হাইপারসনিক মিসাইল কী? কেনো রাশিয়া এই অস্ত্র ব্যবহার করছে?
ইউক্রেন হামলায় নতুন ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করেছে রাশিয়া। দেশটির দাবি, প্রথমবারের মতো কোনো যুদ্ধে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র 'কিনজাল' (ড্যাগার) ব্যবহার করেছে তারা।
রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আরআইএ নভোস্তি'র খবর অনুযায়ী, রোববার ইউক্রেনের মাইকোলাইভের কাছে একটি জ্বালানি ডিপো এবং শনিবার পশ্চিমের একটি ভূগর্ভস্থ ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলাবারুদের গুদাম উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এই ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে। বার্তা সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এই হামলা দুটির মাধ্যমে ইউক্রেনে প্রথমবারের মতো 'নেক্সট জেনারেশন' বা পরবর্তী প্রজন্মের অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে; অন্যদিকে পশ্চিমা বিশ্লেষকদের দাবি, কেবল ইউক্রেন নয়, যেকোনো যুদ্ধেই এই প্রথম হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হল।
মিগ ফাইটার জেট থেকে উৎক্ষেপণের জন্য ডিজাইন করা কিনজাল ক্ষেপণাস্ত্রটিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন 'একটি আদর্শ অস্ত্র' হিসেবে উল্লখ করেছেন। শব্দের গতির চেয়ে ১০ গুণ দ্রুত উড়তে পারে এই অস্ত্র। এমনকি এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের চোখ এড়াতেও সক্ষম এটি।
উচ্চগতির এই অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি নিয়ে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি দেশ কাজ করছে।
কেনো রাশিয়া এই অস্ত্র ব্যবহার করছে?
রুশ বিশ্লেষক ভ্যাসিলি কাশিন এএফপি-কে বলেছেন, ভূগর্ভস্থ স্টোরেজ সাইট ধ্বংস করতে সাবসনিক মিসাইলের তুলনায় কিনজাল অনেক শক্তি বেশি কার্যকর। তবে অন্যান্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চলমান যুদ্ধে এই ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যবহার বড় ধরনের কোনো প্রভাব ফেলবে না।
আরেক রুশ বিশ্লেষক পাভেল ফেলগেনহাওয়ার মনে করছেন, ইউক্রেনের মাটিতে ক্ষেপণাস্ত্রটির ব্যবহার 'এক ধরনের মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব এবং প্রপাগান্ডা ছড়ানোর বাইরেও' সামান্য পরিবর্তন আনতে পারে; এর মাধ্যমে অন্যরা এমন ইঙ্গিউত পেতে পারে যে, রুশ সেনাদের কাছে অন্য অস্ত্রের মজুদ কমে আসছে।
বেলজিয়ামের প্রতিরক্ষা কৌশল বিশ্লেষক জোসেফ হেনরোটিনও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে বলেছেন, রাশিয়ার কাছে হয়তো ইস্কান্দারের মতো স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যা কমে আসছে; কিংবা দেশটি হয়তো পারমাণবিক সক্ষমতা সম্পন্ন হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে সংকটের উত্তেজনা বাড়াতে চাইছে।
এদিকে, ইউক্রেন সরকার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে; তবে, কী ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে সে বিষয়ে এখনও কিছু বলা যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
- সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান