যারা স্যাংশন দেবে আমরাও তাদের ওপর স্যাংশন দিতে পারি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
যারা স্যাংশন দেবে তাদের ওপরে সরকারও স্যাংশন দিতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।
যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফর শেষে বুধবার (৪ অক্টোবর) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, "যারা আমাদের ওপর স্যাংশন দেবে আমরাও তাদের ওপর স্যাংশন দিতে পারি। পারি না? নিশ্চয়ই পারি।"
স্যাংশনের বিষয়ে কোনো প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে কিনা এবং কী বিষয়ে তাদের ওপর স্যাংশন দেওয়া হতে পারে– সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, "প্রয়োজনে (প্রস্তুতি) নেব, এত তাড়াহুড়া কীসের? বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা স্যাংশন দিতে পারি। এগুলো সময় মতো জানতে পারবেন।"
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, "বাংলাদেশের যেহেতু মান-ইজ্জত বেড়েছে, উন্নয়ন হচ্ছে, তাই সবাই আমাদের কাছে তাদের পণ্য বিক্রি করতে চায়। আমাদের সঙ্গে এসে দেখা করে; আগে এত মানুষ দেখা করত না।"
চাওয়া-পাওয়া, চাপ সবাই বেড়েছে, এতে কি সরকার স্বস্তিতে আছে?– সংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, "বিদেশিরা মূলত পণ্য বিক্রি করার জন্য আসে। আর এজন্য তারা চাপও সৃষ্টি করে, যেন তাদের কাছ থেকে পণ্য কেনা হয়। ফ্রান্স তাদের পণ্য বিক্রি করতে চায়, ইউরোপ বিক্রি করতে চায়, ব্রিটিশরা বিক্রি করতে চায়।"
এদিকে, ভিসা নীতি নিয়ে সরকার কোনো চাপ অনুভব করছে না বলেও উল্লেখ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "ভিসানীতি আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়।"
"যারা যুক্তরাষ্ট্রের ভিসার জন্য আবেদন করে, তাদের জন্য হয়তো এটি দুঃসংবাদ, যদি দুষ্টলোক হয়। আমেরিকা তো সবাইকে ভিসা দেয় না। কয়েক হাজার লোক বছরে ভিসার জন্য আবেদন করে, এরমধ্যে কত লোককে ভিসা দেওয়া হয়?," যোগ করেন মোমেন।
এছাড়া, নির্বাচন প্রসঙ্গেও সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, "যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।"
হোয়াইট হাউসের অন্য একজনের সঙ্গে এ প্রসঙ্গে আলোচনা হয়ে থাকতে পারে বলে জানান তিনি।
জাতীয় নির্বাচনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পর্যবেক্ষক দল পাঠানো প্রসঙ্গে মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, "অন্যের দিকে মুখাপেক্ষী হয়ে থাকবেন না আল্লাহর ওয়াস্তে। এই বদ অভ্যাসটা বাদ দেন। আপনার (প্রশ্নকর্তা সাংবাদিককে উদ্দেশ্য করে) নিজের প্রতি বিশ্বাস নাই? আপনি দেখেন না ইলেকশন (২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন) কীভাবে হয়েছে? আপনাকে অনেকে বললো, আপনার কান চিলে নিয়ে গেছে, আর সেটা চিলে নিয়ে গেছে? আপনি কানটা ধরে দেখেন চিলে নিয়েছে কিনা।"
"আপনার মন-মগজের মধ্যে খালি বিদেশি-বিদেশি কেন? নিজের ওপর আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে পারেন না? ওগুলো বাদ দেন। নিজের ওপর আত্মবিশ্বাস তৈরি করেন। শেখ হাসিনার নিজের ওপর আত্মবিশ্বাস আছে। এই আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান হওয়ায়, যখন ওয়ার্ল্ড ব্যাংক টাকা দেয় নাই, তখন তাদেরকে তিনি পাত্তা দেন নাই। আইএমএফ, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক যখন অ্যাগ্রিকালচার সেক্টরে ভর্তুকি মানা করলো, তখন তাদের পাত্তা দেন নাই প্রধানমন্ত্রী। কারণ তার সাহস আছে। তার নিজের প্রতি, দেশের প্রতি আত্মবিশ্বাস আছে। আপনারাও নিজের প্রতি, দেশের প্রতি আত্মবিশ্বাস বাড়ান।"
"কেউ কিছু বললেই লাফিয়ে উঠবেন না; নিজে পরীক্ষা করে দেখেন কী অবস্থা। আপনারা সার্ভে করেন না কেনো– মানুষ কাকে ভোট দেবে? মানুষ যদি ভোট দেয় তাহলে সেটাই হবে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন," যোগ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।