মুখ খারাপের সপক্ষে
'... প্রাকৃত বলুন, দেশী বলুন, অশুদ্ধ বলুন, ভাষা বলুন আর অপভাষাই বলুন, মাতৃভাষার ঐ অংশেই আমাদের প্রাণপুরুষের পরিচয়।' জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস, ১৩২৩
সিনেমা হল, গ্রন্থাগার আর স্ল্যাং—এই তিনে মিলে বেড়ে ওঠা শুরু করেছিলাম চার দশক আগে। যে জনপদে আমি বেড়ে উঠেছি, সেখানে স্ল্যাং চালু লব্জ, পিতা পুত্রকে প্রশংসাটাও এই রকম শব্দেই করে। স্ল্যাংয়ের বাংলা আমরা করতে পারি অপশব্দ, যদিও এর সীমানা অনেক বিস্তারিত। নিছক খারাপ শব্দ বলে চিহ্নিত করে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখবার কোনো কারণ নেই। আমাদের নাগরিক মনের আকাক্সক্ষা তথা বাসনা, চাপা ক্রোধ ও বেদনা এই সকল শব্দে ধরা পড়ে। অনেকগুলো বছর পেরিয়ে আসার পর দেখা গেল, এই শহরে লাইব্রেরি অথবা সিনেমা হল আর নেই কিন্তু স্ল্যাং আরও ফুলেফেঁপে উঠছে বিচিত্র রূপ, রস ও সুন্দরে। কেননা নগরে বসবাসের দিনানুদিনের ক্লান্তি, গ্লানি আমরা কফ-থুতুর মতোই উচ্চারিত 'অপশব্দ'-এ ঝেড়ে ফেলতে চাই। মজার ব্যাপার হলো, দুনিয়ার সকল সুস্বাদু খাবার যেমন শরীর-স্বাস্থ্যের জন্যে বিপদের বলে চিকিৎসকেরা প্রেসক্রাইব করেন, তেমনি সমাজ যারা চালান, তারা যে শব্দ তীব্র রাগে, বিরক্তিতে বা বিক্ষোভে উচ্চারণে জিব ও মনে অনাস্বাদিত আরাম নেমে আসে, তা জনপরিসরে অনুচ্চার্য বলে নিদান দিয়েছেন।
নব্বই দশকের মাঝামাঝি চট্টগ্রাম আরও সুন্দর ছিল। মনে আছে, ডিসেম্বরে বিজয় মেলা থেকে ঘরে ঢুকে টেলিভিশন খুলেছি আমজাদ হোসেনের ধারাবাহিক নাটক 'উঠোন' দেখব বলে। সেখানে তারিক আনাম খানের হাতের বিশেষ মুদ্রা সহকারে 'ঝিক ঝিক মালুম হ্যায়?' আমার কোনো প্রচার মাধ্যমে শোনা প্রথম স্ল্যাং। সেদিন একটি দৃশ্যে দেখলাম, তমালিকা কর্মকার কারোর হাত ধরে গোয়ালঘরে ঢুকছেন আর তখনই প্রচার বন্ধ হয়ে গেল। ধারাবাহিকটি যত দূর মনে পড়ে, বিতর্কিত হয়েছিল বেশ। বিএনপি আমলে, তৎকালীন বুদ্ধিজীবীদের স্তব্ধকবর নীরবতার মধ্যে হুমায়ূন আহমেদের নাটকের টিয়াপাখি যেমন করে 'তুই রাজাকার' বলে নাটকের পাত্র-পাত্রী ও দর্শকদের নাড়া দিয়েছিল, সেটিও আমার বিবেচনায় একটা শব্দকে