‘রাশিয়ানরা আসছে’
পূর্ব ইউক্রেনের দোনেৎস্ক অঞ্চলের শহর বাখমুত। প্রথম দেখায় শহরটিতে চলমান যুদ্ধের আঁচ টের পাওয়া যাবে না।
সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর প্রতিবেদক বেন ওয়েডেম্যান বাখমুত গিয়ে দেখতে পান শহরের রাস্তায় মানুষ চলাচল করছে। জ্বালানি ঘাটতির কারণে বাখমুতের রাস্তায় যানবাহন কম। তবে অনেকেই বাইসাইকেলে চেপে শহরে ঘুরছেন।
কিন্তু এই আপাত শান্তির চাদরের নিচেই লুকিয়ে আছে যুদ্ধ। বাখমুতে নিয়মিত বোমা বিস্ফোরণ হয়। মাঝে মাঝেই রুশ বাহিনীর ছোড়া রকেট ও কামানের গোলা এসে পড়ে শহরের ভেতর।
বাখমুতে রান্নার গ্যাস শেষ হয়ে গেছে। তাই বেকারিগুলোতে কাজ বন্ধ। প্রতিদিন একটি ট্রাক ১০ ঘণ্টা সফর করে ১০ হাজার টুকরো রুটি নিয়ে আসে বাখমুতবাসীর জন্য, বিনামূল্যে বিতরণের উদ্দেশ্যে। জনপ্রতি দু-টুকরো পায়।
কাছেই এক অরণ্যবেষ্টিত পাহাড় থেকে উড়ছিল কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী।
যমজ শহর লাইসিচানস্ক ও সেভেরোদোনেৎস্কের দিকে চলে যাওয়া সদর রাস্তার পাশেই অবস্থিত বাখমুত। সেভেরোদোনেৎস্কে এখন তীব্র হামলা চালাচ্ছে রুশ বাহিনী।
রুশ বাহিনীর বোমা বর্ষণে বাখমুতের রাস্তাঘাটও বিধ্বস্ত।
ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারাই জানাচ্ছেন, সেভেরোদোনেৎস্ক এখন রুশদের নিয়ন্ত্রণে। সেভেরোদোনেৎস্ক লাইসিচানস্কের পতন হলে বাখমুত রুশদের পরবর্তী টার্গেট হবে বলা আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইউক্রেনের এই অঞ্চলে রুশ বাহিনী ধীরে হলেও জয়ের দ্বারপ্রান্তে চলে গেছে।
বাখমুতের বাসিন্দারা এখন ঘরছাড়া। তাদের অধিকাংশই থাকছেন নগর কর্তৃপক্ষের পরিচালনায় চালিত ডরমিটরিতে। সেখানে গিয়ে দেখা গেল দুই সন্তানের জন্য দুপুরের খাবার তৈরি করছেন ল্যুডমিলা। গত মার্চে নিজ বাড়ি থেকে বেরিয়ে এই ডরমিটরিতে আশ্রয় নেন তিনি। তার স্বামী মারা গেছেন যুদ্ধের আগেই।
ল্যুডমিলার এখন কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। হাতও প্রায় খালি। তিনি বললেন, 'রাশিয়ানরা আসছে।' তিনি আরও বলেন, রুশরা বাখমুতেই থামবে না। এরপর আরও এলাকা দখল করার জন্য এগিয়ে যাবে।
বাখমুতবাসীদের হাতের টাকাও ফুরিয়ে আসছে। অনেকেই বাখমুত ছেড়ে চলে যাচ্ছেন অপেক্ষাকৃত নিরাপদ নিপ্রো শহরে।
- সূত্র: সিএনএন