চাল রপ্তানিও সীমিত করতে পারে ভারত
গম ও চিনির পর এবার চাল রপ্তানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে ভারত। অভ্যন্তরীণ বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করতে এবং মূল্যবৃদ্ধি রোধে এ সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পরিচালিত একটি কমিটিকে অ-বাসমতি চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রতিটি পণ্যের বাজার পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। দাম বাড়ার লক্ষণ দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এটি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
বিষয়টির সাথে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি জানায়, "মুদ্রাস্ফীতি সামাল দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে ভারত। দ্রব্যমূল্য পর্যবেক্ষণ কমিটি প্রতিটি পণ্যের উপর নজর রাখছে এবং সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।"
চীনের পর ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ চাল উৎপাদনকারী দেশ। ২০২১-২২ অর্থবছরে দেড়শোটিরও বেশি দেশে চাল রপ্তানি করেছে দেশটি।
আরেক কর্মকর্তা বলেন, "৫টি পণ্য রপ্তানিতে বিধিনিষেধ আরোপের কথা ভাবা হচ্ছে, এগুলোর মধ্যে গম ও চিনির উপর ইতোমধ্যেই তা কার্যকর করা হয়েছে।"
এছাড়াও, আরো কয়েকটি সূত্রে জানা যায়, চালের ক্ষেত্রেও চিনির মতো একই বিধিনিষেধ আরোপ করা হতে পারে। এই মুহূর্তে ভারত থেকে সর্বোচ্চ ১ কোটি টন চিনি রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
খুচরা মুদ্রাস্ফীতি গত আট বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ৭.৭৯ শতাংশে পৌঁছানোর ফলে ভারত সরকারকে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা ভাবতে হচ্ছে।
এসব ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে ডিজেল ও পেট্রোলের আবগারি শুল্ক কমানো, উজ্জলা সুবিধাভোগীদের গ্যাস সিলিন্ডারে ২০০ রূপি ভর্তুকি, গম ও চিনির উপর রপ্তানি সীমাবদ্ধতা আরোপ, ইস্পাত ও প্লাস্টিক পণ্যের কাঁচামালের উপর আমদানি শুল্ক কমানো এবং লৌহ আকরিক ও স্টিল ইন্টারমিডিয়েটের উপর রপ্তানি শুল্ক আরোপ।
সংবাদমাধ্যমকে সেই প্রথম কর্মকর্তা বলেন, "অনেক দেশে এখন অপরিহার্য শস্যের উপর একটি অভ্যন্তরীণ নীতি রয়েছে। ভারত নিজের জন্য, তার প্রতিবেশীদের এবং দুর্বল দেশগুলোর জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়।" তিনি আরো যোগ করেন, অ-বাসমতি চালের উপর বিধিনিষেধের কথা বিবেচনা করা হয়েছে কারণ এটি সবাই খায়।
ভারত ২০২২ অর্থবছরে ৬.১১৫ বিলিয়ন ডলারের অ-বাসমতি চাল রপ্তানি করেছে যা দেশটির সব কৃষিপণ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী পণ্য।
এদিকে ২০২১-২২ সালের সেকেন্ড অ্যাডভান্স এস্টিমেট অনুযায়ী, ২০২১-২২ সালের মধ্যে ভারত রেকর্ড ১২৭.৯৩ মেট্রিক টন চাল উৎপাদন করবে বলে অনুমান করা হচ্ছে, যা গত পাঁচ বছরের গড় উৎপাদনের তুলনায় সর্বোচ্চ।