হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রীরই নেই নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র
ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে চলমান সহিংসতার মধ্যে জানা গেল এক মজার তথ্য। দেশটির সরকার দলীয় প্রশাসনের সদস্যদেরই নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র নেই। সম্প্রতি তথ্য অধিকারের (আরটিআই) প্রশ্নে জানা গেছে, হরিয়ানা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টর, মন্ত্রিপরিষদের মন্ত্রীরা এবং রাজ্যপালসহ রাজ্য কর্মীদের নাগরিকত্ব প্রমাণের কোনো কাগজপত্র বা নথি নেই।
গত ২০ শে জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য এবং রাজ্যপাল সত্যদেব নারায়ণ আর্যের নাগরিকত্বের প্রমাণ সম্পর্কে বিশদ চেয়ে একটি আরটিআই দায়ের করেন পানিপথের একজন এক্টিভিস্ট পিপি কাপুর।
পিপি কাপুরের আরটিআইয়ের জবাবে হরিয়ানার পাবলিক ইনফরমেশন অফিসার (পিআইও) পুনম রাঠি এনডিটিভিকে জানান, এ সম্পর্কিত কোনও তথ্য তাদের রেকর্ডে নেই। 'নাগরিকত্বের নথিগুলি নির্বাচন কমিশনের কাছে পাওয়া যেতে পারে' বলে জানান তিনি।
গত সেপ্টেম্বরে রাজ্য নির্বাচনী প্রচারের সময় অবৈধ অভিবাসন বন্ধ করতে জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন বা এনআরসি কার্যকর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মনোহর লাল খট্টর।
এই বছর জানুয়ারিতে এক সংবাদ সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী জানান, পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তানে ধর্মীয় নিপীড়নের মুখোমুখি হয়ে ভারতে আসা প্রায় ১,৫০০ লোক হরিয়ানায় বসবাস করছেন। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) এর মাধ্যমে এখন তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া যেতে পারে।
তিনি বলেন, "এই তিন দেশের বিভিন্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রায় ১,৫০০ জন লোক হরিয়ানায় বসবাস করছেন। আর এই ১,৫০০ টির মধ্যে মুসলিম পরিবার রয়েছে মাত্র একটি।"
এর আগে গত ১৭ জানুয়ারি শুভঙ্কর সরকার নামের এক ব্যক্তি আরটিআইয়ের মাধ্যমে জানতে চান, প্রধানমন্ত্রীর নাগরিকত্বের কাগজপত্র রয়েছে কি না। এর উত্তরে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের সচিব প্রবীণ কুমার স্বাক্ষরিত জবাবে জানানো হয়, ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনের ৩ ধারা অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী জন্মসূত্রেই ভারতীয়। এ কারণে নিবন্ধনের মাধ্যমে প্রাপ্ত নাগরিকত্ব সনদ তার রয়েছে কি না, সে প্রশ্নই ওঠে না।
প্রবীণ সাংবাদিক সিমি পাশা সংশ্লিষ্ট আরটিআই ও তার উত্তরের একটি ছবি টুইটারে পোস্ট করেছেন। সেখানে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনের ৩ ধারা অনুযায়ী যদি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নাগরিকত্ব নিবন্ধনের প্রয়োজন না থাকে, তবে অন্যদের কেন থাকবে?
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে দেওয়া এ জবাবকে 'অস্পষ্ট' হিসেবে বর্ণনা করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য কুইন্ট।