এক হাজার টাকার নোট অচলের গুজব
"বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনাক্রমে ১০০০ টাকা মূল্যমানের লাল নোট লেনদেনের সর্বশেষ সময়সীমা আগামী ৩০/০৫/২২ তারিখ পর্যন্ত। এরপর আর কোন ১০০০ টাকা মূল্যমানের লাল নোট ব্যাংকে জমা নেওয়া হবে না। সুতরাং আগামী ৩০/০৫/২২ দুপুর ১২ টার মধ্যে ১০০০ টাকার লাল নোট ব্যাংকে জমাদানের নির্দেশ প্রদান করা হল। পরবর্তী দিন হতে ১০০০ টাকা মূল্যমানের লাল নোট অচল বলে গণ্য হবে।"
এমন একটি নির্দেশনার ভুয়া কাগজের ছবি ভাইরাল হয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগের জেলাগুলোতে। কাগজে মোঃ একাব্বর আলী নামে এক ব্যক্তির স্বাক্ষর দেখা যায়। নামের নিচে যে সিলটি দেয়া হয়েছে তাতে মো. একাব্বর আলীকে জামালপুরের কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা বলা হয়।
এক হাজার টাকার লাল নোট লেনদেন বন্ধে এই নির্দেশনাপত্রটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। অনেকেই আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন। এমন নির্দেশনার সত্যতা যাচাই করতে খোঁজখবর করে জানা যায়, স্বাক্ষরে নাম থাকা মো. একাব্বর আলী বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক জামালপুর জেলার মেলান্দহ উপজেলার ভাবকী বাজার শাখার, শাখা ব্যবস্থাপক। তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি নির্দেশনাটি সম্পূর্ণ ভুয়া বলে নিশ্চিত করেন।
একাববর আলী জানান, "ব্যাংক থেকে এ ধরনের কোন নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। এটি সম্পূর্ণ ভুয়া। কে বা কারা তার নাম ব্যবহার করে অসৎ উদ্দেশ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া নির্দেশনাটি ছড়িয়ে মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। নির্দেশনা পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে এই ফেসবুক পোস্টটি ময়মনসিংহ অঞ্চলে ভাইরাল হয়ে যাওয়ার কারণে অনেকেই বিভ্রান্ত হন এবং আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন। ময়মনসিংহের মধ্যবাজারের ব্যবসায়ী খাইরুল আলম বলেন, "ফেসবুকে পোস্ট দেখে ভেবেছিলাম ভারতের মতো এখানেও ১ হাজার টাকার নোট বাতিল হতে যাচ্ছে। পরে পরিচিত এক ব্যাংক কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানতে পারি এটা ভুয়া । "
ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাট্রির সহ-সভাপতি শংকর সাহা বলেন, ফেসবুকে এটি ভাইরাল হওয়ার কারণে অনেকেই বিভ্রান্ত হয়েছে। আমাকেও ইনবক্সে কয়েকজন এই ছবি পাঠিয়েছে। তবে আমি ব্যাংক কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে এটি ভুয়া বলে নিশ্চিত হয়েছি এবং অন্যদেরও জানিয়েছি।
সামাজিক মাধ্যমে এই গুজবের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক এক বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রচারণাকে 'বিভ্রান্তিকর' বলে উল্লেখ করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক (সহকারী মুখপাত্র) জি. এম. আবুল কালাম আজাদ স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, "এক হাজার টাকার লাল নোট বা অন্য কোনো নোট অচল হিসেবে ঘোষণা করা হয়নি। জনসাধারণকে উক্ত গুজব আমলে না নেওয়ার অনুরোধ করা হলো।"