রাশিয়ার বিরুদ্ধে তেল নিষেধাজ্ঞায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের ঐক্যে ফাটল
ইউক্রেনের প্রতি নিজেরদের সমর্থন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিতে সোমবার (২০ মে) মিলিত হবেন ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশের নেতারা। তবে রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কিয়েভের প্রতি সমর্থন জানালেও মস্কোর ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার ব্যাপারে একমত হতে তারা ব্যর্থ হয়েছেন।
চলমান সংকটের মাঝে কীভাবে সর্বোত্তম উপায়ে ইউক্রেনকে সাহায্য এবং সংঘাতের প্রভাবগুলোকে মোকাবেলা করা যায়, সে ব্যাপারে ২৭ জাতির ইউরোপীয় ব্লক সিদ্ধান্ত নেবে সম্মেলনের দুই দিনের মধ্যেই।
রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের প্রভাবে ইতোমধ্যেই দাম বেড়েছে খাদ্য ও জ্বলানির। ইইউ-এর প্রতিরক্ষা খাতেও দেখা দিয়েছে বাড়তি খরচ। তবে বার্তাসংস্থা রয়টার্সের হাতে আসা বৈঠকের খসড়া প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ইইউ কিয়েভ সরকারকে মৌখিকভাবে সহানুভূতি ও সমর্থন দিয়ে গেলেও নতুন নিষেজ্ঞার ব্যাপারে খুব বেশি এগোতে পারেনি।
এর মূল কারণ হল, জ্বালানির জন্য রাশিয়ার ওপর ইউরোপের অধিক নির্ভরশীলতা।
রোববার (২৯ মে) জার্মান অর্থমন্ত্রী রবার্ট হ্যাবেক বলেন, "ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর আমরা দেখেছি, ইউরোপ ঐক্যবদ্ধ হলে কী ঘটতে পারে। আগামীকালের সম্মেলনকে সামনে রেখে চলুন আশা করি, এই ঐক্য এভাবেই চলতে থাকবে। কিন্তু ইতোমধ্যেই এটি আবার ভাঙতে শুরু করেছে।"
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজনৈতিক সমর্থনের অংশ হিসেবে ইউক্রেনকে ৯ বিলিয়ন ইউরো ঋণ প্যাকেজ দেওয়ার খসড়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইইউ, যেখানে সুদের কিছু অংশ পরিশোধের জন্য রাখা হয়েছে ছোট একটি অনুদান। এই অর্থ দিয়ে যেন ইউক্রেন সরকার স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে কর্মীদের প্রায় ২ মাসের বেতন পরিশোধ করতে পারে, সেজন্যই এ ঋণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তবে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। কীভাবে এই ফান্ড তৈরি করা হবে, সে ব্যাপারে ইউরোপীয় কমিশন পরবর্তীতে প্রস্তাব দেবে বলে জানা যায়।
এদিকে, চলতি মে মাসের শুরু থেকেই মস্কোর ওপর ষষ্ঠ নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজের বিষয়ে চিন্তা ভাবনা শুরু করে ইইউ। কিন্তু তা সত্ত্বেও ইইউ নেতারা এক্ষেত্রে একমত হতে পারেনি।
রাশিয়ার তেল কেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে দ্বিমত জানিয়েছে হাঙ্গেরি। এমনকি স্লোভাকিয়া এবং চেক প্রজাতন্ত্রের কাছেও রাশিয়ার তেল সরবরাহ বন্ধ একটি বড় সমস্যা।
অন্যান্য নিষেধাজ্ঞা যেমন- সুইফট থেকে রাশিয়ার সবচেয়ে বড় ব্যাংককে বাদ দেওয়া, ইইউ থেকে রুশ সম্প্রচারকদের বহিষ্কার, যাদের সম্পদ হিমায়িত বা স্থগিত করা হয়েছে এবং যারা ইইউতে প্রবেশ করতে পারছেন না, এমন ব্যক্তির তালিকায় আরও বড় করা, এই সবকিছুই আটকে আছে তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের চুক্তিতে ঐক্যমতের অভাবে।
এছাড়া সম্মেলনের খসড়ায় আরও দেখা গেছে, যুদ্ধের পর ইউক্রেন পুনর্গঠনে একটি আন্তর্জাতিক তহবিল গঠনের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করবেন ইইউ নেতারা। তবে এবারে বিস্তারিত কিছু উল্লেখ করা হয়নি সেখানে। এ লক্ষ্যে ইইউতে রুশ নাগরিকদের যে সম্পদ হিমায়িত করা হয়েছে, তা বাজেয়াপ্ত করা হতে পারে বলেও উল্লেখ রয়েছে খসড়ায়।
- সূত্র: রয়টার্স