ব্যবহারের উদাহরণ। শব্দ কখনো শ্লীল বা অশ্লীল হয় না। আমরা জানি, কে কোন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছেন, তার ওপরেই পুরো বিষয় নির্ভর করে। এবং রাষ্ট্র কখন জনরুচির জন্য উপাদেয় ভাবে, এটিও জরুরি। নবারুণ ভট্টাচার্য পুরন্দর ভাট ছদ্মনামে যে কবিতাগুলো লিখেছিলেন, তার স্ল্যাংসমূহকে আমরা মজার ছলেই নিয়েছি ,হা হা হি হি করেছি। 'মবলগে নভেল' উপন্যাসের মিখাইল বুলগাকভপ্রতিম যে নিরীক্ষা, তা-ও হেসেই উড়িয়েছি। সুবিমল মিশ্রের কয়েকটি ছোটগল্পে সমাজের পরিস্থিতিটি তুলে ধরবার জন্যই রাখঢাক না করেই স্ল্যাং ব্যবহার করেছেন। আমাদের আখতারুজ্জামান ইলিয়াস তো বিশ্বাসই করতেন, সমাজের ক্ষত সারাবার জন্যে পুঁজ গেলে দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা। বেড়ে উঠতে উঠতে আমরা দেখেছিলাম, যেখানে যত চাপাচাপি, চোখ টেপাটেপি ইশারা-ইঙ্গিত, সেখানেই আগ্রহ তুঙ্গে ওঠে। অনেকটা বয়েজ স্কুলে পড়া ছেলেদের ইন্টারস্কুল সায়েন্স ফেয়ারে মেয়েদের সাথে মেশার মতো। স্ল্যাং বিষয়ে আমার বাবা একটা ভারি সুন্দর কথা বলেছিলেন। এক বন্ধুকে গালাগাল করেছিলাম অর্থ না জেনেই। তিনি বলেছিলেন, যে শব্দের অর্থ জানো না তা কখনো বলবে না। স্ল্যাং এবং আমরা যাকে প্রচলিত শব্দে বাংলা চটি বলি, তা নির্মাণ, পাঠ ও উচ্চারণের উদ্দেশ্যটি বেশ কাছাকাছি। বাংলা চটি আমাদের মধ্যে একটা অনুচ্চারিত যৌনফ্যান্টাসি তৈরি করে, যার ভেতর কাহিনির ছলে অসংখ্য স্ল্যাংয়ের প্রয়োগ আছে, আর অপশব্দ উচ্চারণেই যত সুখ! আমাদের কিশোরবেলায় আমরা মজা করে বলতাম, গুপ্ত সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা রসময় বাবু এমন একটি কাজ করেছিলেন, যা রবীন্দ্রনাথও পারেন নাই। আমাদের মধ্যে কেউ কেউ তখন রবীন্দ্রসংগীত শেখা শুরু করেছিল, তাদের ভয়ানক গায়ে লেগে যাওয়ায় চ্যালেঞ্জ করে বসল। আমি বেশ গম্ভীর গলায় বললাম, দেখো ভাইয়েরা আমার, বাংলা বর্ণমালার অবহেলিত বর্ণ হচ্ছে চন্দ্রবিন্দু বিসর্গ খণ্ড ত, কমরেড গুপ্ত পাতার পর পাতা লিখে গুপ্তসাহিত্যে বর্ণত্রয়ীর গুরুত্ব পুনরায় প্রতিষ্ঠা করেছেন। আমার বন্ধুরা আমার এই ব্যাখ্যায় হতবিহ্বল হয়ে