পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে রাবির প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে শিক্ষার্থীদের অবস্থান
পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। এতে প্রায় পৌনে চার ঘণ্টা ধরে প্রশাসনিক ভবনে কেউ ঢুকতে বা বের হতে পারছে না। ফলে কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম।
পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আজ বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এরপর সকাল ১০টায় ভবনের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা। প্রশাসনিক ভবনের ভেতরে আটকে পড়েন উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) ফরিদ উদ্দীন খানসহ অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।
উপ-উপাচার্য ফরিদ উদ্দীন খান বলেন, "প্রশাসনিক ভবনের ভেতরে আমরা সবাই আটকা পড়েছি। আমরা ভেতরে কার্যক্রম করছি, কিন্তু বাইরে থেকে ভেতরে কিংবা ভেতর থেকে বাইরে কার্যক্রম পরিচালনা করা যাচ্ছে না।"
তিনি বলেন, "আমাদের এক সহকর্মীর মা অসুস্থ, তাকে বের হতে দেওয়া হয়নি। আরেকজন ডায়াবেটিস রোগী সিঙ্গাড়া আনতে যেতে চাইলেও অনুমতি দেওয়া হয়নি। এটি একটি অগণতান্ত্রিক আচরণ।"
উপ-উপাচার্য আরও বলেন, "শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে আমরা পোষ্য কোটা ৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ করেছি। শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের জন্য এই কোটা আর নেই, শুধু সহায়ক কর্মচারীদের জন্য ১ শতাংশ রাখা হয়েছে। কিন্তু তারপরও এ ধরনের আন্দোলন অযৌক্তিক ও অগণতান্ত্রিক। আমরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি।"
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, "সম্পূর্ণ কোটা বাতিল না করা হলে আগামী রোববার থেকে পুরো ক্যাম্পাস অচল করে দেওয়া হবে।"
উল্লেখ্য, গতকাল (১ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পোষ্য কোটা ৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশে আনা হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে রাতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রশাসনিক ভবনে তালা দেওয়ার ঘোষণা দেয়।
লিখিত বক্তব্যে সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, "জুলাই বিপ্লবের মূল লক্ষ্য ছিল কোটার যৌক্তিক সংস্কার। কিন্তু এখনো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অযৌক্তিক ও অবৈধ কোটা বহাল রয়েছে, যা আমরা মেনে নিতে পারি না।"
প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা আগামী রোববার থেকে পুরো ক্যাম্পাস অচল করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।