বান্দরবানে আগুনে পুড়ে গেছে পাখির ডিম ও ছানা
বান্দরবানে লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নে একটি রাবার কোম্পানি তিন পাড়াবাসীর জুমভূমিতে আগুন লাগায়, এতে পুড়ে গেছে পাখির ডিম ও ছানা। ঘটনাস্থলে পাখির বাসা, মৃত পাখির ছানা ও বেশকিছু ডিম পাড়াবাসীরা মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেছেন।
লাংকম ম্রো পাড়ার বাসিন্দা সাওলা যোহন ম্রো জানান, আগুন পুড়িয়ে দেওয়ার সময় তিন পাড়াবাসীর লোকজন যে যার মত পুরো এলাকা ঘুরে দেখেন। বিচ্ছিন্নভাবে কিছু বাঁশঝাড় থেকে যায়। একটি বাঁশঝাড়ের নিচে বাসাসহ একটি পাখির ছানা নিচে পড়ে ছিল।
''আমি যখন দেখতে যায় সেখান থেকে একটি বুলবুলি পাখি উড়ে যায়। ধারণা করি, এটা বুলবুলি পাখির ছানা হতে পারে। তবে অর্ধেক পুড়ে যাওয়া দেখে বোঝার উপায় ছিল না আসলে ঠিক কোন পাখির ছানা।''
সাওলা যোহন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে আরও বলেন, অন্য একটি জায়গায় আরও পাঁচটা ডিম দেখতে পাওয়া যায়। আকারে একটু বড়। আগুনেও সব পুড়ে গেছে। তবে এটা পাখির ডিম কিনা সন্দেহ আছে। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আরও বিভিন্ন জায়গায় এরকম থাকতে পারে। ৩০০-৩৫০ একর এলাকা পুড়ে গেছে। এত বিশাল এলাকা খুঁজে দেখতেও অনেক সময় লাগবে।
গত ২৬ এপ্রিল লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানি লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নে ডলুঝিরি মৌজায় দুটি ম্রো পাড়া ও একটি ত্রিপুরা পাড়ার ৪০০ একর এলাকায় প্রাকৃতিক বন কেটে আগুনে পুড়িয়ে দেয়। এতে ৩০০ থেকে ৩৫০ একর এলাকা বিরাণভূমিতে পরিণত হয়।
পাশাপাশি সেখান থেকে বাঁশ-কাঠ কেটে ও ফলমূল সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসা তিন পাড়াবাসী খাদ্য সংকটে পড়ে। পরে স্থানীয় প্রশাসন ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করে ভুক্তভোগীদের। এছাড়া পানির উৎস শুকিয়ে যাওয়ায় ঝিরিতেও পানি কমে গেছে। জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয়ে পরিবেশ বিপর্যয় সৃষ্টি হয় গোটা এলাকায়।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সেভ দ্য নেচার সংস্থার সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, "এখানে ইকো-সিস্টেমের সব উপাদান ছিল। আগুনে সব পুড়ে গিয়ে তা বিনষ্ট হয়েছে। মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে।"