বাংলাদেশ–ভারতের যৌথ আয়োজন ‘সংযোগ’-এর ৮ম আসর অনুষ্ঠিত
বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ সাংস্কৃতিক আয়োজন 'সংযোগ'-এর অষ্টম আসর শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ ও কলেজের প্রাক্তনী সংসদ কর্তৃক আয়োজিত এ আয়োজনের ব্যবস্থাপনা ও সার্বিক সহযোগিতায় ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সংসদ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সংসদের সভাপতি দেবজ্যোতি বিশ্বাস বলেন, 'প্রতিবছরের মতো এ বছরও আমরা দুই বাংলার যৌথ এ আয়োজনে অংশ নিয়েছি। আমরা বিশ্বাস করি, সীমানার দুই পাড়ের বাংলা সংস্কৃতির ইতিবাচক বিনিময় ও অসাম্প্রদায়িকতার মাধ্যমে সকল প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করা সম্ভব। মূলত এ লক্ষ্য থেকেই প্রতিবছর আমরা এ আয়োজনটি করে থাকি।'
সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ প্রাক্তনী সংসদের পক্ষে দীপন দাস আগামী বছরগুলোতেও এ আয়োজনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, 'একুশে ফেব্রুয়ারি সারাবিশ্বের নির্যাতিত ও নিপীড়িতদের জন্য নিজেদের মাতৃভাষায় কথা বলতে চাওয়ার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য একটি মাইলফলক।'
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম, কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অভ বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক এইচ এম জহিরুল হক, সংসদ সদস্য, মানবাধিকারকর্মী ও শহিদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের নাতনি আরোমা দত্ত, ভারতীয় হাইকমিশনের প্রতিনিধি জয়ন্ত বক্সী প্রমুখ।
অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান বলেন, 'আজ যারা এখানে সীমানা পেরিয়ে এসেছেন, তার অন্যতম কারণ হচ্ছে বাংলার সৌন্দর্য, কৃষ্টি, আমাদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন এবং আমাদের অভিন্ন সংস্কৃতির শক্তি।'
অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, 'এই শহীদ মিনার হচ্ছে সেই স্থান যেখানে এসে বাঙালিরা সংকটে দাঁড়ায়, আবেগে দাঁড়ায়, শপথ নেয় এবং ঘুরে দাঁড়ায়। আজ বিশ্বায়নের কারণে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভাষাগুলো সংকটের মধ্যে আছে।' শহীদ মিনারে দাঁড়িয়ে তিনি সেসব ভাষাগুলোকে রক্ষা করার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
আরোমা দত্ত তার বক্তব্যে ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট এবং সেই সময়ে ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের রোমহষর্ক সাহসিকতার গল্প তুলে ধরেন।
আলোচনা পর্বশেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সংসদের সদস্যদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা 'রক্ত শিমুল তপ্ত পলাশ' এবং সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনা 'ঘরে ফেরার গান' উপভোগ করেন দর্শকেরা।