যেসব ‘সম্ভাব্য’ কারণে আজারবাইজানের বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে: আজারবাইজান এয়ারলাইনস
গত বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) কাজাখস্তানের আক্তাউ শহরের কাছে আজারবাইজানের বিমান দুর্ঘটনায় ৩৮ জন যাত্রী নিহত হয়েছেন। আজারবাইজান এয়ারলাইনস (এজেএএল) জানিয়েছে, "প্রযুক্তিগত বাহ্যিক হস্তক্ষেপ" বিমান দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হতে পারে। তদন্ত চলমান থাকায় রাশিয়ার বিভিন্ন শহরে ফ্লাইট স্থগিত করা হয়েছে।
এমব্রেয়ার ১৯০ বিমানটি আজারবাইজানের বাকু থেকে রাশিয়ার গ্রোজনি যাচ্ছিল। তীব্র কুয়াশার কারণে আক্তাউতে জরুরি অবতরণের চেষ্টা করতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ৬৭ জন যাত্রীর মধ্যে ৩৮ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে আজারবাইজান, রাশিয়া, কাজাখস্তান ও কিরগিজস্তানের নাগরিক ছিলেন।
এজেএএল তাদের আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলেছে,"বাইরের শারীরিক ও প্রযুক্তিগত হস্তক্ষেপ" প্রাথমিকভাবে দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। তবে আরও বিস্তারিত জানানো হয়নি।
স্থানীয় কর্মকর্তারা আগে বলেছিলেন, পাখির আঘাতের কারণে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এছাড়া কিছু প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, দুর্ঘটনার সময় একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয় এবং অনেক যাত্রী অচেতন হয়ে পড়েন।
আজারবাইজান ও কাজাখস্তান বিমান কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে এই ঘটনা তদন্ত করছে। নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে আজারবাইজান এয়ারলাইনস মস্কো এবং সেন্ট পিটার্সবার্গ সহ কয়েকটি রুশ শহরে ফ্লাইট চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ করেছে।
এদিকে গ্রোজনিগামী বিমানটি কেন দিক পরিবর্তন করে কাজাখস্তানে গিয়েছিল, সেটির ব্যাখ্যা দিয়েছে রাশিয়ার বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) রাশিয়ার রোসাভিয়াটসিয়া সংস্থার প্রধান দিমিত্রি ইয়াদ্রভ জানান, বিমানটি গ্রোজনিতে অবতরণ করতে পারেনি কারণ ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলার জন্য সেখানকার বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ ছিল। খারাপ আবহাওয়াও সমস্যা তৈরি করেছিল বলে জানান তিনি।
এই দুর্ঘটনার তদন্তে কাজাখস্তান এবং আজারবাইজানের সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতার ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া।
দুর্ঘটনায় নিহতদের সম্মানে ২৬ ডিসেম্বর জাতীয়ভাবে শোক দিবস ঘোষণা করেছে আজারবাইজান। প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ সরকারি সফর থেকে বাকু ফিরে জরুরি বৈঠক ডাকেন। দেশব্যাপী এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় এবং নিহতদের সম্মান জানাতে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া ইভেন্ট স্থগিত করা হয়।
এমব্রেয়ার ১৯০ ব্রাজিলে তৈরি একটি বহুল ব্যবহৃত আঞ্চলিক বিমান। তদন্তকারীদের সাহায্য করতে এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে এমব্রেয়ার।
দুর্ঘটনার দিন একটি ইউক্রেনীয় ড্রোন ভ্লাদিকাভকাজ শহরের একটি শপিং মলে আঘাত হানে। তাতে এক নারী নিহত হন। চেচনিয়া কর্তৃপক্ষও গ্রোজনিতে ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলার খবর দেয়। তবে সব ড্রোন গুলি করে ধ্বংস করা হয়।