ঋণখেলাপি হওয়া এড়াতে অবশেষে ডলারেই রাশিয়ার ঋণ পরিশোধ
ডিফল্ট বা বৈদেশিক ঋণখেলাপি হওয়া এড়াতে দেরিতে হলেও এবার একেবারে ভিন্ন পথ বেছে নিয়েছে রাশিয়া। শুক্রবার রাশিয়া ইতোমধ্যে বাকি পড়া বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক ঋণ ডলারে পরিশোধ করেছে। যদিও এর আগে দেশটি বলেছিল, ঋণের অর্থ তারা কেবল রুবলেই পরিশোধ করবে। রয়টার্সের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য।
ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার ওপর ভারী অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে। ফলে দেশটি বিদেশি ব্যাংকগুলোতে থাকা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ব্যবহার করতে পারছে না। সিএনএন-এর তথ্য অনুযায়ী, বিদেশের মাটিতে রাশিয়ার প্রায় ৩১৫ বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক রিজার্ভ স্থগিত করা হয়েছে।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ৬ এপ্রিল রাশিয়া বলেছিল, বন্ডের অর্থ তারা সমপরিমাণ রুশ মুদ্রা রুবলে পরিশোধ করেছে। তবে, এর তিনদিন পরেই ক্রেডিট রেটিং সংস্থা এস অ্যান্ড পি রাশিয়াকে বৈদেশিক ঋণের দায়বদ্ধতার ক্ষেত্রে ঋণখেলাপি ঘোষণা করে। এরপর দেরিতে হলেও রাশিয়া ডিফল্ট এড়ানোর শেষ চেষ্টা হিসেবে ডলারে অর্থ পরিশোধ করেছে।
রাশিয়ার অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা ২০২২ সালের ইউরোবন্ডের জন্য ৫৬৪.৮ মিলিয়ন ডলার এবং ২০২৪ সালের বন্ডের জন্য ৮৪.৪ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে সক্ষম হয়েছে। বন্ডগুলোতে নির্দিষ্ট করা মুদ্রা হচ্ছে ডলার।
রুশ অর্থ মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, তারা সিটিব্যাংকের লন্ডন শাখায় প্রয়োজনীয় এই তহবিল সরবরাহ করেছে। বন্ডের তথাকথিত অর্থ প্রদানকারী এজেন্টদের মধ্যে অন্যতম এই প্রতিষ্ঠানের কাজ হল, বিনিয়োগকারীদের কাছে তাদের তহবিল বিতরণ করা। এরাই মূলত মস্কোকে অর্থ ধার দিয়েছিল।
১৯৯৮ সালে আর্থিক বিপর্যয়ের পর থেকে রাশিয়া এখনও পর্যন্ত কোনো ধরণের ঋণখেলাপি হয়নি। ১৯১৭ সালের বলশেভিক বিপ্লবের পর থেকে রাশিয়াকে কোনো বড় আন্তর্জাতিক বা বিদেশি বাজারে ঋণখেলাপি হতে দেখা যায়নি। কিন্তু মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় রাশিয়ার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ব্যবহার করে দায় পরিশোধ করতে না দেওয়ায়, নিষেধাজ্ঞার জেরে ঋণখেলাপি হতে হয়েছে দেশটিকে।
চলতি মাসের শুরুর দিকে বন্ডগুলো পরিশোধ করার কথা ছিল। তবে সরকারি বন্ড কেনার শর্তে অতিরিক্ত ৩০দিনের সময় দেওয়া হয়, যার অর্থ হল, মস্কোর জন্য চূড়ান্ত সময়সীমা আগামী মে মাসের ৪ তারিখ পর্যন্ত। এখন দেখার বিষয় হল, রাশিয়ার ঋণখেলাপি হওয়ার ব্যাপারে ক্রেডিট রেটিং সংস্থা এস অ্যান্ড পি তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে কিনা।
- সূত্র: রয়টার্স, সিএনএন