নারায়ণগঞ্জের স্কুলে শাকিব খানের সঙ্গে পড়েছিলেন মেসি, নোয়াখালীতে রোনালদো!
বিশ্বসেরা ফুটবলার লিওনেল মেসির জন্ম ও বেড়ে ওঠা দক্ষিণ আমেরিকার দেশ আর্জেন্টিনার রোজারিওতে। এরপর কৈশর থেকে শুরু করে মেসির বাকি জীবন কেটেছে স্পেনের বার্সেলোনা আর সারাবিশ্বে ফুটবল খেলে। মাত্র দশ বছর বয়সে হরমোনজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়া মেসি প্রথাগত পড়াশোনাতে খুব একটা এগোতে পারেননি। এরপর ১৪ বছর বয়সে তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেয় ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনার একাডেমি লা মাসিয়া। এরপরের ইতিহাস সবার জানা।
তবে জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন গুগল বলছে, বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছিলেন মেসি। আর তারই প্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো প্রাথমিকের পাঠ চুকিয়েছেন নোয়াখালীর একটি স্কুল থেকে।
গুগলের সার্চবারে গিয়ে ‘where did lionel messi study’, ‘lionel messi study’, ‘lionel messi school’, ‘lionel messi education’ ইত্যাদি লিখে সার্চ দিলে সবার প্রথমেই গুগল যে তথ্যটি দেখাচ্ছে তা হলো, ‘মেসি বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বাংলাদেশি সুপারস্টার শাকিব খানের সঙ্গে পড়াশোনা করেছেন’।
পর্তুগিজ তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর নামেও একই প্রশ্ন লিখে সার্চ দিলে আসে, ‘তিনি বাংলাদেশের নোয়াখালীর একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন’।
আমরা সবাই জানি, এই দুটি তথ্যের কোনোটিই সত্যি নয়। তবে কেনো গুগল সার্চ ইঞ্জিনে এই প্রশ্ন লিখে খোঁজ করলে সবার ওপরে এই তথ্য আসে?
এই বিষয়টি বুঝতে হলে আমাদের সবার আগে গুগল সার্চ ইঞ্জিনের কাজ করার কৌশল সম্পর্কে জানতে হবে।
অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনের মতো গুগলও সার্চ দেওয়া তথ্য খুঁজে বের করতে ‘spiders’ বা ‘crawlers’ নামে স্বয়ংক্রিয় প্রোগ্রাম ব্যবহার করে। এই প্রোগ্রামগুলো ইন্টারনেটে ছড়িয়ে থাকা অজস্র ওয়েবসাইট ও ওয়েবপেইজে ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে গুগলের ‘ইনডেক্সে’ জমা করে রাখে। এরপর কোন ব্যক্তি যখন গুগলে কোন কিছু জানতে সার্চ দেন তখন গুগল পুরো ইন্টারনেট না ঘেঁটে দ্রুততম সময়ে ওই ইনডেক্স থেকে একটি ফলাফল দেখিয়ে দেয়।
কিন্তু এই প্রক্রিয়াটি মোটেও নির্ভুল নয়। যার জ্বলজ্বলে উদাহরণ মেসি ও রোনালদো সম্পর্কে এমন উদ্ভট তথ্য। গুগল এই তথ্যটি সবার ওপরে দেখিয়েছে কারণ, প্রশ্নোত্তর বিষয়ক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট Quora তে কেউ একজন মজার ছলে মেসি-রোনালদোর পড়াশোনা বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে এই তথ্য লিখে রেখেছে।
আবার এমন উদ্ভট তথ্য গুগলের সার্চ লিস্টের ফলাফলে দেখানোর অন্যতম কারণ হচ্ছে, প্রোগ্রামগুলো এমনভাবে ডিজাইন করা যে এগুলি কেবল তথ্যের সন্নিবেশই ঘটাতে পারে, কোনটা সত্য আর কোনটা মিথ্যা সেটি যাচাই করতে পারে না। গুগল এই তথ্যটি দেখিয়েছে কারণ ইন্টারনেটে এই তথ্যটির অস্তিত্ব আছে। তার মানে এই নয় যে এই তথ্যটিই সঠিক। এর মানে হতে হতে পারে, কোনো কোনো ইন্টারনেট ব্যবহারকারী এমন উদ্ভট তথ্য নিয়ে মজা করতে করতে তা বহুদূর নিয়ে গেছেন।