ভারতের রপ্তানি বন্ধ, বাংলাদেশ রাশিয়ার গম চায়
দেশীয় বাজারে দাম স্থিতিশীল রাখতে গত মাসে গম রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে ভারত। এর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের শস্য আমদানি খাতে। ভারতের গম রপ্তানি নিষিদ্ধের পর ঘাটতি মোকাবিলায় রাশিয়ার সঙ্গে জি-টু-জি (দুই দেশের সরকারের মধ্যে) চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। বুধবার (২২ জুন) দেশের বাণিজ্য বিভাগের সরকারি কর্মকর্তারা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
বিশ্বের বৃহত্তম গম রপ্তানিকারক রাশিয়ার সঙ্গে রপ্তানি চুক্তির বদৌলতে দেশের গমের চাহিদা মেটানো সম্ভব হতে পারে বলে উল্লেখ করেন কর্মকর্তারা।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, চুক্তিটি চূড়ান্ত করতে বৃহস্পতিবার রাশিয়ার সঙ্গে একটি ভার্চুয়াল বৈঠকে বসতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, "আমরা প্রাথমিকভাবে রাশিয়ার কাছে অন্তত ২ লাখ টন গম চাইবো।"
এদিকে, এ বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সাড়া দেয়নি খাদ্য মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশ বছরে প্রায় ৭ মিলিয়ন টন গম আমদানি করে। গত বছর এর দুই তৃতীয়াংশেরও বেশি শুধুমাত্র ভারত থেকেই আমদানি করা হয়েছে।
ভারতের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার পর বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে সরবরাহ নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু উচ্চ মূল্যের কারণে পরবর্তীতে সেগুলো বাতিল করা হয়।
মুম্বাইভিত্তিক একটি বাণিজ্যিক সংস্থা জানিয়েছে, রপ্তানি নিষিদ্ধের আগে ভারত থেকে প্রতি টন গম আমদানিতে ফ্রেইট চার্জসহ ৪০০ ডলারেরও কম মূল্য পরিশোধ করতো বাংলাদেশ। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার পর রপ্তানিকারকরা প্রতি টনের দাম ৪৬০ ডলার নির্ধারণ করায় দেশের বাজারেও দাম বেড়েছে গমের।
বর্তমানে দেশের প্রায় সব ধরনের নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বমুখী দাম নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সরকার। গত মে মাসে দেশের মূল্যস্ফীতির বিগত আট বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এছাড়া, দেশের গমের মজুদও তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন ১ লাখ ৬৬ হাজার টনে গিয়ে দাঁড়িয়েছে।
আন্তর্জাতিক একটি বাণিজ্যিক সংস্থার নয়াদিল্লি-ভিত্তিক ডিলার জানায়- "বাংলাদেশে অনেক দেশই গম সরবরাহ করতে পার, এক্ষেত্রে মূল সমস্যা দাম। রাশিয়া থেকে কেনার সুবিধা হলো- বিশ্ববাজার মূল্যের তুলনায় তারা ছাড়কৃত মূল্যের সুবিধা দিতে পারবে।"
তবে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়া থেকে কেনা গমের মূল্য পরিশোধ করা বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জিং হবে।
বাংলাদেশের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, "বৈঠকে মূল্য পরিশোধসহ সংশ্লিষ্ট সকল বিষয়ে আলোচনা করা হবে। এখন দেখা যাক তাতে কী হয়।"
- সূত্র: রয়টার্স