পাপনের সঙ্গে কথা বলে পদত্যাগের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন আকরাম খান
'ক্রিকেট অপারেশন্স ছেড়ে দিচ্ছে আকরাম'- স্ত্রীর এমন ফেসবুক পোস্টের পর দিন নিজের পদত্যাগের বিষয় কথা বললেন আকরাম খান। বিসিবির এই পরিচালক ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করতে চান। পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেও বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের সঙ্গে আলোচনার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানান আকরাম।
গত অক্টোবরে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের আড়াই মাস হয়ে গেলেও কার্যনির্বাহী কমিটি চূড়ান্ত করা হয়নি। আগের হিসেবেই দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন পরিচালকরা। এর মাঝেই সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন আকরাম। আগামী দুই-এক দিনের মধ্যেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন তিনি।
মঙ্গলবার বনানীতে নিজ বাসায় সাংবাদিকদের আকরাম বলেন, 'আমি আজ কথা বলতে চাইনি। আপনারা যেহেতু চলে এসেছেন, কিছু তো বলতেই হবে। আমরা পারিবারিকভাবে একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমার ব্যাপারে। যেহেতু আমি আট বছর ক্রিকেট অপারেশন্সে ছিলাম, তো এটা নিয়ে আমাদের মাননীয় বোর্ড প্রেসিডেন্ট আমার যে অভিভাবক, গত আট বছরে উনার থেকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য পেয়েছি কাজের জন্য। যতগুলো খারাপ ভালো সময় গেছে, সব সময় উনি আমার সাথেই ছিলেন। তো উনার সঙ্গে আলাপ করে হয়তো কালকের মধ্যে আমার সিদ্ধান্তটা জানিয়ে দিব।'
নাজমুল হাসান পাপনের সঙ্গে আলাপ না করে সংবাদমাদ্যমকে কিছুই বলতে চান না আকরাম। বিসিবি সভাপতি তাকে যে পরামর্শ দেবেন, সেটাই মানবেন বলে জানান তিনি। আকরাম বলেন, 'উনাকে না জানিয়ে আমি আপনাদের কিছু বলতে পারব না। তিনটার দিকে আজ কল করেছিলাম, রিপ্লাই দেননি। হয়তো যেকোনো সময় কল ব্যাক করবেন। কল করলে উনার সঙ্গে আলাপ করে নেব।'
'হ্যাঁ, পারিবারিক কারণেই। যেহেতু আমি এখানে অনেক বছর ছিলাম। এখানে মানসিক ও শারীরিক শক্তির দরকার হয়। সব মিলিয়েই এই বিরতির সিদ্ধান্ত। উনার সঙ্গে আলাপ করে সিদ্ধান্ত, এখন আমি এ নিয়ে কিছুই বলতে চাই না। উনার পরামর্শ অনুসরণ করব আমি।' যোগ করেন আকরাম খান।
পারিবারিক কারণে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানালেও নেপথ্যে আছে ভিন্ন কারণ। বিসিবি সূত্রে জানা গেছে, ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগ থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। এটা বুঝতে পেরেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। গত কিছু দিনে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনাও সেটাই প্রমাণ করে।
গত কয়েক দিনে আকরামকে না জানিয়েই অনেক সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিবি। গত মাসে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষে দলের সঙ্গে দেশে ফেরেননি তিনি। তার দেশে পৌঁছানোর আগেই পাকিস্তান সিরিজ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে নেয় বিসিবি। অথচ এসব সিদ্ধান্তে ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে তার মতামত গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার কথা।
বেশ কয়েকটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো ভূমিকাই ছিলো না আকরামের। মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনকে সহকারী কোচ করার ভাবনার বিষয়েও কিছু জানতেন না তিনি। এ ছাড়া পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দল গঠন, কোচিং স্টাফের দায়িত্ব সম্পর্কে অবগত ছিলেন না তিনি। যদিও ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে এসব সিদ্ধান্ত তারই নেওয়ার কথা ছিল।
২০১৪ সালে নাজমুল হাসান পাপনের নেতৃত্বে নির্বাচিত কমিটিতে প্রথমবার ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের দায়িত্ব নেন আকরাম । কিন্তু ২০১৫ সালের অক্টোবরে তাকে সরিয়ে নাঈমুর রহমান দুর্জয়কে চেয়ারম্যান করা হয়। যদিও চেয়ারটি ফিরে পেতে সময় লাগেনি আকরামের, ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে সাবেক এই অধিনায়ককে আবারও চেয়ারম্যান করা হয়। এরপর টানা ছয় বছর ধরে ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগ সামলে আসছিলেন তিনি।