নির্ধারিত ডলার রেট কেন কাজ করছে না?
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত ইউনিফর্ম ডলার রেট কিভাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করছে তা নিয়ে আলোচনা করেছেন সিটি ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও এবং অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) এর ভাইস-চেয়ারম্যান মাসরুর আরেফিন।
মঙ্গলবার ইন্টারব্যাংক ইকুইভ্যালেন্ট রেটে ৮৯ টাকায় ডলার সরবরাহ করে আমদানি অর্থপ্রদানে আমাদেরকে সহায়তা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আমরা সেই সহায়তা নিয়ে ০.১ মিলিয়ন ডলারের কম পরিমাণের আমদানি বিল নিষ্পত্তি করেছি।
এছাড়া, ক্রেডিট পেমেন্টের খাদ্য এবং শক্তি খাতের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ৫ মিলিয়ন ডলার পেয়েছি আমি।
অন্যদিকে বড় আমদানি বিলের ক্ষেত্রে বেশিরভাগ ব্যাংক প্রতি ডলার ৯২-৯৪ টাকা করে হিসাব করে। কিন্তু, ডলারের মান নির্ধারিত ৮৯.১৫ টাকা ধরেই ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার প্রিমিয়াম যোগ করছে তারা।
আমরা ইতোমধ্যেই ডলারের দিক দিয়ে 'শর্ট' অবস্থানে আছি। এই 'শর্ট' বা নেতিবাচক অবস্থান থেকেই আমরা বিল নিষ্পত্তি করেছি, যা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। তাই আমরা এর সাথে কিছু প্রিমিয়াম যোগ করেছি।
রেমিট্যান্স
সবাই নির্ধারিত ৮৯.২০ টাকা হারে এক্সচেঞ্জ কোম্পানি থেকে বৈদেশিক রেমিট্যান্স ডলার কিনেছে। কিন্তু ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন (ডব্লিউইউ) আমাদের কাছে ডলার বিক্রি করেছে ৯৩.৬২ টাকায় এবং মানিগ্রাম (এমজি) বিক্রি করেছে ৯৫ টাকায়।
এর ফলে শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রেট সংক্রান্ত নির্দেশনাই অকার্যকর হয়ে যাবে।
আমরা যদি ডব্লিউইউ বা এমজি থেকে বেশি দামে রেমিট্যান্স ডলার কিনি, তাহলে আমরা কিভাবে আমদানি নিষ্পত্তির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত ৮৯.১৫ টাকা বিক্রির হার মেনে চলব?
রপ্তানি
মঙ্গলবার মাত্র কয়েকটি রপ্তানি বিল এসেছে কারণ নিউইয়র্ক তিন দিন বন্ধ ছিল। ফলে রপ্তানি আয়ও ছিল কম।
তবে যত টাকাই আসুক না কেন, নির্ধারিত ৮৮.১৫ টাকা টেলিগ্রাফিক ট্রান্সফার ক্লিন রেট থেকে মাত্র ২০-৩০ পয়সা বেশি দিয়েছে ইন্ডাস্ট্রি; যা আমার মতে ঠিক। আমরা তো রপ্তানিকারকদেরকে অসন্তুষ্ট করতে পারি না।
আন্তঃব্যাংক
নির্ধারিত টাকা ৮৯ হারে কোনো লেনদেন হয়নি। যে ব্যাংকগুলো আন্তঃব্যাংকে ডলার বিক্রি করবে তারা তাদের ডলার হোল্ডিংয়ে 'দীর্ঘ' অবস্থানে রয়েছে।
এর আগে তাদেরকে প্রতি ডলার অনেক বেশি হারে (৯৪-৯৫ টাকায়) কিনতে হয়েছিল।
তারা মূলত ভবিষ্যতের গ্রাহকদের জন্য সেই ডলার হোল্ডে রাখে। এ কারণে আন্তঃব্যাংক বাজারে আজ ৮৯ টাকা দরে কোনো লেনদেন হয়নি।