গিয়েছিল। স্কুলজীবনের একটা ঘটনা বলে পরের প্রসঙ্গে যাব। মাধ্যমিকের ফলাফলের দিন একটি ছেলে অকৃতকার্য হয়ে মাঠজুড়ে ছুটছিল আর চিৎকার করে যা বলছিল, তার শালীন অনুবাদ, 'ওহে প্রিন্সিপাল, তোমাকে আমি ছুটতে ছুটতে বিদ্ধ করব।' আমি প্রচণ্ড ক্রোধের এ হেন সৃজনশীল প্রয়োগকে সেই বয়সে চিরস্মরণীয় ভেবেছিলাম। তখনো সৃজনশীল পরীক্ষা পদ্ধতি আসেনি।
আমাদের কিশোরবেলার সময় বাংলা সিনেমা ছিল অপেক্ষাকৃত নির্মল। সালমান শাহের রাজত্বকালে সেক্স আর ভায়োলেন্সের ততটা রমরমা ছিল না। স্ল্যাং বলতে বড়জোর নির্দোষ হারামজাদা, যাকে আমরা মজা করে হারাম দেশের শাহজাদা বলতাম। তা ছিয়ানব্বইয়ের ছয় সেপ্টেম্বর সালমান শাহ হত্যা হয়ে যাওয়ার কিছুদিন পর আকাশ থেকে সশব্দে পতিত হন 'টারজানকন্যা'-রূপী মুনমুন এবং স্ল্যাংয়ের স্বর্ণযুগ শুরু হয়ে যায়। জাতীয় পুরস্কারজয়ী এবং সম্প্রতি প্রথম জাহাঙ্গীরনগর চলচ্চিত্র উৎসবে আজীবন সম্মাননাপ্রাপ্ত কাজী হায়াৎ এক পুরোনো সাক্ষাৎকারে সমাজের কদর্য চেহারাটা তুলে ধরবার জন্যেই স্ল্যাং ব্যবহারের অনিবার্যতার কথা আমাদের জানান, যখন 'ধর' সিনেমায় দুই শতাধিক গালি ব্যবহারের জন্যে তিনি সমালোচিত হচ্ছিলেন। বাংলা সিনেমার 'অন্ধকার যুগ' মুনমুনের ওই প্রবল লম্ফের পরেই শুরু। সমাজের সুরুচির মাস্টাররা সেমিনার, কলাম ইত্যাদি ঘটানো শুরু করলেন। আমি সেসব সেমিনারে অ্যাটেন্ড করে সরেজমিন তদন্ত করতে পকেটে রুমাল নিয়ে সিনেমা হলে ঢুকে পড়তে লাগলাম। একদিন আমাদের তৎকালীন বামপন্থী দল পোস্টারে কালিমালেপন করতে মিছিলসহ বের হলো। আমি সফলভাবে কালিমালেপন করে সিনেমা হলে ঢুকে পড়লাম। তবে সে কচি বয়সেই মনে হচ্ছিল, শিল্পে সেন্সর সমীচীন নয়। তখনো তো সোভিয়েত কিংবা চৈনিক সেন্সরশিপের গল্প জানি না। মনে বিপ্লবের আশা। এতক্ষণ যে ছোট ছোট গল্প বললাম, তার একটাই উদ্দেশ্য, স্ল্যাংয়ের পরিসর অনেকটাই বিরাট। কেবল কল্পিত বা বাস্তব শত্রুর প্রতি অভিশাপ, চিৎকার বর্ষণ নয়, সিনেমায় বা সাহিত্যে বিপুলভাবে আসে স্ল্যাং এবং কে কোন উদ্দেশ্য নিয়ে সেটা ব্যবহার করছেন, সুড়সুড়ি দিয়ে পয়সা কামানো না সমাজের ক্ষতের পুঁজভর্তি ফোঁড়া ফাটিয়ে দেওয়ার জন্য!
