স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচন একই দিনে করার প্রস্তাব করবে সংস্কার কমিশন
খরচ ও সময় বাঁচাতে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচন একই দিনে করার প্রস্তাব করবে বলে জানিয়েছেন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. তোফায়েল আহমেদ।
আজ রোববার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রামের একটি হোটেলে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন, স্থানীয় সরকার বিভাগ, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও ইউএনডিপি যৌথভাবে এ সভার আয়োজন করে।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, 'নির্বাচন কেবল সময়সাপেক্ষ বিষয় নয়, এর জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী নিযুক্ত করতে হয়। আর এতে অনেক খরচ হয়।'
আওয়ামী লীগের শাসনামলের শেষ চার বছরে বিভিন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ২৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'এসব নির্বাচনে শুধু উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থই ব্যয় হয়নি, বরং ২০০ দিনেরও বেশি সময় লেগেছে।'
তিনি ব্যাখ্যা করেন, যদি একই দিনে ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, জেলা পরিষদসহ সব নির্বাচন করা যায়, তাহলে এর জন্য খরচ হবে মাত্র ৬০০ কোটি টাকা এবং সময় লাগবে মাত্র ৪০ দিন।
বর্তমানে চেয়ারম্যান ও মেয়র পদে যেভাবে সরাসরি নির্বাচন হচ্ছে, তা পরিবর্তনের পরিকল্পনা রয়েছে জানিয়ে তোফায়েল আহমেদ বলেন, আগে ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ইউপি সদস্যরা নির্বাচিত হবেন। তারপর তারা নিজেরা ভোট দিয়ে মেয়র বা চেয়ারম্যান নির্বাচিত করবেন।
তিনি উল্লেখ করেন, কমিশন একটি জেলাভিত্তিক স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার পরিকল্পনা করছে, যেখানে জেলাগুলো কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে। আর উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার।
সভায় বক্তারা স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণের ওপরও জোর দেন। তারা বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য বা ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে এসএসসি বা সমমান, মেয়র ও চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীদের এইচএসসি পাস হতে হবে। যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সংসদ সদস্যদের হস্তক্ষেপ ঠেকাতে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার সংস্কারের সুপারিশও করেন তারা।
বক্তারা স্থানীয় সরকার নির্বাচন নির্দলীয় করার প্রস্তাব দেন। তারা বলেন, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোয় মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে। এজন্য আইন প্রণয়ন করতে বলেন তারা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ড. জিয়াউদ্দিন। উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসফিকুজ্জামান আক্তার, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, অধ্যাপক ফেরদৌস আফরিনা ওসমান, আব্দুর রহমান, মাহফুজ কবীর, অধ্যাপক সিকান্দার খান প্রমুখ।