বৃহস্পতি গ্রহের আবহাওয়ার গন্ধ নিয়ে বাজারে আসছে নতুন সুগন্ধি 'জুপিটার'
পৃথিবীর বুকে থাকা সমস্ত উপকরণ- ফুল, ফল, কফি, চা, সিগারেট, তামাক, কস্তূরীমৃগ এমনকি ঘামের গন্ধের আদলেও সুগন্ধি বানিয়েছে মানুষ। এবার বোধহয় সেই একঘেয়েমি কাটাতেই পৃথিবীর বাইরে মহাকাশে বিচরণ শুরু হয়েছে সুগন্ধি প্রস্তুতকারকদের। হ্যাঁ, সৌরজগতের বৃহস্পতি গ্রহের আবহাওয়ার গন্ধের আদলেই বানানো হয়েছে সুগন্ধি 'জুপিটার'। আর এই 'জুপিটার' প্রস্তুত করেছে টলি নামের এক সংস্থা।
তবে এর গন্ধ কতটা সুখকর হবে তা নিয়ে বিতর্ক আছে। পচা ডিমের সঙ্গে ব্লিচিং পাউডার মেশালে যেমন গন্ধ হবে, এ গন্ধ অনেকটা তার মতন। রসায়নের ভাষায় বলতে গেলে হাইড্রোজেন সালফাইড, অ্যামোনিয়া, হাইড্রোজেন সায়ানাইডের মিশ্রণের গন্ধ এই রকম।
সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহ বৃহস্পতি। সেখানকার পরিবেশে ঠিক এই উপকরণগুলোই পাওয়া যায়, তবে ভিন্ন অনুপাতে। স্বভাবতই পদার্থগত ভাবে এক হওয়ায় বৃহস্পতির গন্ধও কিন্তু এ রকমই। বৃহস্পতির পরিবেশে মূলত দুটি গ্যাস পাওয়া যায়, হিলিয়াম এবং হাইড্রোজেন। আর আছে তিনটি স্তর, অ্যামোনিয়া, সালফার এবং সায়ানাইড। তিনটি স্তরের এক ধরনের গন্ধ পারফিউমে তুলে ধরা খুব সহজ ছিল না বলে জানান টলির সুগন্ধি শিল্পী ও বিজ্ঞানপ্রেমীঅ্যাপোসটোলোস চারিসিস।
ডেইলি মেইলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, তিনি নিজে গোলাপ আর জুঁইয়ের গন্ধ ভালোবাসেন। তবে পারফিউমে এগুলো বহুল ব্যবহৃত। তাই তিনি খুব আটপৌরে কিছু খুঁজছিলেন। পারফিউমের কৃত্রিম গন্ধের বদলে বাস্তব জগতের প্রাত্যহিকতার সঙ্গে যোগ রয়েছে, এমন সুগন্ধি তৈরির কথাই ভাবছিলেন তিনি।
তবে এই সুগন্ধি যে সবার জন্য নয়, সে ব্যাপারটা আগেই খোলসা করেছেন চারিসিস। বিপণন নিয়ে আদৌ ভাবছেন না তিনি। বলছেন, সুগন্ধির বোতলের ঢাকনা খুললে প্রথম ১৫ মিনিট মৃদু অ্যামোনিয়ার গন্ধ থাকবে। ১৫ মিনিট পর নাকে আসবে সালফারের গন্ধ। সব শেষে পাওয়া যাবে কাঠবাদাম, জাফরানের গন্ধ। একবার গায়ে মাখলে ছয় ঘণ্টা মতো তার রেশ থাকবে।
এই পারফিউম বানাতে সময় লেগেছে প্রায় বছর তিনেক। মার্কিন মহাকাশ সংস্থার বৃহস্পতি অভিযান থেকে তথ্য সংগ্রহ করে তবেই বানানো হয়েছে এই সুগন্ধি।
আগামী ২৬ অক্টোবর আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন হবে জুপিটারের। বাজারে আসার আগেই প্রি-অর্দার করা যাবে। এর ৫০ মিলিলিটার এর বোতলের দাম পড়বে ৪৬ পাউন্ড বা ৫৯ ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় পাঁচ হাজার টাকা।
সূত্র: ডেইলি মেইল