বয়স বাড়তে থাকল। কর্ণফুলীতে পড়তে থাকল চর। সিনেমা হল যত বন্ধ হতে থাকল, আমরা ততই 'সুস্থ' সিনেমার আন্দোলনে যুক্ত হতে থাকলাম, এ হেন পরিস্থিতিতে আমাদের সামনে বিশ্বসিনেমার দিগন্ত খুলে গেলেও আমরা দেখলাম। মেইন স্ট্রিম সিনেমার যে ধরনের দৃশ্যে আমরা গালমন্দ করছি, আর্ট ফিল্মের সেই একই দৃশ্যে আমরা নন্দনতত্ত্বের আনন্দ পাচ্ছি। উদাহরণ হিসেবে ববিতা যখন সত্যজিতের অশনিসংকেত চলচ্চিত্রের শুরুর দৃশ্যে ভেজা শরীরে জলাশয় থেকে আবির্ভূত হন, সেই আবির্ভাব যতটা শিল্পসম্মত লাগে, অন্যান্য পরিচালকের সিনেমায় একই অভিনেত্রীর কার্যকলাপ 'সুস্থ' সিনেমার আন্দোলনে প্রশিক্ষিত মন মেনে নিতে পারে না। আমরা একই সাথে খেয়াল করি, ধনীর নগ্নতা আর দরিদ্রের নগ্নতা সম্পূর্ণ আলাদা সংবেদন তৈরি করে মনে। স্ল্যাং আলোচনায় এই কথাগুলো জরুরি মনে হলো। দেখুন, বাংলা চলচ্চিত্রের খল অভিনেতা ডিপজল যখন বলেন 'সোন্দরী তর দ্যাহ আমার ভাল লাগছে'—আমাদের কানে খট করে লাগে, আবার সেই একই কান কিন্তু ইংরেজি গানের 'আই লাভ দ্য শেপ অব ইউ' ভালো লাগছে। অথচ দুটি বাক্যের সরলার্থ একই। এইভাবে স্ল্যাং ক্ষেত্র বিশেষে অর্থান্তর ঘটায়।
আমাদের হাতে একসময় এসে পড়ল ডক্টর অভ্র বসু প্রণীত 'বাংলা স্ল্যাং সমীক্ষা ও অভিধান', বইটি আমরা গভীর আনন্দ নিয়ে পড়ছিলাম। যদিও সমীক্ষা অংশটি বাদ দিয়ে অভিধান অংশের দিকেই আমাদের যাবতীয় মনোযোগ কার্যকর ছিল। মজার কিছু অধ্যায় ছিল। যেমন সমাসবদ্ধ পদের উদাহরণ—গাম্ভীর্য, গামলা ভরা বীর্য। এরপর থেকেই অত্যন্ত গম্ভীর লোকজন দেখলেই আমাদের হাসি পেত। যেমন ফান্টা শব্দের ইলাবোরেশন: ফা অ্যান্ড নট টাচ এগেইন। পরে সমীক্ষা পড়তে গিয়ে দেখি, স্ল্যাং সম্পর্কে অল্প বয়সে যা ভেবেছিলাম, তা মোটামুটি মিলে যাচ্ছে, যেমন স্ল্যাং ভাষার উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। প্রচণ্ড ক্রোধ কিংবা অপ্রাপ্তির বেদনায় মানুষ স্ল্যাং উচ্চারণ করতে পারে। স্ল্যাংয়ের প্রধান উদ্দেশ্য অন্যকে ভার্বালি আহত করা এবং প্রচণ্ড উত্তেজনার মুহূর্তে মানুষের পক্ষে পলিটিক্যালি কারেক্ট থাকা কিংবা জেন্ডার আইডেন্টিটির প্রতি সম্মান প্রদর্শন সব সময় সম্ভব হয় না। গালি নিয়ে বাংলা ভাষার নেই নেই করে কিছু গবেষণামূলক কাজ হয়েছে। বছর চারেক আগে আমাদের পাশের দেশে 'ছাপ' বলে একটি সংগঠন স্ল্যাং বুক মার্ক করেছিল। কলকাতা লিটল ম্যাগ মেলায় হইহই করে বিক্রি হয়েছিল সেটি।
