রাশিয়ার দখলে ইউরোপের বৃহত্তম পারমাণবিক কেন্দ্র, আগুন নিয়ন্ত্রণে
রাশিয়ান সৈন্যরা জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র দখল করেছে বলে জানিয়েছে ইউক্রেনের কর্তৃপক্ষ।
রয়টার্স নিউজ এজেন্সির উদ্ধৃতি দিয়ে একটি স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সোশ্যাল মিডিয়ায় বলে, "অপারেশনাল কর্মীরা বিদ্যুৎ ইউনিটের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছেন।"
এছাড়া, স্টেশন কর্মীরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন এবং বিদ্যুৎ ইউনিটগুলির অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছেন বলেও জানানো হয়।
ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর গোলার আঘাতে শুক্রবার ভোরে দেশটির জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে অগ্নিসংযোগ ঘটে।
এটি ইউরোপের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। ইউক্রেনের দক্ষিণে নাইপার নদীর তীরে অবস্থিত এই পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ইউক্রেনের বিদ্যুৎ চাহিদার এক-চতুর্থাংশ উৎপাদিত হয়।
বিদ্যুৎকেন্দ্রটির মুখপাত্র আন্দ্রি টুজ ইউক্রেনীয় টেলিভিশনকে বলেন, গোলা সরাসরি জাপোরিঝিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রে এসে পড়ে। এতে কেন্দ্রের ছয়টি চুল্লির মধ্যে একটিতে আগুন ধরে যায়। ওই চুল্লিটি কাজ না করলেও এর ভেতর পারমাণবিক জ্বালানি রয়েছে।
টেলিগ্রামে পোস্ট করা এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, "আমরা তাদের ভারী অস্ত্র নিক্ষেপ বন্ধের দাবি জনাই। বিদ্যুৎকেন্দ্রে পরমাণু বিপদের সত্যিকারের ঝুঁকি রয়েছে।"
দমকলকর্মীদের গুলি করা হচ্ছে বলে তারা আগুন নেভাতে এর কাছে যেতে পারেছেন না বলেও জানান তিনি।
এদিকে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা এক টুইট বার্তায় জানায়, ইউক্রেনীয় পারমাণবিক নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ বলছে রুশ সেনাদের হামলার শিকার ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিকিরণের মাত্রার এখনও কোনো পরিবর্তন হয়নি।
সংস্থাটি বলছে, তাদের মহাপরিচালক মারিয়ানো গ্রসি ইউক্রেনীয় প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্মিগাল ও দেশটির নিয়ন্ত্রক ও অপারেটরের সঙ্গে জাপোরিঝিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিস্থিতি সম্পর্কে যোগাযোগ করছেন।
ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কির কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, চুল্লিগুলো এখনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি এবং বিকিরণের মাত্রাও স্বাভাবিক রয়েছে।
এদিকে যে সময় জাপোরিঝিয়া নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টে এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে, সেসময় দ্বিতীয় দফায় আলোচনায় বসেছিল ইউক্রেন ও রাশিয়ার কর্মকর্তারা। সাধারণ নাগরিকদের সুরক্ষিত জায়গায় পাঠাতে 'মানবিক করিডর' তৈরি করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় সেই বৈঠকে।
তবে সার্বিকভাবে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনায় কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, দ্রুত তৃতীয় পর্যায়ের বৈঠকে বসবে দুই দেশ।