই নয়, বালুকাময় সৈকতগুলো প্রায়শই উপকূলীয় ঝড় আর বন্যার হাত থেকে রক্ষা করে সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চলগুলোকে। এই সৈকতগুলো ছাড়া চরম আবহাওয়ার প্রভাব সম্ভবত আরও বেশি হবে। এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব তথ্য জানান ইউরোপীয় কমিশনের যৌথ গবেষণা কেন্দ্রের গবেষক মাইকেলালিস ভাসডোকাস।
আর এই পরিস্থিতির জন্য আমাদের প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কিছু দেশ এরই মধ্যে ব্যাপক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পরিকল্পনা করছে। তবে বেশিরভাগ দেশেই এ জাতীয় বৃহৎ ইঞ্জিনিয়ারিং স্কিমগুলি বাস্তবায়নযোগ্য নয়।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, আগামী ৮০ বছরে প্রায় ১৫ হাজার কিলোমিটার (৯ হাজার মাইলেরও বেশি) সাদাবালির সৈকত উপকূলরেখা তলিয়ে যাবে। এই তালিকার প্রথমেই আছে অস্ট্রেলিয়া, আর তারপরেই আছে কানাডা, চিলি আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
এক্ষেত্রে ঝুঁকির তালিকায় থাকা প্রথম ১০টি দেশের মধ্যে আছে মেক্সিকো, চীন, রাশিয়া, আর্জেন্টিনা, ভারত এবং ব্রাজিল।
কত দ্রুত এবং কত সৈকত অদৃশ্য হয়ে যেতে পারে তা নির্ধারণ করতে ১৯৮৪ সাল থেকে তিন দশক ধরে স্যাটেলাইটের ছবি পর্যবেক্ষণ করছেন ভাসডোকা আর তার সহকর্মীরা।
এই পর্যবেক্ষণ থেকে, তারা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ভবিষ্যতে দুই ধরণের ক্ষতির বিষয় অনুমান করেন।
সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি হতে পারে- আরসিপি ৮.৫ পথ অনুসরণ করে কার্বন নিঃসরণ নিরবচ্ছিন্নভাবে চলতে থাকবে। এতে করে জমে থাকা বরফ বা পার্মাফ্রস্ট গলে পৃথিবী নিজেই বায়ুমণ্ডলীয় গ্রিনহাউস গ্যাসের ঘনত্ব বাড়িয়ে তুলবে।
এর ফলে ২১০০ সাল নাগাদ বিশ্বের অর্ধেক সৈকত সমুদ্রে তলিয়ে যাবে।
আরসিপি ৪.৫ নামে আরেকটি কম ভয়াবহ দৃশ্যের কথা বলে দলটি। পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়ে যাবে প্রায় ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তিতে ডাকা '২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের এর নিচে' সীমা ছাড়িয়েও অনেক বেশি।