অপশব্দের কথা বলতে গেলে আমাদের সেন্সরশিপের কথাতেও একটু আসতে হবে। মানুষের বাক্স্বাধীনতা নানাভাবে ব্যাহত হচ্ছে। আরেকটা তর্ক হচ্ছে, বাক্স্বাধীনতার পরিসর সম্পর্কে। আমার মনে হয়, বলবার স্বাধীনতা অসীম যদি না তা কারও প্রাণনাশের কারণ হয়। যেমন রোদ্দুর রায় নেটমাধ্যমে যাকে বলে ভাইরাল এবং সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে কথিত কটূক্তির অভিযোগে তিনি এই লেখাটি লেখার সময়ে পর্যন্ত জেলবন্দী। তাঁর সম্পর্কে যা সিদ্ধান্ত নেবার সেখানকার আইন নেবে, কিন্তু আমরা যদি তাঁর উদ্ভট অঙ্গভঙ্গি, প্রচলিত সমাজে অনুচ্চার্য স্ল্যাং এসব উহ্য রেখে তাঁর বক্তব্যটা শুনি, তবে দেখব—তিনি আসলে এই সময়টাকেই ডকুমেন্টেড করছেন। তিনি একদা রবীন্দ্রসংগীতে পুং জননবাচক শব্দ জুড়ে প্রবল সমালোচিত হয়েছিলেন কিন্তু দেশে দেশে রাজনীতির ক্ষমতাবান পুরুষ-মহিলারা যখন জনগণকে অসম্মান করেন, তখন কোনো আইনি ব্যবস্থা আমরা দেখি না। খোদ রবীন্দ্রনাথ নিজের শেষ জীবনে চিত্রমালা সৃজনের সময় আত্মরতিলিপ্ত নারীর ছবি এঁকেছিলেন কিন্তু রবীন্দ্রমৌলবাদীরা আমাদের তা জানান না, কেননা তাতে আলখাল্লার প্রগাঢ় গুরুমুখী আবরণ ফেঁসে যেতে পারে। নবারুণ যেমন বলছিলেন, কারখানা বন্ধ হয়ে গেলে ক্ষুধার্ত শ্রমিক যদি হাতে অস্ত্র তুলে নেয়, আমরা সেই ভায়োলেন্সের পক্ষে। আমার মনে পড়ে, মাধ্যমিকের পদার্থবিজ্ঞানের স্থিতিস্থাপকতা অধ্যায়ের একটি সূত্র 'পীড়নের ফলে বিকৃতি ঘটে'— অবস্থাদৃষ্টে দেখছি প্রাণহীন পদার্থ এবং সপ্রাণ মানুষ দুইয়ের ক্ষেত্রেই এটি খাটে। স্ল্যাং থামানোর জন্য যত বেশি চেষ্টা হবে, ততই তা ছড়িয়ে পড়বে পাবলিক ইউরিনালের দেয়ালে যৌন দুর্বলতার ওষুধের ফ্যাকাশে বিজ্ঞাপনের পাশে সচিত্র, কখনো তা আকাক্সক্ষার উল্লাস ও বরাভয় আবার কখনো রাষ্ট্রনির্মিত নানা অসঙ্গতির বিরুদ্ধে চেতাবনি। পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার ফলেই বংশপরম্পরায় নারীবিশ্বকে হীন করে দেখবার একটা চেষ্টা, উদ্যোগ এখানে আছে। কোনো কোনো মাতৃপ্রধান সমাজে স্ল্যাংয়ের ধরন ঠিক উল্টো, পুরুষের হীনতাকে বিদ্ধ করে যেমন যে পুরুষ সন্তানের জন্ম দিতে অক্ষম, সে আঁটকুড়ে কিংবা যিনি স্ত্রীর সাথে সমাজের প্রচলিত মানদণ্ড অনুযায়ী শয্যাদৃশ্য নির্মাণে অক্ষম, তিনিও সামাজিক অসম্মানের অংশ, অথচ যা কিনা একটা মেডিকেল দশা। যৌন অভিরুচির দিক নিয়েও পুরুষ বা মহিলার অভিমুখ সমাজ অনুমোদিত না হলে অর্থাৎ সমপ্রেমী বা রূপান্তরকামী বা তৃতীয় লিঙ্গের প্রতি সমাজরুচি মানবিক ও উন্নত হতে এখনো বাকি আমাদের মতো পিছিয়ে পড়া নাগরিক সমাজের। জরুরি প্রয়োজনে স্ল্যাং ব্যবহার উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে বলেই আমার ধারণা। জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাসের উক্তিটি আমাদের জানায়, 'ভাষার প্রাণকে কেবল নয়, মানুষের প্রাণকে সহজ করতে অপশব্দের উপযোগিতা অপরিহার্য। অধিকন্তু ন দোষায়!'
- ঋণ : সুস্নাত চৌধুরী, সম্পাদক বোধশব্দ